BREAKING NEWS

১২ অগ্রহায়ণ  ১৪৩০  বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

হাহাকারের মাঝে কফিনবন্দি হয়ে ফিরল উলুবেড়িয়ার শহিদ জওয়ান

Published by: Sucheta Sengupta |    Posted: February 16, 2019 8:37 pm|    Updated: February 16, 2019 9:34 pm

Martyr Bablu Santra's body arrived at home

সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: সন্ধেটা আজ সত্যিই বড় অন্ধকার। কাশ্মীরের পুলওয়ামায় শহিদ বাঙালি জওয়ানের দেহ ফিরেছে উলুবেড়িয়ায় চককাশী রাজবংশী পাড়ায়। শনিবার সন্ধে ৬টা ৩৫ নাগাদ বিমানবন্দর থেকে কফিনবন্দি দেহ পৌঁছায় নিজের বাড়িতে। শহিদ জওয়ান বাবলু সাঁতরার বাড়ির সামনেই অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সাদা কাপড় আর সাদা ফুলে মোড়া সেই মঞ্চই শেষ শয্যা হয়ে ওঠে বাবলুর। সকাল থেকে মঞ্চ ঘিরে বসেছিলেন প্রতিবেশী, আত্মীয়, বন্ধু – সবাই। দিনভর অপেক্ষা করেছেন শহিদ ছেলেটিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন বলে। বাবলুর দেহ সেখানে পৌঁছতেই ফের কান্নার রোল। স্ত্রী মিতা স্বামীর কফিনে আঘাত করেই টুকরো টুকরো করলেন স্বামীর মঙ্গল কামনায় পরে থাকা হাতের শাঁখা। বৃদ্ধা মা কফিনের কাছে গিয়ে একবার দু’হাত তুলে ছেলেকে আশীর্বাদ করলেন। তারপরই ভেঙে পড়লেন কান্নায়।

বিমানবন্দরে গান স্যালুট পুলওয়ামা সন্ত্রাসে শহিদ দুই বাঙালি জওয়ানকে

এদিন বাবলু সাঁতরার কফিনের সঙ্গেই বাড়িতে পৌঁছেছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, অরূপ রায়। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল, চককাশী রাজবংশী পাড়ায় পৌঁছে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, রাজ্য বিজেপির তরফে গিয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। শহিদ বাবলু সাঁতরাকে ঘিরে রাজনৈতিক মতানৈক্য সরিয়ে রেখে এক হয়ে গেলেন সব শিবির। রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিত্বরা সকলে একসঙ্গে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন। কামানের তিনটি তোপধ্বনিতে বিদায় জানানো হল শহিদ জওয়ানকে।

‘রক্ত দিন, প্রাণ বাঁচান’ – জীবনের মহান বার্তা নিয়ে ভ্রমণে নদিয়ার যুবক

সিআরপিএফ ৩৫ নং ব্যাটেলিয়নের জওয়ান ছিলেন বাবলু সাঁতরা। দীর্ঘ কর্মজীবনে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন ভারতীয় সেনার এই বীর যোদ্ধা৷ বারাবরই রণক্ষেত্রে শত্রুর বুলেটের সামনে দৃঢ়চিত্ত, ঋজু ছিলেন তিনি৷ কিন্তু বৃহস্পতিবারের আচমকা হামলা কেড়ে নিল প্রাণ। ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এটা কাপুরুষোচিত হামলা। তাই প্রাণ গিয়েছে বাবলুর। সম্মুখ সমর হলে, শত্রুপক্ষকে নিধন করেই ফিরতেন তিনি।  পরিবারের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, বাবলু সাঁতরাকে যে কাশ্মীরে পোস্টিং করা হচ্ছে, বিষয়টি তাঁরা আগে থেকেই জানতেন৷ তাই বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর থেকেই মনটা আনচান করছিল তাঁদের৷ এদিন সন্ধ্যায় হঠাৎ নয়াদিল্লি থেকে ফোন আসে৷ আর তারপরই পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায় সাঁতরা পরিবারের৷ জানতে পারেন, তাঁদের প্রিয় বাবলু আর নেই৷ শোকে ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার৷ প্রতিবেশীরা এসে তাঁদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন৷ বোঝাচ্ছেন, দেশ মাতৃকার জন্য নিজের বলিদান দিয়েছেন বাবলু৷ কিন্তু মন মানছে না তাঁদের৷ বারবার মনে হচ্ছে, আর কোনওদিন ফিরবে না ছেলেটা৷ কয়েক মাস পরেই চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যেত বাবলুর। দেড় মাস আগে যখন বাড়িতে এসেছিলেন, তখনই মা’কে বলে গিয়েছিলেন, তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন৷ এলেন ঠিকই, কিন্তু কফিনবন্দি অবস্থায়, নিথর হয়ে৷

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে