সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই দল বেঁধে গ্রামে ঢুকছে দলমার হাতি। হাতি তাণ্ডবে নষ্ট হচ্ছে মাঠের ফসল, ভাঙছে ঘর-বাড়ি। আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের। রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন তাঁরা। এমনই পরিস্থিতি পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড়ে।
[ জ্ঞানেশ্বরীর ধাক্কায় কাটা পড়ল হস্তিশাবক-সহ দুই দাঁতাল]
পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে দলমা হাতির উপদ্রব নতুন নয়। তবে এখন হাতিদের গতিবিধির ধরন পালটে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের জানিয়েছেন, আগে পুজো ঠিক আগে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে কংসাবতী নদী পেরিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে ঢুকত দলমার হাতি। বড়জোর দুই থেকে আড়াই মাসে এ রাজ্যে থাকত হাতিগুলি। কিন্তু, গত সাত-আট বছর ধরে বছরভর দলমা হাতির আনাগোনা লেগেই থাকছে। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে বারবার হাতিরা ফিরে আসছে। এমনকী, অনেক হাতির আবার পাকাপাকিভাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে থেকেও যাচ্ছে।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, লালগড়ে জঙ্গলে রয়েছে ২০ থেকে ২২টি দলমার হাতি ছিলই। বুধবার আরও ৪০ থেকে ৪৫টি হাতি ঢুকেছে। এখন লালগড়ের জঙ্গলে হাতির সংখ্যা আশির কাছাকাছি। প্রায় প্রতিদিন ভোরবেলায় লালগড়ের আদিনাশুলি, বীরকাঁড়, রাঙামেটিয়া, পটিহা, আমলিয়ায়-সহ বিভিন্ন গ্রামে তাণ্ডব চালাচ্ছে হাতির দল। চাষের মরশুমে বেশিরভাগ জমিতেই বীজতলা লাগিয়েছেন গ্রামবাসীরা। হাতির তাণ্ডবে যে বীজতলা যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি বাড়িঘরও ভাঙছে। মাথায় হাত গ্রামবাসীদের। পরিস্থিতি এমনই, যে রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিতে হচ্ছে। তাতে যে খুব একটা লাভ হচ্ছে, এমনটা নয়। হাতির তাণ্ডব থেকে বাঁচতে বনদপ্তরের দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রামবাসীরা। গত সোমবার রাতে খড়গপুরের ডুমুরিয়া রেলগেটের কাছে লাইন পেরোতে গিয়ে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় প্রাণ গিয়েছিল দুটি দাঁতালের। মারা গিয়েছিল এক হস্তিশাবকও। এই ঘটনার পর খড়গপুর থেকে কালীমৌলি পর্যন্ত ৫৩ কিমি রেলপথে হাতির করিডোর বলে ঘোষণা করেছে বন দপ্তর। ওই এলাকা দিয়ে ধীর গতিতে চলছে ট্রেন।
দেখুন ভিডিও:
[ সভ্যতার গর্জনে পথ হারাচ্ছে বাঘিনির ডাক, বিপন্ন সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল]