Advertisement
Advertisement

Breaking News

কন্যাশ্রী

এখনই বিয়ে নয়, পরিবারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল কন্যাশ্রী

কন্যাশ্রী দিবসেই সাহসিকতার নজির গড়ল হাসনাবাদের নাবালিকা।

Minor girl stays strong against forced marriage in Hasnabad
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:August 16, 2019 9:33 am
  • Updated:August 16, 2019 9:33 am

নবেন্দু ঘোষ, বসিরহাট:  বাবা-মার জেদ, ১৫ বছরের মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে বিয়ে দেবেনই। আর নাবালিকার ইচ্ছে, এই বিয়ে আটকে পড়াশোনা করে  প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই বিয়ের দিন সতর্ক পাহারার ঘেরাটোপ এড়িয়ে আধার কার্ড জেরক্স করার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয় সে। বেরিয়েই সোজা থানায় চলে আসে। পুলিশের কাছে সাহায্য চায় ওই নাবালিকা। গোটা রাজ্যজুড়ে কন্যাশ্রী দিবস পালনের দিন হাসনাবাদ থানার শিমুলিয়া গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। নানা ভাল কাজের জন্য রাজ্যের কন্যাশ্রীরা যখন মঞ্চে উঠে পুরস্কার নিচ্ছে, তখনই পুলিশের সাহায্যে নিজের বিয়ে আটকে দিল হাসনাবাদের এই কন্যাশ্রী।

[আরও পড়ুন: বকেয়ার দাবিতে এবার অনশনে বসতে চলেছেন পঞ্চায়েতের অস্থায়ী কর্মীরা]

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, হাসনাবাদ থানার অন্তর্গত শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ওই নাবালিকা পাশের একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবার একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। কয়েক দিন আগেই ওই নাবালিকার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার বাবা-মা পাশের গ্রাম বরুণহাটের বাসিন্দা পেশায় বস্ত্র ব্যবসায়ী এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেন। ওই  নাবালিকার দাবি, সে বারবার তার বাবা-মাকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল, সে এখন বিয়ে করতে চায় না, পড়াশোনা করে স্বনির্ভর হতে চায়। কিন্তু ওই নাবালিকার বাবা-মা তার কথায় গুরুত্ব না দিয়ে গত বুধবার দুপুরে বিয়ের দিন  ঠিক করেন। এরপর বুধবার ওই নাবালিকা বাড়ির ফোন থেকে কয়েক বার চাইল্ড লাইনে ফোন করে সাহায্য চাওয়ার জন্য। কিন্তু সে বাড়ির মধ্যে থেকে কথা বলতে পারছিল না ভয়ে। অন্যদিকে বাড়ির সবার নজর এড়িয়ে বাইরেও বেরোতে পারছিল না। অবশেষে আধার কার্ড নিয়ে জেরক্স করতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা চলে আসে হাসনাবাদ থানায়। সেখানেই এক পুলিশকর্মীর ফোন থেকে চাইল্ড লাইনে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানায়।

Advertisement

থানায় উপস্থিত চাইল্ড লাইনের সদস্যদের কাঁদতে কাঁদতে ওই নাবালিকা জানায়, তার বিয়ে তাদের বাড়িতে হলে আশপাশের মানুষজন পুলিশে খবর দিতে পারে। এই আশঙ্কা থেকে তার বাবা বুধবার দুপুরে ছেলের বাড়িতে তাকে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেবে। এরপর হাসনাবাদ থানার পুলিশকেও ওই নাবালিকা গোটা বিষয়টি জানায়। নাবালিকার কাছ থেকে পুরো ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে থানায় নিয়ে আসে। এবং তাদের থানায় এনে পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের সদস্যরা বোঝান নাবালিকার বিয়ে দিলে কী কী সমস্যা হতে পারে। এছাড়া কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধার কথা ও তাদেরকে জানানো হয়। সব শুনে নাবালিকার বাবা পুলিশকে মুচলেকা দিয়ে জানান, তাঁর মেয়ের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিয়ে দেবেন না। ঘটনা প্রসঙ্গে চাইল্ড লাইনের এক সদস্য বলেন, “ওই নাবালিকা থানায় এসে আমাকে বলে তাকে সারাদিন কিছু খেতে দেওয়া হয়নি বাড়িতে। কারণ হিন্দুরীতি অনুযায়ী বিয়ের আগে কনের উপোস থাকতে হয়। তাই মেয়েটি আমাকে বলে আমায় কিছু খেতে দিন তাহলে হয়তো আমার বাবা আর আমায় বিয়ে দেবে না।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: বিজেপির দাপটে হাতছাড়া পুরুলিয়া, হারানো জমি ফিরে পেতে ‘গণপ্রচার’ই হাতিয়ার তৃণমূলের]

এ বিষয়ে হাসনাবাদের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, “বুধবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কন্যাশ্রী দিবস পালনের অনুষ্ঠান হাসনাবাদ ব্লকে হল। এবং হাবড়া ব্লকের দু’জন মেয়েকে জেলার পক্ষ থেকে পুরস্কৃতও করা হল তারা নিজেরাই নিজেদের বিয়ে বন্ধ করতে পেরেছিল বলে। সেই সময়ে অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একটি মেয়ে এত লড়াই করে নিজের বিয়ে বন্ধ করে সত্যিই নজির গড়ল। মেয়েটির ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ওর দিকে আমাদের নজর থাকবে বিভিন্নভাবে। যাতে ওর পড়াশোনা করতে কোনও অসুবিধা না হয়।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ