সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ফের কর্তব্যরত নার্সের গাফিলতির জেরে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল দুর্গাপুরে। রোগীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই শনিবার সকালে হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় রোগীর পরিবার। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত নার্সের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন মেনগেটের বাসিন্দা বছর চুয়াল্লিশের মমতা ঘোষ। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। শনিবার ভোরে ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ওই মহিলার। অভিযোগ, সেই সময় মোবাইলে ব্যস্ত ছিলেন কর্তব্যরত নার্স। সেই কারণে বারবার বলার পরেও মমতাদেবীকে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করেননি তিনি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। মৃতার মেয়ে প্রিয়া ঘোষের অভিযোগ, “মায়ের সঙ্গে আমি সারাক্ষণ ছিলাম। শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে বুঝতে পেরে নার্সের কাছে তড়িঘড়ি ছুটে যাই। মায়ের কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে একবার তাঁকে আসতে বলি। কিন্তু ঐ নার্স মোবাইল ফোনে ব্যস্ত ছিলেন। প্রথমটা তিনি বলেন যেন আমি নিজেই অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দিই। অনেকক্ষণ পরে নিজেই যান, কিন্তু ততক্ষণে মা শেষ।”
মমতাদেবীর মৃত্যুর পরই শনিবার সকালে তাঁর আত্মীয় পরিজন ও প্রতিবেশীরা হাসপাতালে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত নার্স হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাওয়ায় ক্ষোভের আগুন চরমে ওঠে। অশান্তির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বিধাননগর ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশের সামনেও ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতার পরিজনরা। অভিযুক্ত নার্সকে ফের হাসপাতালে নিয়ে আসার দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। দীর্ঘক্ষণ পর পুলিশের মধ্যস্থতায় স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। তাঁদের কথায়, তনিমা পাণ্ডে নামে ওই নার্স যদি একটু নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতেন তাহলে এই মৃত্যু এড়ানো যেত। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ওই নার্সের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে রোগীর পরিবার। অভিযোগ পত্র দেওয়া হয় হাসপাতাল সুপারকেও। এবিষয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ইন্দ্রজিৎ মাজি জানিয়েছেন, একটি টিম তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে, সামনের মঙ্গলবার তদন্তের রিপোর্ট পাঠানো হবে স্বাস্থ্য ভবনে।
ছবি: উদয়ন গুহরায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.