BREAKING NEWS

১২ আশ্বিন  ১৪৩০  শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

বিজয়ায় মিলন, ৬ মাস পর বাড়ি ফিরলেন মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধ

Published by: Shammi Ara Huda |    Posted: October 20, 2018 8:48 pm|    Updated: October 20, 2018 9:17 pm

Katwa: Lost man reunites with family on Dashami

ছবিতে পরিজনদের সঙ্গে সাদা পাঞ্জাবিতে বৃদ্ধ হিটলাল রাম, ছবি : জয়ন্ত দাস।

ধীমান রায়, কাটোয়া: বিজয়া দশমীতে উমার কৈলাসে ফেরার পালা। ঠিক একই দিনে প্রিয়জনদের কাছে ফিরলেন বৃদ্ধ হিটলাল রাম। কেতুগ্রামের একদল যুবকের প্রচেষ্টায় মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধ মাস ছয়েক পরে ফিরে পেলেন পরিজনদের। পুজোর শেষে পরিবারের কাছে ফিরতে পেরে খুশি বৃদ্ধ। বাবাকে ফিরে পেয়ে বিরুরি গ্রামের যুবকদের ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি হিটলালের ছেলেরা।

জানা গিয়েছে, ছেলের বাড়ি যেতে গিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান বছর ৬৮-র হিটলাল রাম। বিহারের মধুবন জেলার সোসপাই গ্রামের এই বৃদ্ধ প্রায় ছ’মাস ধরে নিখোঁজ। গত মঙ্গলবার ঘুরতে ঘুরতে কাটোয়ার কেতুগ্রামে এসে পড়েন হিটলাল। বিরুরি গ্রামের রাস্তায় অচৈতন্য অবস্থায় থাকে উদ্ধার করেন স্থানীয় একদল যুবক। অসুস্ত বৃদ্ধকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সেবা করে সুস্থ করে তোলা হয়। এই অবসরে সুজন শেখ, চন্দন শেখ, রাজীব শেখরা বার বার তাঁর পরিচয় জানতে চেয়েছেন। শুধু মধুবন জেলা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেননি ওই বৃদ্ধ। যাইহোক ওই জেলার নামটুকু সম্বল করে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন চন্দনরা।

মধুবন জেলা প্রশাসনের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে হোয়াটসঅ্যাপে বৃদ্ধের ছবি পাঠানো হয়। এদিকে ছ’মাস ধরে বাবাকে খুঁজে পেতে পুলিশ প্রশাসন কোনও জায়গাই বাদ রাখেননি বৃদ্ধের ছেলেরা। তাই ছবি দেখেই হিটলালের বাড়িতে খবর যায়। ছেলে রামকিষণ ও নাতি কৃষ্ণরাম খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন বিরুরি গ্রামে। বাবাকে ফিরে পেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি ছেলে রামকিষণ। অবশেষে দশমীর দিন বৃদ্ধ হিটলাল রাম ছেলে ও নাতির সঙ্গে বাড়ির পথে রওনা দিলেন। উমার বিদায় লগ্নে নাতি ছেলের সঙ্গে বাবাকে মিলিয়ে দিতে পেরে খুশি বিরুরি গ্রামের চন্দন, সুজন, রাজীব শেখরা।

[বিসর্জনের শোভাযাত্রায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ির ধাক্কা, মৃত কমপক্ষে ৮]

উল্লেখ্য, বিহারে মধুবন জেলার সোসপুর থানার সোসপুর গ্রামেই বাড়ি হিটলালের। তিন ছেলে, নাতি নাতনি নিয়ে ভরা সংসার হিটলালের। বড়ছেলে বাড়িতে থাকলেও বাকিরা কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন। হিটলালের স্ত্রী কয়েকবছর আগে গত হয়েছেন। ছোট ছেলে পবন রাম দিল্লিতে কাজ করেন। তাঁর কাছে যাওয়ার জন্য মাস ছয়েক আগে ট্রেনে চেপেছিলেন হিটলাল। কিন্তু তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে যান। তারপর থেকে বাবার কোনও খোঁজ পাননি ছেলেরা। এমতাবস্থায় পরিবারের তরফে সোসপুর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করা হয়। এদিকে ঘুরতে ঘুরতে দিন কয়েক আগে বিরুরি গ্রামে এসে পড়েন বৃদ্ধ। ততদিনে তাঁর জীবনীশক্তি তলানিতে এসে ঠেকেছে। গ্রামের পথেই জ্ঞান হারান তিনি। তারপর সুজন শেখদের বদান্যতায় সুস্থ হয়ে পরিজনদের কাছে ফিরেছেন।

স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান মহম্মদ সইদুল্লা জানান, বিরুরির ওই যুবকরাই বৃদ্ধকে চিকিৎসা করিয়েছেন। পুজো উপলক্ষে তাঁকে নতুন পোশাকও কিনে দেওয়া হয়। তারপর বিহারে তাঁর পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে হিটলালকে ফিরিয়ে দেওয়া হল। যুবকদের এই মানবিক কাজে গোটা গ্রাম গর্বিত। ছ’মাস পরে হারিয়ে যাওয়া বাবাকে ফিরে পেয়ে সুজন, রাজীব, চন্দন শেখকে ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি রামকিষণ। তিনি বলেন, ‘আমরা ভাবতে পারিনি বাবাকে ফিরে পাব। বাংলার এই ছোট ভাইদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকব।’

[আকাশে সন্ধ্যা তারা ফুটলেই উমা পাড়ি দেন নাওভাঙা নদীতে]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে