রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: ডুয়ার্সে ফের চিতাবাঘের আতঙ্ক। বুধবার বিকেলে বীরপাড়া মাদারিহাট ব্লকে মানবশিশুকে খুবলে খেয়েছিল চিতাবাঘ। সেই ঘটনায় আতঙ্কের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়াল ডুয়ার্সের একটি কলেজে। ফালাকাটা ব্লকের জটেশ্বরের লীলাবতি কলেজে চিতাবাঘের আতঙ্কে কাঁটা পড়ুয়া থেকে অধ্যাপকরা।
স্থানীয়দের দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে চিতাবাঘের মতো দেখতে কোনও প্রাণীকে কলেজের ভিতরে চলাফেরা করতে দেখতে পান তাঁরা। তারপর কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান স্থানীয়রা। তারপরেই খতিয়ে দেখা হয় সিসিটিভি ফুটেজ। সেখানেও লক্ষ্য করা যায় একটি প্রাণীকে। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরকে। ঘটনাস্থলে যান বনদপ্তর ও জটেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির কর্মীরা। বোমা-পটকা ফাটিয়ে চিতাবাঘ খুঁজতে শুরু করেন বনকর্মীরা। কিন্তু কিছুই খুঁজে পান না তাঁরা। পরে অবশ্য বনকর্মীরা চলে যান। তবে এলাকাবাসীরা এখনও আতঙ্কিত রয়েছেন।
[দুধের শিশুকে খুবলে খেল চিতাবাঘ, তাজ্জব বনদপ্তরের আধিকারিকরা]
পরীক্ষা কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার ছিল প্রজেক্ট সংক্রান্ত কাজ জমা দেওয়ার দিন। কিন্তু লীলাবতী কলেজে চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তেই কলেজমুখো হননি পড়ুয়ারা। বেশ কয়েকজন তো কলেজের গেট থেকেই ফিরে যান। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অধ্যাপক ও কলেজের আধিকারিকরাও। স্থানীয়দের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। চিতাবাঘ খুঁজতে যখন কলেজের ভিতরে হন্যে হয়ে ঘুরছেন বনকর্মী ও পুলিশকর্মীরা, তখনও কলেজের বাইরে উৎসুক জনতার ভিড় ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে প্রাণীর মতো কিছু একটা দেখা গেলেও সেটা চিতাবাঘই কিনা তা নিশ্চিত নন আধিকারিকরা। তবে বহু খোঁজাখুঁজি করেও কিছুই পাননি বন ও পুলিশকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেলে বীরপাড়া মাদারিহাট ব্লকের ধুমচিপাড়া চা-বাগানের ১২ নম্বর লাইনে এক শিশুকে খুবলে খায় চিতাবাঘ। জখম শিশুকে মাদারিহাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওইদিন বিকেলে চা-বাগানের পাশেই খেলছিল ৫ বছরের শিশু ইদেন নায়েক। আচমকা চা-বাগানের ভেতর থেকে একটি চিতাবাঘ এসে শিশুটিকে ধরে ফেলে। গলায় কামড়ে শিশুটিকে চা-বাগানের ভেতরে নিয়ে যায় চিতাবাঘটি। স্থানীয় বাসিন্দারা চিতাবাঘটিকে তাড়া করলেও সহজেই শিশুটিকে ছাড়েনি সে। প্রায় ৫ মিনিট বাদে শিশুর দেহ ছেড়ে পালিয়ে যায় বাঘ। স্থানীয়রা শিশুটিকে মাদারিহাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
[মালবাজারে বেলাইন ট্রেনের একটি কামরা, বন্ধ ডুয়ার্সগামী রেল পরিষেবা]