সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিসংখ্যান নয়। তবে প্রবণতা মারাত্মক। শাসক দলের কাছে তো বটেই। ভোট গণনার শুরু থেকে এদিন যেভাবে দিকে দিকে নির্দল প্রার্থীদের উত্থান দেখা দিয়েছে তাতে ভুরুতে ভাঁজ অনেকেরই।
[ তৃণমূল হটিয়ে বাংলা বাঁচান, পরাজয় নিশ্চিত জেনেও আহ্বান সূর্যকান্তর ]
প্রত্যাশিতভাবেই গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলায় জেলায় সবুজ ঝড় উঠেছে। বাংলার গরিষ্ঠসংখ্যক মানুষের রায় গিয়েছে তৃণমূলের দিকেই। ফলে জয় নিয়ে কোনও সংশয় নেই শাসকদলের। কিন্তু তা যে একেবারে নিষ্কণ্টক, তা বলা যায় না। একদিকে দ্বিতীয় বিরোধী শক্তির হিসেবে নজরকাড়া উত্থান হয়েছে বিজেপির। প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলায় এমন ফল করেছে গেরুয়া দল, যা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদেরও অনেকের প্রত্যাশার বাইরে। অনেকেরই প্রশ্ন, সংগঠনের এতটা শক্তি বিজেপির হল কী করে? তা পৃথক আলোচনার বিষয়। তবে একথা ঠিক যে স্থানীয়দেরই একাংশ মুখ ফিরিয়েছে ঘাসফুল থেকে। তাদেরই একাংশ আবার দেখা দিয়েছেন নির্দল ও নির্দল সমর্থক হিসেবে। সংখ্যার বিচারে জয়ী নির্দলদের সংখ্যা হয়তো বেশি নয়। তার থেকে হাজার হাজার আসনে এগিয়ে তৃণমূল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এই নির্দল কারা? মনোনয়ন পর্ব থেকেই বোঝা গিয়েছিল, এরা অনেকেই ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূলী। দলের টিকিট না পেয়ে কেউ সরাসরি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। কেউবা পরোক্ষে সাহায্য করেছে। ভোটের দিনও তার প্রমাণ মিলেছে। কোথাও কোথাও এই বিক্ষুব্ধরাই প্রবল বাধা দিয়েছিল শাসক দলকে। যে কোনও ইস্যুতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। তার ফল পাওয়া গেল গণনাতেও। বেশ কয়েকটি জায়গায় বিরোধীদের থেকেও শাসক দলকে টক্কর দিয়েছে নির্দলরাই। প্রায় হাজারেরও বেশি আসনে জিতেছেন নির্দল প্রার্থীরা। সামগ্রিক পরিসংখ্যানে অবশ্য এর বড় কোনও প্রভাব নেই। এই মুহূর্তে নির্দল ক্ষত যে খুব বড় তা বলা যায় না। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই কাঁটা কিন্তু বিঁধেই থাকল শাসকদলের গলায়। যদিও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য নির্দলদের এক কথায় উড়িয়েই দিয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, কোথায় নির্দল? মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে প্রতীকেই ভোট দিয়েছেন।
[ একতরফা জয় পায়নি তৃণমূল, ফলাফল স্পষ্ট হতেই দাবি দিলীপ ঘোষের ]
এর আগে বিক্ষুব্ধ নির্দলদের সাফ বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, বোর্ড গঠনে সমস্যা হলেও নির্দলদের দলে ফিরিয়ে আনা হবে না। এই শক্ত অবস্থান জরুরি। তবে আরও জরুরি বোধহয় এই নির্দল হয়ে ওঠার কারণ খুঁজে দেখা। কারণ বিরোধীদের টার্গেটে থাকবে এঁরাই। ফলে নির্দল কাঁটা উপেক্ষা করার অর্থ বিরোধীদের জমি ছেড়ে দেওয়া। সেক্ষেত্রে শাসকদলের ভাবনার অবকাশ আছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পঞ্চায়েতের ফলাফল তাই অশনি সংকেত হয়েই থাকল।