ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: বিজেপি, কংগ্রেসের পর এবার পঞ্চায়েত নিয়ে আদালতের পথে বামেরাও। বুধবারই এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চলেছেন তাঁরা। নির্বাচন কমিশনের স্ববিরোধী সিদ্ধান্তে পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এই অভিযোগেই এবার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন বামেরা।
[ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি তুঙ্গে, কলকাতার ধর্মতলা-কালীঘাটে সাজ সাজ রব ]
রাজ্য-রাজনীতিতে বামেরা নাকি ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। বাম মনোভাবাপন্ন মানুষের এ অভিযোগ আজকের নয়। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই ক্রমাগত ফিকে হয়েছে লাল পতাকার জোর।দিকে দিকে এককালে দাপিয়ে বেড়ানো সংগঠনগুলিও ধুঁকছে। নেতাদের মধ্যেও দলের সংস্কারের সেরকম তাগিদ চোখে পড়েনি বলে ক্ষোভ বহু পুরনো কমরেডেরই। ফলে শাসকদলকে কোনও ইস্যুতে মরণকামড় দেওয়া তো দূরের কথা, ধীরে ধীরে বামেদের কাজকর্ম যেন বছরে একবার নবান্ন অভিযানে গিয়ে ঠেকেছে। তাও নেতারাই জানিয়ে দেন তা সফল হয়েছে, কতটুকু দাবি আদায় হল তার কোনও হিসেব নেই। প্রকাশ্যে না বললেও জনান্তিকে অনেক পুরনো সমর্থকই স্বীকার করে নেন, প্রধান বিরোধী হওয়ায় যে ভূমিকা বামেদের নেওয়ার কথা ছিল, তা নিতে তারা ব্যর্থ। ফলে রাজ্যে দক্ষিণপন্থী বিজেপির এত বাড়বাড়ন্ত। অবস্থা এখন এমন হয়ে গিয়েছে যে শাসকদলের মারের প্রতিবাদে পালটা মারের চোখরাঙানি শুধু বিজেপিরই। বামেদের বসে বসে তা সমর্থন করে যেতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেই রাজ্য রাজনীতিতে পুনরায় প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার জোর চেষ্টা বামেদের। পঞ্চায়েতে টালবাহানা নিয়ে এবার সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে তারা।
[ শিক্ষা সংসদের সভাপতির পদ ছেড়ে ভোটের ময়দানে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক ]
জানা যাচ্ছে, বুধবার দিল্লি পৌঁছচ্ছেন দলীয় নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। তিনিই শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করবেন। প্রসঙ্গত বিজেপির মামলারও শুনানি হওয়ার কথা কাল। মনোনয়নের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও নির্দেশ প্রত্যাহার করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তার উপর অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এদিকে যখন রায় বেরল ততক্ষণে মনোনয়নের সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে অদ্ভুত জটিলতা দেখা দেয়। এদিকে কমিশন সূত্রে খবর, আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে জানানো হবে নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে না। ফলে পুনরায় কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে না। এই চরম টালবাহানায় পঞ্চায়েত ভোটের সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ বামেদের। সে অভিযোগ জানিয়েই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে তারা। এদিকে বামফ্রন্টের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু জানিয়েছেন, প্রয়োজনে ধর্মঘটের পথেও যেতে পারে বামেরা।