Advertisement
Advertisement

নগর পরিক্রমা, নাচগানে দোল উৎসবে মাতল আনন্দধাম নবদ্বীপ

দিনভর ভক্তদের খাওয়াতে পাড়ায় পাড়ায় খুলল ভাণ্ডারা৷

People of Nabadwip and Mayapur celebrate the festival of Colour
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 21, 2019 9:37 am
  • Updated:March 21, 2019 9:37 am

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: দোল উৎসবের চিরন্তন আনন্দক্ষেত্র নদিয়ার নবদ্বীপ ও মায়াপুর৷ এবারও প্রত্যাশামতোই সেখানেই মানুষের ঢল নেমেছে৷ শ্রীচৈতন্যদেবের  ৫৩৪তম পূর্ণ আবির্ভাব তিথি উৎসবকে ঘিরে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম৷ পরিক্রমার শহরে পরিণত হয়েছে চৈতন্যভূমি নবদ্বীপধাম।দোলযাত্রা উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই শতাধিক মঠ, মন্দিরের হাজার হাজার ভক্ত খোল,করতাল, খঞ্জনি সহযোগে নগর পরিক্রমায় বেরিয়ে পড়েন৷ শ্রীচৈতন্যদেবের নামগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা নবদ্বীপ। মহাপ্রভুর  আবির্ভাব তিথি উদযাপনের জন্য নবদ্বীপ-সহ মায়াপুরের বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরগুলি আলোয় সেজে উঠেছে। জন্মস্থান মন্দির থেকে শুরু করে গৌড়ীয় মঠ, কেশবজি গৌড়ীয় মঠ, সারস্বত গৌড়ীয় মঠ, বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী সেবিত মহাপ্রভু মন্দির, সমাজ বাড়ি, চৈতন্যদেবের ৬০ ফুট উচ্চতার নরহরি ধাম মন্দির, বলদেব মন্দির এবং বড় পাঠক বাড়িতেও উৎসবের পরিবেশ৷ আর বয়েছে প্রতি বছরের  মত  এবছরও দোলযাত্রা ঘিরে নবদ্বীপের বিভিন্ন মন্দির-সহ মায়াপুরের ইস্কন চন্দ্রোদয় মন্দির-সহ অন্যান্য মন্দিরগুলিতে পালিত হচ্ছে নানা ধর্মীয় কর্মসূচি৷

অপরাধে উৎসাহ দিচ্ছেন বাবুল সুপ্রিয়! বর্ধমানে জোড়া এফআইআর দায়ের

 দোলযাত্রা উপলক্ষ্যে চৈতন্যভূমি নবদ্বীপের বিভিন্ন মন্দিরে একাধিক অনুষ্ঠান৷ ধর্মীয় সভায় শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ, হরিনাম সংকীর্তন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিত্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালন করা হচ্ছে শ্রীচৈতন্যের আবির্ভাব তিথি। এই উৎসব ঘিরে প্রতি বছরের মতো এবারও নবদ্বীপ, মায়াপুরের মন্দিরগুলিতে কয়েক হাজার ভক্তের সমাগম৷ ভক্তরা নানাভাবে চৈতন্য মহাপ্রভুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী সেবিত শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু মন্দিরে গত ৭ দিন ধরেই পালিত হচ্ছে আবির্ভাব তিথি উৎসব। তার অংশ হিসেবে গীতা পাঠ, চোদ্দ মাদল উৎসব চলছে।

Advertisement

Advertisement

গত শনিবার, ১৬ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে গৌরাঙ্গদেবের আবির্ভাব তিথি উৎসব। শেষ হবে আগামী শনিবার ২৩ তারিখ৷ গত শনিবার অধিবাসের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হয়৷ এরপর একে একে শ্রীশ্রী চৈতন্যচরিতামৃত পাঠ,হোলি কীর্তন, মহা অভিষেক-সহ দশ আরতি। আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার দুপুরে মহাপ্রভুর আবির্ভাব তিথি উৎসবের অঙ্গ হিসাবে এখানে পালন করা হবে শ্রী অন্নপ্রাশন। এদিন মহাপ্রভুকে ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হয়, পালিত হয় জগন্নাথ উৎসব। শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু মন্দিরের অন্যতম সেবায়েত জয়ন্ত গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘দোল উৎসবে এই মন্দিরে গুলালের রঙে রাঙায়িত করা হয় মহাপ্রভুর ভক্তদের। উৎসবের সমাপ্তি হবে শনিবার চোদ্দ মাদল সহকারে নগর সংকীর্তনের  মাধ্যমে। নবদ্বীপের উত্তরে কোলেরডাঙা কেশবজী গৌড়ীয়  মঠে এদিন সকাল থেকেই দেশি,বিদেশি অসংখ্য ভক্ত মেতে উঠেছেন শ্রীকৃষ্ণের হোলি উৎসবে। চৈতন্যভূমিতে একমাত্র এই মন্দিরেই ভক্তরা নিজেদের মধ্যে নানা রঙের আবির খেলায় মেতে ওঠেন। রাধামাধবকে সুসজ্জিত সিংহাসনে বসিয়ে কীর্তন সহযোগে নগর পরিক্রমা হয়৷

কেন তৃণমূলের সভায় গিয়েছিলেন? সরকারি আইনজীবীকে শোকজ কমিশনের

বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত তীর্থযাত্রীদের খাওয়াদাওয়ার সমস্যা দূর করতে নবদ্বীপের পাড়ায় পাড়ায় প্রস্তুত খাবারের ভাণ্ডারা। এইসব ভাণ্ডারায় থাকছে  রকমারি খাবার। কোথাও পুষ্পান্ন, কোথাও মিষ্টান্ন। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি আগত যাত্রীদের জন্য থাকছে পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা। সকালের চা-বিস্কুট থেকে শুরু করে জলখাবার। দুপুরে থাকছে মধ্যাহ্ন ভোজন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ভাণ্ডারার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক দেবাশিস সাধুখাঁ ও শিশির বণিক জানালেন, ‘ভাণ্ডারা গড়ে ওঠার পিছনে একটি সুন্দর গল্প আছে। ২০১২ সালে আমরা ১৫ জন বন্ধু অমরনাথ তীর্থে যাই। সেখানে তীর্থযাত্রীদের খাদ্যভাণ্ডার বলতে বিভিন্ন ভাণ্ডারা। তীর্থ সেরে বাড়ি ফিরে আমরা মনস্থির করি, দোলযাত্রা উৎসবে আসা মানুষদের জন্য ভাণ্ডারা খুলব। ২০১৩ সালে শুরু করি ভাণ্ডারা৷ দোলযাত্রা উপলক্ষ্যে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষকে সকালের চা-বিস্কুট থেকে শুরু করে দুপুরে মধ্যাহ্নভোজনে মহাপ্রভুর প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

ছবি: সঞ্জিত ঘোষ

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ