বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: লকডাউনের মধ্যে নিকটাত্মীয়ের মৃত্যু ঘটলেও তাঁকে শেষবারের মতো দেখার উপায় নেই দূরে থাকা পরিজনদের।তাই তাঁদের এখন ভরসা রানাঘাট পুরসভার তৈরি একটি অ্যাপ। যার মাধ্যমে দূরে বসেই প্রিয়জনের শেষকৃত্যের সাক্ষী থাকছেন তাঁরা। পুরসভার এই উদ্যোগে খুশি পরিবার থেকে দূরে থাকা রানাঘাটের বাসিন্দারা।
কয়েকমাস আগে রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু হয়েছিল এই অ্যাপ। যার মাধ্যমে দূরে বসেই প্রিয়জনের সৎকার দেখা যাবে। লকডাউনে সেই অ্যাপের ব্যবহারই এক ধাক্কায় বেড়েছে কয়েকগুণ। সমাজসেবী দেবতোষবাবুর মা অশীতিপর বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে বৃহস্পতিবার। কিন্তু তার মেয়ে বা অন্যান্য আত্মীয়রা কেউ থাকেন আমেরিকা, তো কেউ হংকং, কেউ আবার শ্রীরামপুরে। তাই ইচ্ছে থাকলেও লকডাউনের মধ্যে বৃ্দ্ধার শেষযাত্রার সঙ্গী হতে পারেননি কেউ। তবে অ্যাপের মাধ্যমে চোখের দেখা দেখতে পেরেছেন। দূর থেকেই সেরেছেন শেষ প্রণাম। তার জন্য মোবাইলে ডাউনলোড করতে হয়েছে ezviz app। এরপর সেখানে আইডি, পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করলেই ভেসে উঠেছে ছবি। জানা গিয়েছে, শ্মশানে বেশ কিছু জায়গায় বসানো ক্যামেরার মাধ্যমেই গোটা প্রক্রিয়াটি সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে চিকিৎসকদের পাশে IIT’র পড়ুয়ারা, বানাচ্ছেন বিশেষ ইনকিউবেশন বক্স]
পুরসভার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পার্থসারথিবাবু বলেন, এলাকা মানুষদের জন্যই এই পরিকল্পনা। পুরসভার তরফে বলা হয়, লকডাউনের কারণে এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে রাজ্যের বহু মানুষ। তাই এই অ্যাপের ব্যবহার বেড়েছে। কারণ, দুঃসংবাদ পেয়েও প্রিয়জনের কাছে আসা এখন অসম্ভব। ভরসা অ্যাপই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে এই অ্যাপের প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন অনেকেই। প্রসঙ্গত, করোনা আতঙ্কে স্তব্ধ দেশ। ঘরবন্দি দেশবাসী। তৃতীয় দফায় ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য।