অংশুপ্রতীম পাল, খড়গপুর: এবার রাজ্যের পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরা। শুক্রবার বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মারধরের অভিযোগ ওঠে। সেই সময় পুলিশ তাঁদের কর্তব্য করেনি বলে রবিবার সবংয়ের এক সভায় ক্ষোভ উগড়ে দিল তৃণমূল নেতৃত্ব। একইসঙ্গে বিজেপির সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দিলেন তাঁরা।
এদিন বিকেলে সবং থানার বুরালে তৃণমূলের ডাকে বিজেপির সন্ত্রাসের প্রতিবাদে একটি সভা হয়। সেখানে রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র শুক্রবার বিকেলের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। তিনি বলেন, “সেদিন ঘটনার সময় প্রশাসনের যাঁদের ভূমিকা পালন করার কথা ছিল তাঁরা সেই দায়িত্ব পালন করেন নি। এটা ভাবতে দুঃখ লাগে।” তিনি বলেন, “পুলিশের কেউ কেউ ভাবছেন একুশ সালে ওদের মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা হবে। যেটা কিনা সোনার পাথর বাটির মতো। ওদের দিকে অনেকে লাইন দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁদের বলি উর্দিটাকে মান্যতা দিন। নিরপেক্ষ থাকুন। আমরা বেশি সাহায্য চাই না।” আর রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, “পুলিশের কাজ দৃশ্য দেখা নয়। মানুষের জীবন রক্ষা করা। এটা মনে রাখতে হবে।”
এদিনের সভায় উপস্থিত কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “বিজেপির কর্মীরা ইট মারলে পালটা প্রতিরোধ গড়ে তুলে পাটকেল ছুঁড়তে হবে। বিজেপির কর্মীরা একা মায়ের দুধ খায় নি। আমরাও মায়ের দুধ খেয়েছি এটা এবারে বুঝিয়ে দিতে হবে। এই দুঃশাসনদের প্রতিরোধ করতে হবে।” মন্ত্রীর আরও অভিযোগ, “বাম থেকে সব হার্মাদরা এখন রামে গিয়েছে।” অপরদিকে রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়ার কথায়, “সবংয়ে বিজেপি বলে কিছু নেই। পুরনো সিপিএমরা এখন বিজেপি হয়েছে।” আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিj দাবি, “যেভাবে দলীয় কার্যালয়ে বাইরে থেকে শিকল লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়েছিল তাতে ছোটো আঙারিয়ার ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এই কাজ সিপিএমের প্রাক্তন হার্মাদরা ছাড়া আর কেউ করতে পারে না। তিনি বলেন এইধরনের সন্ত্রাস বরদাস্ত করা হবে না। সবংয়ের মানুষকে সাথে নিয়ে এর জবাব দেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত শুক্রবার বিকালে এই বুরাল বাজারে বিজেপির সভা হয়। সেই সভায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ, দলের নেত্রী তথা প্রাক্তন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ এসেছিলেন। সেই সভায় আসার সময় বিজেপির বাইক বাহিনী মোহাড়ে রাস্তার ধারে তৃণমূলের একটি কার্যালয়ে ভাঙ্গচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। বেশ কয়েকটি বাইক পুড়িয়ে দেয় ও কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে ব্যাপক মারধর করে। তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়না থানার বাকচা, পটাশপুর ও ভগবানপুর এলাকা থেকে বিজেপির কর্মীরা ওই সভায় যাওয়ার সময় ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.