সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বয়স ৮৫ বছর! তাতে কী? ভোটের ময়দানে তিনি এখনও বিশের টগবগে ‘যুবক’!
সেই ১৯৪৭ সাল থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। প্রথমে কংগ্রেস করতেন। সে সময় পেশা হিসেবে বেছে নেন শিক্ষকতাকে। কিন্তু রাজনীতি ছাড়েননি। ১৯৯৮-এ তৃণমূল কংগ্রেসের গঠনের পর তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ দেন। নির্বাচনে ভোটের ডিউটি না পড়লে তিনি গ্রামের বুথে পোলিং এজেন্ট হয়েছেন। কিন্তু কোনওবার প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাননি। অবশেষে ৮৫ বছর বয়সে জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুযোগ এসেছে শৈলেন্দ্র ভট্টাচার্যর কাছে। অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষককে এবার গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।
পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান-২ ব্লকের বৈকুণ্ঠপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে এবার তৃণমূলের প্রতীকে লড়ছেন শৈলেন্দ্রবাবু। তাঁর বাড়ি এই পঞ্চায়েতেরই বালিয়াড়া গ্রামে। তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলেরা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে অসুস্থ স্ত্রী রয়েছেন। শৈলেন্দ্রবাবুর যখন চার বছর বয়স, তখন তাঁর বাবা মারা যান। তাঁর মা তাঁকে আইএ পাশ করান। তার পর আর পড়াশোনা করতে পারেননি। ১৯৫৫ সালে রায়নার খেমতা প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তারপর কয়েকটি স্কুল হয়ে কাশিয়াড়া স্কুল থেকে অবসর নেন ১৯৯৩ সালে। তার পর থেকেই রাজনীতিই সর্বক্ষণের সঙ্গী। এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় তিনিই সব থেকে বয়স্ক প্রার্থী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। প্রার্থী হওয়ার সুয়োগ পেয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন।
এর আগে মেমারির নিমো-১ পঞ্চায়েতে ৭৪ বছরের নমিতা সেনগুপ্তকে প্রার্থী করে সিপিএম। খণ্ডঘোষের কৈয়র গ্রামের দেবীরানি মুখোপাধ্যায় ৮০ বছর বয়সে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আর এবার তৃণমূলের হয়ে পঞ্চায়েতের ময়দানে নামছেন ৮৫ বছরের শৈলেন্দ্র ভট্টাচার্য। বয়সের ভারের কাছে তিনি যে এখনও ন্যুব্জ হয়ে যাননি, চোখমুখই সে কথা জানান দিচ্ছে। আশ্বাস দিয়েছেন, দলীয় নেত্রীকে হতাশ করবেন না। তাঁর মুখ রাখবেন। আর ঘাসফুল প্রতীকেরও মর্যাদা রাখবেন। আপাতত ভোটের প্রচারের মহাব্যস্ত প্রার্থী। কারণ, বয়সটা যে তাঁর কাছে স্রেফ সংখ্যা মাত্র!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.