ধীমান রায়, কাটোয়া: ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় দু’বছর ধরে মজুরির টাকা পাননি বেশকিছু শ্রমিক৷ শ্রমিকদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্ব ক্রমাগত পঞ্চায়েত কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন বলে অভিযোগ৷ অবশেষে নিরাপত্তার অভাববোধ করে পঞ্চায়েত অফিস ছেড়ে ব্লক অফিসে বসে ডিউটি করার আবেদন জানালেন পঞ্চায়েতের কর্মীরা। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম পঞ্চায়েতের৷
[কলেজে ‘দাদাগিরি’-র শিকার ছাত্র, র্যাগিংয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৪ ]
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের সচিব, নির্মাণ সহায়ক-সহ ৮ জন কর্মী এনিয়ে মঙ্গলবার আউশগ্রাম ১ বিডিওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাঁদের আবেদন পঞ্চায়েত অফিসে নিরাপত্তা না থাকায় ৮ কর্মী বিডিও অফিসে বসেই ডিউটি করতে চান। ঘটনার জেরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বুধবার বিডিও বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন। বিডিও চিত্তজিৎ বসু বলেন, ‘‘আউশগ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীরা অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তারপর আমি দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করি। একটা ভুলবোঝাবুঝি হয়েছিল। মিটে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে পঞ্চায়েত অফিসে স্বাভাবিক কাজকর্ম হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রাম পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বেশকিছু বকেয়া মজুরি নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। তা নিয়ে এর আগে একাধিকবার পঞ্চায়েতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়েছে। মাস দু’য়েক আগেও স্থানীয়রা বকেয়া মজুরির দাবিতে পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত কর্মীদের দীর্ঘক্ষণ তালাবন্ধ অবস্থায় থাকতে হয়েছিল। পঞ্চায়েতকর্মীরা জানিয়েছেন, পূর্বের ক্ষোভ-বিক্ষোভের ঘটনার পরেও এখনও বেশকিছু শ্রমিক মজুরি পাওনা রয়েছেন৷ অভিযোগ, সেই মজুরির দাবিতে মঙ্গলবার স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল নেতা-কর্মী তাঁদের হুমকি দিয়ে যান। তারপরেই ৮ জন কর্মী বিডিওকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
[ঘন জঙ্গলে মিলল নরকঙ্কাল! কাঠ কুড়োতে গিয়ে ভয়ে কাঁটা মহিলারা]
আউশগ্রাম অঞ্চল যুব তৃণমূল সভাপতি ইমদাদুল শেখ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে বহু গরিব মানুষ বকেয়া মজুরি পাননি। আমরা বারবার বলা সত্বেও পঞ্চায়েত থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাই আমরা পঞ্চায়েত কর্মীদের কাছে আবেদন করতে গিয়েছিলাম যাতে মজুরি মিটিয়ে দেওয়া হয়। তবে আমরা কাউকে হুমকি দিইনি। ইমদাদুল জানিয়েছেন, এলাকায় প্রায় ৪৫০-৫০০ জবকার্ডধারী দু’বছর ধরে কাজ করেও মজুরি পাননি। তাঁরা সকলেই গরিব মানুষ।’’ বিডিও অবশ্য বলেন, ‘‘যে বকেয়া মজুরি নিয়ে অভিযোগ উঠছে তা ২০১৬-২০১৭ আর্থিক বর্ষের। আউশগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ২৮-৩০ দিনের মজুরির টাকা বকেয়া ছিল। তারমধ্যে ২০-২২ দিনের মজুরি মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৭-৮ দিনের মজুরির নথিপত্র কিছু সমস্যা থাকায় মেটানো সম্ভব হয়নি। চেষ্টা করা হচ্ছে তাড়াতাড়ি মিটিয়ে দেওয়ার।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গুসকরায় আউশগ্রাম ১ ব্লক অফিসে বিডিও পঞ্চায়েতকর্মী ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করার পর বিষয়টি মিটমাট করে দেন। বিডিওর আশ্বাস পেয়ে বৃহস্পতিবার থেকে পঞ্চায়েত অফিসে যেতে রাজি হন পঞ্চায়েত কর্মীরা৷
সব খবরের আপডেট পান সংবাদ প্রতিদিন-এ
Highlights
- ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় দু’বছর ধরে মজুরির টাকা পাননি বেশকিছু শ্রমিক৷
- শ্রমিকদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্ব ক্রমাগত পঞ্চায়েত কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন বলে অভিযোগ৷
- অবশেষে নিরাপত্তার অভাববোধ করে আউশগ্রাম পঞ্চায়েত অফিস ছেড়ে ব্লক অফিসে বসে ডিউটি করার আবেদন জানালেন পঞ্চায়েতের কর্মীরা।