চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ঠিক যেন ম্যাজিক! দামোদর নদের চরে একটু মাটি খুঁড়ে দেশলাই কাঠি জ্বালালেই কেল্লা ফতে! দাউ দাউ করে জ্বলে উঠছে আগুন। সেই আগুনেই দিব্যি চলছে রান্নাবান্না। শীতের মরশুমে আসানসোলের হীরাপুরে দামোদর নদের চরে কালাঝরিয়া ঘাটে পিকনিক করতে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই। আর হবে নাই বা কেন? চাল, ডাল, সবজি, মাংস আর রান্নার সরঞ্জাম আনলেই হল। জ্বালানির জন্য তো টাকা খরচ করতে হচ্ছে না!
[শালবনিতে চালু হচ্ছে জিন্দালদের সিমেন্ট কারখানা, ১৫ জানুয়ারি উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর]
কিন্তু, নদের চরে এভাবে আগুন জ্বালানো কি সম্ভব? রহস্যটা কী? আসানসোল, রানিগঞ্জ যে কয়লাখনি অঞ্চল, তা তো আমরা সকলেই জানি। আর মাটির নিচে কয়লাখনিতে রয়েছে বিষাক্ত মিথেন গ্যাস। আসানসোলের হীরাপুর ও রানিগঞ্জে স্টেশন খুলেছেন গ্রেট ইস্টার্ন এনার্জি নামে একটি গ্যাস উত্তোলনকারী সংস্থা। মিথেন গ্যাস থেকে তৈরি হচ্ছে কোলবেড মিথেন গ্যাস বা সিবিএম। তাতেই চলছে শহরের যানবাহন। হীরাপুরে দামোদর নদের চরে মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে সেই বিষাক্ত গ্যাসই। পাথরের খাঁজে খাঁজে থাকা মিথন মিশছে জলেও। জলের উপর তৈরি হচ্ছে বুদবুদ। আর এই বিষাক্ত গ্যাসের কারণেই ভিড় বেড়েছে পিকনিক পার্টিরও। মিথেন গ্যাসকে কাজে লাগিয়ে আগুন জ্বালিয়ে চলছে রান্নাবান্না। জমে উঠেছে চড়ুইভাতি। প্লাস্টিকের চটি বা গ্লাস পুড়ে গেলেও, আজ পর্যন্ত বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।
[খণ্ডহর থেকে মডেল স্কুল, শিক্ষকের কৃতিত্বকে কুর্নিশ মালদহবাসীর]
যদিও খনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হীরাপুরের দামোদর নদের চরে পিকনিক করা একেবারেই উচিত নয়। বিষাক্ত মিথেন গ্যাসের প্রভাবে যেকোনও সময়ে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য কাউন্সিলের সদস্য কিংশুক মুখোপাধ্যায় জানান, গঠনের দিক থেকে, কার্বন-ডাই-অক্সাইডের চেয়েও ছোট উপাদান এই মিথেন গ্যাস বা সি এইচ ফোর। কিন্তু, বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করার ক্ষমতা কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়েও বেশি। মিথেন গ্যাস বর্ণহীন। গন্ধও নেই।
[পুরুলিয়ায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, বন্যপ্রাণীদের উষ্ণ রাখতে চিড়িয়াখানায় ‘ডায়েট চেঞ্জ’]
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.