Advertisement
Advertisement
শিশুমৃত্যু

স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, মেজাজ হারিয়ে চার মাসের শিশুকে তুলে আছাড় ব্যক্তির

মর্মান্তিক।

Howrah: Man allegedly thrashes child over arguement with wife
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:June 18, 2019 7:47 pm
  • Updated:June 18, 2019 7:47 pm

সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: মা-বাবার কাছেই সন্তান সবচেয়ে নিরাপদ। এমনটাই মনে করে সমাজ। কিন্তু রক্ষকই যখন ভক্ষক হয়ে ওঠে? রাগে মানুষের কী করুণ পরিণতি হতে পারে, তারই প্রমাণ মিলল। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে নিজের চার মাসের শিশু সন্তানকে তুলে আছাড় মেরে খুন করার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পাঁচলা থানার শুভরআড়ায়।

বছর পঁয়ত্রিশের বাপন দাসের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী আনন্দি দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে শুভরআড়া গ্রামে দীপু দাস নামে এক চার মাসের শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। শিশুটির মুখ, ঠোঁট এবং গালে কাটা দাগ ও রক্তের চিহ্ন পাওয়া যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে জানা যায়, পেশায় ভ্যান চালক বাপন প্রায় দিনই মদ্যপান করে বাড়ি ফেরে। ফলে স্ত্রী আনন্দির সঙ্গে তার অশান্তি লেগেই থাকে। সোমবার রাতেও মদ্যপান করে বাড়ি ফেরায় আনন্দি ও বাপনের মধ্যে অশান্তি তীব্র আকার ধারণ করে। এমনকী মঙ্গলবার সকালেও আকণ্ঠ মদ খেয়ে বাড়ি আসে। তারপরই স্ত্রীর সঙ্গে বাপনের বাদানুবাদ চলতে থাকে। অভিযোগ, সেই সময় আনন্দিকে মারধরও করে বাপন। ঝগড়ার মধ্যে বাপন হঠাৎই দীপুকে তুলে মেঝেয় আছাড় মারে। শিশুটি ছটফট করতে করতে নেতিয়ে পড়ে। আনন্দি দাস সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দুধের শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘দল তো অনেক আছে, একটা করলেই হল’, তৃণমূল বিধায়কের ভাইপোর পোস্টে বিতর্ক]

গোটা ঘটনার কথা ফোন করে পাঁচলা থানায় জানান গ্রামবাসীরা। থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তন্ময় ভট্টাচার্য তৎক্ষণাৎ এএসআই আবির ধরকে ঘটনাস্থলে পাঠান। আবিরবাবু ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাপন দাসকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। শিশুটি কীভাবে মারা গিয়েছে তা অবশ্য জানাতে পারেনি আনন্দি। তবে তার স্বামীই তার শিশুটিকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ তাঁর।

Advertisement

child

বিশিষ্ট সমাজকর্মী অধ্যাপক মৌসুমী মজুমদার বলেন, সন্তানকে এভাবে আছাড় মেরে হত্যা করার ঘটনা খুবই বিরল। সাধারণত কোনও ব্যক্তির মধ্যে কোনও কারণে সন্তানের প্রতি তীব্র রাগ বা বিদ্বেষ জন্মালে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো সম্ভব। মদ্যপ অবস্থায় ব্যক্তির অবচেতন মন কাজ করে। স্ত্রী যদি স্বামীর থেকে সন্তানের যত্ন বেশি নেন, তখন অনেক ক্ষেত্রে স্বামীর মনে তার সন্তানের প্রতি রাগ বা বিদ্বেষ জন্মায়। এছাড়াও স্ত্রীর বিরুদ্ধে চারিত্রিক অভিযোগের কারণেও এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। সংসারে অভাব অনটন থাকলে কিছু ক্ষেত্রে পুরুষ মানুষদের এই ধরনের মানসিক বিকৃতির শিকার হতে দেখা যায়। এছাড়াও যে কোনও কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটলেও অনেক সময় এমন ঘটনা ঘটে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মদ্যপকে মদ্যপানে বাধা দেওয়ার জন্যই অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষের উপরে ব্যক্তি তার আক্রোশ উজাড় করে দেয়। স্ত্রী মদ্যপানে বাধা দেওয়ায় তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার করা সত্ত্বেও যখন স্ত্রী ক্ষান্ত হন না তখন ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ অনেক সময় বাড়ির শিশু বা পোষ্যদের উপর বের হয়। তবে একজন পুরুষ মানুষের মানসিক অবস্থার চরম অবনতি না ঘটলে সাধারণত এই ধরনের ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি। এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার জন্য সামাজিক পরিস্থিতিও অনেকটাই দায়ী বলে মত তাঁর।

[আরও পড়ুন: পুলিশকর্তার দেহরক্ষীর বন্দুক থেকে গুলি ছিটকে মৃত সাফাই কর্মী, মর্মান্তিক ঘটনা এগরায়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ