দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো মানে শুধু উৎসব নয়। এখানে থাকে সম্প্রীতির ছোঁয়াও। চন্দননগরের ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজোর তালিকায় রয়েছে কাঁটাপুকুর সর্বজনীন। এই পুজোয় হিন্দু মুসলিম দুই সম্প্রদায়ই সমানভাবে অংশগ্রহণ করে। বিদ্বেষের বিষ যখন পারিপার্শ্বিক আবহাওয়াকে কলুষিত করে চলেছে, চন্দননগররের কাঁটাপুকুর ক্লাব তখন সম্প্রীতির ধারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তবে আজ থেকে নয়, ৫০ বছর আগেই একসঙ্গে পুজোর সূচনা করেছিলেন এক হিন্দু এবং এক মুসলিম যুবক। তখন থেকে কাঁটাপুকুর সর্বজনীনের জগদ্ধাত্রী পুজোয় সবার আগে স্থান পায় মানব ধর্ম।
পুজো কমিটির তরফে সৌম্যজিৎ দাস জানান, এখানে জগদ্ধাত্রী পুজো মানে হিন্দু মুসলমান দুই সম্প্রদায়েরই উৎসব। এখানে কাঠামো পুজো থেকে শুরু করে বিসর্জনের দিন পর্যন্ত সবকিছুতেই দুই সম্প্রদায়ের মানুষ সমানভাবে অংশগ্রহণ করে। কাঠামো পুজোর সমস্ত দায়িত্ব পালন করেন রহিম বক্স। রহিম ভাই প্রত্যেক বছর পুজোর যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করে থাকেন। তাঁর ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়েই রহিম বক্সকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মায়ের চক্ষুদান থেকে শুরু করে অলঙ্কার পরানোর কাজেও রয়েছেন এলাকার মুসলিমরা। কাঁটাপুকুরে জগদ্ধাত্রী পুজোর মণ্ডপের পাশেই রয়েছে মসজিদ। পুজোর ক’টা দিন মণ্ডপের পাশাপাশি আলোর মালায় ঝলমল করে মসজিদও।
[থিমের লড়াইয়ে জমজমাট জগদ্ধাত্রী পুজো, অষ্টমীতে জনজোয়ার চন্দননগরে]
সম্প্রীতির এই উৎসবের মাঝেই এবারে কাঁটাপুকুর জগদ্ধাত্রী পুজোর থিমে যোগ হয়েছে অভিনবত্ব। আদিম ও বর্তমান যুগের মেলবন্ধনে তৈরি হয়েছে এবারের মণ্ডপ। আদিম মানুষ যেমন আগুনে পুড়িয়ে মাংস খেত। এখনও সেই চল রয়েছে, তবে তার পোষাকি নাম হয়েছে বারবিকিউ। সভ্য সমাজের মুখোশের আড়ালেও যে আর একটা জগৎ আছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কাঁটাপুকুর সর্বজনীন। কাঠের গুঁড়ো, ফাইবার, লোহা, প্লাস্টিকের বল, পুরনো কাপড় দিয়ে তৈরি এই মণ্ডপ লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের যাদুতে চমকে দিয়েছে।
[মহাষষ্ঠীতেই চন্দননগরে জমজমাট জগদ্ধাত্রী পুজো]