Advertisement
Advertisement

Breaking News

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক, ছুটির দিনেও রোগী দেখছেন রঘুনাথপুরের এসডিও

মহকুমা শাসককে এভাবে চিকিৎসকের ভূমিকায় দেখে হতবাক সবাই।

Purulia: Raghunathpur SDO's Doctor 'Avatar', villager praises

রোগী দেখছেন মহকুমা শাসক। ছবি: অমিত সিং দেও

Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:July 29, 2018 1:46 pm
  • Updated:July 29, 2018 1:46 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: তিনি সরকারের উন্নয়নের কাজের রূপায়ণ করেন। গ্রামে গ্রামে গিয়ে শোনেন সমস্যার কথা। আইন শৃঙ্খলা সামলাতেও প্রয়োজনে ময়দানে নামতে হয়। সেই মহকুমা শাসকই ছুটির দিনে প্রশাসনিক কর্তার খোলস ছেড়ে পুরোদস্তুর চিকিৎসক। তা সে উইকএন্ড হোক বা হলি ডে। অফিস আওয়ারে প্রায় সারাক্ষণ ফাইল আর কাগজপত্র, কলমে মুখ গুঁজে কাজ করলেও এ সময় হাতে উঠে আসে স্টেথোস্কোপ। যেমনটা ছিল শনিবার পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। টানা দু’ঘন্টা ধরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আউটডোরে বসে ৪৫ জন রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলেন। আর মহকুমা শাসককে এভাবে চিকিৎসকের ভূমিকায় দেখে হতবাক এলাকাবাসী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীরা। এমনকী, ওই মহকুমা শাসক কার্যালয়ের কর্মীরাও।

তিনি আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের মহকুমা শাসক। রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি পদ থেকে কিছুদিন আগে এই মহকুমা প্রধানের দায়িত্ব নেন। মহকুমা শাসকের চেয়ারে বসার পরই তাঁর কানে আসে ওই মহকুমা এলাকার অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। ফলে আউটডোরের কাজেও সমস্যা হয়। তারপর থেকেই তিনি ছুটির দিনে হাতে স্টেথো নিয়ে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চলে যান। প্রথমে রোগী দেখা তারপর সেই স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন। সর্বশেষ ওখানেই কার্যত জন দরবার বসিয়ে এলাকার মানুষজনদের কাছ থেকে সমস্যা শুনে নেওয়া। মহকুমা শাসক এভাবেই কখনও চিকিৎসক কখনও আবার প্রশাসক হয়ে রঘুনাথপুরে কাজ করছেন। আর তাঁর এই কাজের তারিফ করছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, “আমরা রঘুনাথপুরে এমন একজন মহকুমা শাসককে পেয়েছি যিনি আবার চিকিৎসকও। ফলে তিনি ছুটির দিনে যেভাবে চিকিৎসকের ভূমিকায় অবতীর্ন হচ্ছেন তাতে সুবিধাই হচ্ছে রোগীদের।” ২০১৪ সালে কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে তিনি এমবিবিএস পাশ করেন। তারপর ২০১৫ সালে আইএএস। তারপরই তাঁকে মুসৌরিতে পাঠানো হয় প্রশিক্ষণে। সেখানে বিভিন্ন হেলথ ক্যাম্পে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এরপর প্রশিক্ষণ শেষে গত বছর শেষের দিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটির পদ পান। তবে চিকিৎসা থেকে তিনি সরে আসেননি। আইএএস হলেও রোগীর শুশ্রুষায় কাজ করে যাচ্ছিলেন। তাই মহকুমা শাসকের কুর্সি পেয়েও হাতে স্টেথো নিয়ে রোগী দেখে যাচ্ছেন।

Advertisement

তাঁর কথায়, “আমি এখানে এসে শুনলাম এই মহকুমার বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। ফলত এলাকার মানুষ সব দিন চিকিৎসা পান না। তাই আমি ঠিক করেছি ছুটির দিনগুলিতে আমি ওইসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে রোগী দেখব। এ কাজে যেমন রোগী দেখা হবে তেমনই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কী সমস্যা আছে তা জানতে পারব। সেইসঙ্গে ওই এলাকার মানুষজনদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভাব- অভিযোগ জেনে নিতে পারব।” এদিন মহকুমা শাসক রোগী দেখে উপলব্ধি করেন ওই এলাকার মানুষজন তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে একেবারেই সচেতন নন। বলা যায় একেবারেই স্বাস্থ্য বিধান মেনে চলেন না। মহকুমা শাসকের কাছে রোগ নিয়ে আসা মল্লিকা মুর্মু, বিকাশ মুদি বলেন, “এদিন যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক পাব তা ভাবতেই পারিনি। নতুন চিকিৎসক হাসি মুখে সব কিছু জেনে ওষুধ দিয়েছেন।”

Advertisement

ছবি: অমিত সিং দেও

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ