নন্দন দত্ত, সিউড়ি: আদালতের নির্দেশে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মেয়াদ একদিন বেড়েছে। সোমবার বেলা ১১টা থেকে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মনোনয়নকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকেই কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠল সিউড়ির ১ নম্বর ব্লক। রাজনৈতিক সংঘর্ষে এক রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যু হয় আজ। মৃতের নাম শেখ দিলদার বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাওয়া খবরে তিনি বিজেপি সমর্থক বলে জানা গিয়েছে। যদিও অনুব্রত মণ্ডলের দাবি, নিহত ব্যক্তি তৃণমূলের সমর্থক। বিজেপি বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের এনে তাঁকে খুন করিয়েছে।
সকাল থেকে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে শাসক দল বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে সিউড়িতে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া রাস্তার ধারে একের পর এক বাড়ি-দোকানে। ১ নম্বর ব্লকের পরিস্থিতি কার্যত থমথমে। এর মধ্যেই একটি পরিত্যক্ত বাড়ির ভিতর থেকে ওই রাজনৈতিক কর্মীর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ এসে দেহটি দেহটি তুলে নিয়ে যায়। বিজেপির সমর্থক হওয়ায় শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে বলে দাবি বিজেপির। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও এক বিজেপি সমর্থক। তাঁর নাম শ্যামসুন্দর গড়াই বলে জানা গিয়েছে। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
[পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন LIVE: রক্তাক্ত সিউড়ি, গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু রাজনৈতিক কর্মীর]
পঞ্চায়েত ভোটের শেষ কবে এত রক্ত ঝরেছে মনে করতে পারছেন না দুঁদে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও। সোমবার আদালতের নির্দেশে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মেয়াদ একদিন বেড়েছে। কিন্তু সিউড়ি এক নম্বর ব্লক যেন সকাল থেকেই রণক্ষেত্র। দফায় দফায় শাসক-বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে এখানে হাতাহাতি হয়। চলে ব্যাপক বোমাবাজি। শাসক দলের বিরুদ্ধে বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতেও বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দুপক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়েই ওই রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। ১ নম্বর ব্লকে এখন প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় অঘোষিত কারফিউ জারি হয়েছে। রাস্তাঘাটে বেরোতেই ভয় পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে অশান্তিতে এর আগে বাঁকুড়ায় এক বিজেপি নেতার মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হামলায় খুন হন অজিত মুর্মু(৪০)। তিনি বিজেপির বাঁকুড়া জেলার রানিবাঁধ দক্ষিণ মণ্ডল কমিটির সম্পাদক। তাঁর বাড়ি রানিবাঁধ ব্লকের পুনসা গ্রামে। পুনসা গ্রাম পঞ্চায়েতের সংসদ আসনের জন্যই মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন অজিত মুর্মু। পথেই তাঁর উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। মারধরের জেরে গুরুতর আহত হন প্রায় ১২ জন বিজেপি কর্মী। তড়িঘড়ি আহতদের রানিবাঁধ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মণ্ডল সম্পাদক-সহ চারজনের অবস্থার অবনতি হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা যখন আহত অজিত মুর্মুকে পরীক্ষা নীরিক্ষা করছেন, তখনই তাঁর মৃত্যু হয়।