বিশ্বজিৎ নস্কর: মোদির গুজরাটকে বলে বলে গোল দিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুন্দরিনী প্রকল্প। বিশুদ্ধ দুগ্ধ উৎপাদনে দেশের সেরা নির্বাচিত হয়ে শিরোপা জিতল সুন্দরবনের সুন্দরিনী। গুজরাট থেকে জাতীয় পুরস্কার এখন রাজ্যের সুন্দরিনীর দখলে। পুরস্কৃত হলেন সুন্দরিনীর মহিলা কর্মীরা।
উল্লেখ্য, বাম সরকারের আমলে সুন্দরিনীর জন্ম হলেও তা পরিচর্যার অভাবে মৃতপ্রায়ই ছিল। ২০১৫-তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই মিল্ক ইউনিয়নের দায়িত্ব নেয়। রীতিমতো ঢেলে সাজানো হয় সুন্দরিনীকে। নতুন করে শুরু হয় কাজ। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সমবায়ের মাধ্যমে দুধ, ডিম, মধু নিয়ে আসা হয় মিল্ক ইউনিয়নে। সেই দুধ থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি হয় ঘি, মাখন। এই প্রক্রিয়াজাত দ্রব্যাদিই রপ্তানি হয় কলকাতার বাজারগুলিতে। সুন্দরিনী মিল্ক ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রাণিসম্পদ উৎপাদক সমবায় সমিতি। এই সমবায়গুলিতেই কাজ করেন প্রায় ৭৬ জন মহিলা।
আগে সুন্দরবন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মহিলারা লিটার প্রতি দুধ বিক্রি করে ১৫ টাকা করে পেতেন। এভাবে দিনের পর দিন দুধের দাম ঠিক মতো না পাওয়াতে গরু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হতেন। ২০১৫-তে নতুন করে জেলার জয়নগরে সুন্দরিনী মিল্ক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। হাতেনাতে ফল পান গ্রামের মহিলারা। লিটার প্রতি দুধের দাম বেড়ে হয় ৩০ টাকা। এই বাড়তি টাকা হাতে আসাতে স্বচ্ছলতার মুখ দেখে পরিবারগুলি। ইউনিয়নের তরফে প্রত্যেক মহিলাকে ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে দেওয়া হয়। দুধ বিক্রির টাকা সোজাসুজি সেই অ্যাকাউন্টেই পড়তে থাকে। শুধু দুধ নয়, একই পদ্ধতিতে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসতে থাকে চাক ভাঙা মধু, মুরগির ডিমও। এই সব প্রত্যন্ত এলাকার মহিলারাই মধু, ডিম সংগ্রহ করে সমবায়ের মাধ্যমে মিল্ক ইউনিয়নে জমা করতেন। তবে শুধু উৎপাদিত দ্রব্য দেওয়া নেওয়াই নয়, ইউনিয়নের তরফে গ্রামীণ মহিলাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। মৌমাছি পালন, মুরগি পালন ও গো-পালনের প্রশিক্ষণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.