দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন সহবাস৷ পরে বিয়ে করতে অস্বীকার প্রেমিকের৷ আর তার জেরে অপমানে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী কলেজ ছাত্রী৷ টানা ১৯ দিন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালানোর পর মৃত্যু হয় খানাকুলের উদয়পুরের কলেজ ছাত্রী প্রমিতা সিংয়ের (১৯)।
[‘আমাকে কেউ কাকা বলে ডাকবেন না’! কেন এমন মন্তব্য রবীন্দ্রনাথ ঘোষের?]
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরও পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুর পরই অভিযুক্ত অভিনন্দন বসু ও তাঁর পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়৷
[পরিবার প্রেমের স্বীকৃতি দেয়নি, একই ওড়নার ফাঁসে আত্মঘাতী যুগল]
জানা গিয়েছে, মানসিক অবসাদের দরুন গত ৫ সেপ্টেম্বর কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন প্রমিতা। কীটনাশক খাওয়ার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় প্রায় তিন সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর সেখানেই শনিবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। প্রমিতা ও অভিনন্দন দু’জনেই খানাকুলের একটি ডিএলএড কলেজে একই সঙ্গে পড়ত। সেখান থেকেই দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। নোটস দেওয়া নেওয়ার জন্য অভিনন্দন প্রমিতার বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। বন্ধুত্ব ক্রমশ প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়। সেই সম্পর্কের জেরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভিনন্দন ওই ছাত্রীর সঙ্গে সহবাস করে বলে অভিযোগ৷ পরে, অন্তঃসত্ত্বা হয়ে ওই তরুণী৷
[পুজোয় হাসবে ওরাও, হাতখরচ বাঁচিয়ে পথশিশুদের জামা দিলেন তমলুকের যুবকরা]
হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন প্রমিতা তাঁর মাকে জানান, সে অন্তঃসত্ত্বা। তাঁর প্রেমিককে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা জানিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়৷ কিন্তু, অভিনন্দন বিয়ে তো দূরের কথা উল্টে রাস্তার মধ্যেই প্রমিতাকে মারধর করে৷ তাঁকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া হয়৷ এরপরই সামাজিক অসম্মানের ভয়ে লজ্জায় ও অপমানে ওই ছাত্রী বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন৷ টানা ১৯ দিনের লড়াই শেষে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর৷ ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষিপ্ত এলাকার বাসিন্দারা অভিনন্দনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন৷