দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: উদ্দেশ্য ছিল চুরি। সেই মতো ফাঁকা বাড়িতে ঢুকেও পড়েছিল চোর। সময়মতো চুরির জিনিসপত্র বস্তাবন্দি করে ফেলেছিল সে। কিন্তু চুরি করতে গিয়ে খিদে পেয়ে যায় তার। কি উপায়? খিদের জ্বালা যে বড় জ্বালা। অগত্যা উনুন জ্বালিয়ে রান্না করে খেয়েদেয়ে চুরির জিনিস নিয়ে চম্পট দিল চোর। এই কাণ্ড ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানার আদর্শনগরে।
স্বামীর মৃত্যুর পর নরেন্দ্রপুরের আদর্শনগরের বাড়িতে একাই থাকতেন শেফালী সর্দার নামে এক মহিলা। কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন তাঁর ছেলে। মেয়ে থাকেন সোনারপুরের উত্তরায়ণপল্লিতে। জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে মেয়ের বাড়িতে ছিলেন শেফালীদেবী। শনিবার সকালে বাড়ি ফিরে দেখেন লন্ডভন্ড ঘর। আলমারি, শোকেস, সুটকেস থেকে ট্রাঙ্ক সবকিছুই এলোমেলো। এমনকী বাথরুমের আলো খুলে একটি ঘরে লাগানো হয়েছে। সেইসঙ্গে ঘরে রাখা নগদ ৪৫ হাজার টাকা খোয়া গিয়েছে বলে জানান শেফালী দেবী। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যা নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, কোনওভাবে খবর চাউর হয়ে গিয়েছিল যে ওই বাড়িটি ফাঁকা রয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতেই এদিন শেফালীদেবীর বাড়িতে হানা দেয় ওই ব্যক্তি। এরপর প্রতিঘরের সমস্ত জিনিসপত্র ঘেঁটে দেখে। একটি ঘরে আলো না থাকায়, নিজের সুবিধার্থে বাথরুমে আলো খুলে ওই ঘরে লাগায়। এতকাণ্ডের পর খিদে পেয়ে গিয়েছিল তার। এরপর ফ্রিজ খুলে লঙ্কা বের করে সে। স্টোভ জালিয়ে ভাত ও পিঁয়াজ ভাজে। খাওয়াদাওয়া সেরে তারপর চুরির জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্ত। সর্বস্ব খুইয়ে মাথায় হাত শেফালীদেবীর। আর চোরের কাণ্ড দেখে হতবাক স্থানীয়রা। অভিযুক্তের খোঁজে শুরু হয়েছে তদন্ত।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতে নন্দীগ্রামে শীতলা চণ্ডীর মন্দিরে চুরি করতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে এক যুবক। জানা গিয়েছে, পরিকল্পনামাফিক মন্দিরে ঢুকে পিতলের বাসনপত্র সবই প্রায় বস্তাবন্দি করে ফেলেছিল সে। কিন্তু চুরির পর মন্দিরেই প্রসাদ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ভোর রাতে মন্দিরের দিকে তাকাতেই চক্ষু চড়কগাছ স্থানীয়দের। তাঁরা দেখেন মন্দিরের খোলা দালানে এক যুবক শুয়ে রয়েছে। ভয় পেয়ে চিৎকার করতে শুরু করেন। তাতেই ঘুম ভাঙে চোরের। কিছুক্ষণের মধ্যে গ্রামবাসীরা বুঝতে পারেন, এই যুবক চুরির উদ্দেশ্যেই মন্দিরে এসেছে। স্থানীয়দের হাত থেকে রক্ষা পেতে ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে সকলকে ভয় দেখাতে থাকে। এরপরই দৌড় দেয় ওই যুবক। গ্রামবাসীরাও তার পিছু নেয়। মন্দির থেকে কিছুটা দূরে ওই যুবককে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। বেধড়ক মারধরের পর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে।
ছবি: বিশ্বজিৎ নস্কর
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.