Advertisement
Advertisement
বিধানচন্দ্র রায়

দুষ্কৃতীদের টাগের্ট ‘বাংলার রূপকার’, বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তি ভাঙচুরে উত্তপ্ত দুর্গাপুর

কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

Miscreants demolished Dr. Bidhanchandra Roy's statue in Burdwan
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:November 18, 2019 8:55 am
  • Updated:November 18, 2019 8:55 am

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: রাজ্যে ফের মূর্তি ভাঙার সন্ত্রাস। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পর এবার দুষ্কৃতীদের টার্গেট ‘বাংলার রূপকার’ তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডা. বিধানচন্দ্র রায়। এবার পশ্চিম বর্ধমানের বুদবুদ থানার মানকর স্টেশনের কাছে ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। বেদি থেকে উপড়ে নেওয়ার পর মূর্তিটি ভেঙে তার বড় টুকরোগুলি দুষ্কৃতীরাই নিয়ে পালিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। ছোটখাট যেসব টুকরো রাস্তায় পড়েছিল, গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে সেগুলিও কার্যত গুঁড়িয়ে যায়। এই ঘটনা এলাকাবাসীর নজরে পড়তেই শুরু হয় তোলপাড়। ঘটনার জন্য সরাসরি বিজেপির দিকেই আঙুল তুলেছে কংগ্রেস। বিধান রায়ের মূর্তি ভাঙার এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূলও। তবে সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির।

২০১১ সালের ১ জুলাই তাঁর জন্মদিনেই মানকর স্টেশনের কাছে প্লাস্টার অব প্যারিস ও স্টোন ডাস্ট দিয়ে তৈরি ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের ওই মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এদিন সেই মূর্তি ভাঙার খবর চাউর হতেই শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এক বিবৃতিতে এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “মানকরে বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তি ভাঙা, প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দপ্তর বিধান ভবনে কালি ছোঁড়া, সবই বাঙালি কৃষ্টি ও সংস্কৃতির উপর আঘাত। যারা দার্জিলিংকে বাংলা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি মেনে নিয়ে নির্বাচনে সুবিধা নেয়, জয়েন্ট এন্ট্রান্সে বাংলার বদলে গুজরাটি প্রশ্নপত্রে খুশি হয়, তাঁদের বাঙালি মনন আছে কি না সন্দেহ হয়। অন্যদলগুলির মতো বাংলায় এঁদের বলার মতো কোনও ঐতিহ্য নেই। তাই বিদ্যাসাগর, বিধানচন্দ্র রায়ের বিষয়ে সম্যক জ্ঞানও এই সব দুষ্কৃতীদের নেই। যারা এখনও বাঙালিই হয়ে উঠতে পারেনি, তারা কীভাবে বাংলায় সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখে?”

Advertisement

রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই ঘটনায় সরাসরি বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “যে শক্তি এখন ভারত শাসন করছে, তারা এখানকার কৃষ্টি, সংস্কৃতি জানে না। ঋষি-মুনিদের সম্মান দিতে জানে না। তাই বিদ্যাসাগর, তারপর বিধানচন্দ্র রায় এমন চলতেই থাকবে। বাংলারই কিছু মানুষ এদের সমর্থন করছে। আমরা যদি সবাই বয়কট করি, তাহলে এই শক্তি আর আসবে না। আমরা তো এমন করিনি। মার্কস, লেনিনের মূর্তি তো ভাঙিনি।” তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “বিজেপি এমন ফালতু রাজনীতি করে না। মূর্তি ভাঙাভাঙির মধ্যে আমরা নেই। হয়তো কংগ্রেসের কোনও ইস্যুর দরকার আছে। তাই এসব করছে। সরকারের দায়িত্ব মূর্তি রক্ষা করা ও মূর্তি যারা ভেঙেছে তাদের শাস্তি দেওয়া। আমি তো নিজেই ঘটনার তদন্ত চাইছি।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: মানুষ একজোট হলে লাগু হবে না NRC, বিজেপির উদ্দেশে হুংকার কানহাইয়া কুমারের]

অখিল ভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সদস্য দেবেশ চক্রবর্তী জানান, “বাংলাজুড়ে মনীষীদের মূর্তি ভাঙা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে। যারা দিল্লিতে ক্ষমতায় আছে ও এই রাজ্যে শাসকদলের সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে, সেই বিজেপির দুষ্কৃতীরাই এই কালচারের আমদানি করেছে বাংলায়। বিধান রায় কোনও রাজনৈতিক নেতা নন। বাংলার সংস্কৃতি যারা অপমান ও কলুষিত করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” যদিও কংগ্রেসের এই দাবি উড়িয়ে বিজেপির গলসি বিধানসভার আহ্বায়ক রমন শর্মা জানান,“দেশজুড়ে কংগ্রেস ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছে। তাই মিথ্যা বদনাম দিয়ে কোনওভাবে শিরোনামে থাকতে চাইছে কংগ্রেস।” দোষীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বুদবুদ থানার পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ