চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ডিম তো কবে বাদ চলে গিয়েছে। মিড-ডে মিলের জন্য আনাজ জুটবে তো? আশঙ্কায় আসানসোলের জামুড়িয়ার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কারণ, গত তিন মাস ধরে স্কুলের ফান্ডে মিড-ডে মিলের জন্য কোনও টাকাই আসেনি!
জামুড়িয়া পুর এলাকায় ১ নম্বর শিক্ষাচক্রের আওতায় ৭৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলে। পড়ুয়া সংখ্যা হাজার দশেক। আবার পঞ্চায়েত সমিতির অধীনস্থ এলাকায় ২ নম্বর শিক্ষাচক্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৮টি। ওই স্কুলগুলিতে পড়াশোনা করে হাজার পাঁচেক ছাত্র-ছাত্রী। স্রেফ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতেই নয়, মিড-ডে চালু আছে জামুড়িয়া বিধানসভা এলাকার ২৯টি মাধ্যমিক স্কুলেও। এখন টাকার অভাবে যদি মিড-ডে মিল বন্ধ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে অভুক্ত থাকতে হবে কমপক্ষে ২২-২৩ হাজার পড়ুয়াকে। এদিকে ফান্ড না আসায় মিড-ডে মিল যাঁরা রান্না করেন, সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরও টাকা দিতে পারছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ।
জামুড়িয়ায় স্কুলগুলি মিড-ডে মিলের সমস্যা নিয়ে সরব হয়েছেন খোদ শাসকদলের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি জামুড়িয়ার শাখার সভাপতি শাহজাহান কাজি। তাঁর অভিযোগ, জুন মাস থেকে মিড-ডে মিলের টাকা ও রান্নাবান্নার খরচ না পাওয়ায় খুবই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। চাল, ডাল, ডিম, সবজি ও জ্বালানির জন্য কয়লার টাকা যাঁরা ধারে দিচ্ছিলেন, তাঁরা আর দিতে চাইছেন না। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, সাতদিনের বেশি স্কুলের মিড-ডে মিল চালু রাখা যাবে না বলে আশঙ্কা করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি জামুড়িয়ার শাখার সভাপতি। মিড-ডে মিলে পড়ুয়াদের নিরামিষ খাবার দেওয়া হয় জামুড়িয়ার মারোয়াড়ি বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষিকা কাবেরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, পড়ুয়াদের অতিরিক্ত সবজি ও মিষ্টি দিতেই হয়। কিন্তু ময়রা আর ধারে মিষ্টি দিতে চাইছেন না।
কী বলছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা? জামুড়িয়ার বিডিও অতনু কুমার ঝুরির সাফাই, ‘সমস্যা যে এত বড় আকার নিয়েছে, তা জানা ছিল না। দেড়মাস হল এসেছি। দু’বার চেকে সই করেছি। হতে পারে নির্দিষ্ট কিছু স্কুলের অ্যাকাউন্টের সমস্যার জন্য টাকা ঢুকছে না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.