Advertisement
Advertisement

Breaking News

Child Mother rescued

মেয়ের জন্ম দেওয়ায় স্বামীর অত্যাচার, আত্মহত্যার চেষ্টা বধূর, বাঁচালেন এক মহিলাই

বধূকে বাঁচিয়ে নিজের বাড়িতেই আশ্রয় দিয়েছেন ওই মহিলা।

Woman planned suicide as Husband tortured for baby girl, Tea stall owner recued | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:May 18, 2022 5:31 pm
  • Updated:May 18, 2022 5:31 pm

ধীমান রায়, কাটোয়া: ভালবেসে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছেড়েছিলেন তরুণী। বিয়ের বছর দেড়েকের মধ্যেই মোহভঙ্গ। কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় স্বামীর কাছে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছিল বধূকে। তাই অসহায় হয়ে দেড়মাসের কন্যাসন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আবার বাপেরবাড়িতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বাপেরবাড়ির দরজাও তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়। চূড়ান্ত অবসাদে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে যাচ্ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের সুপ্রিয়া দাস। দেড়মাসের সন্তানকে বুকে আঁকড়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। তাঁকে নিরস্ত করে আশ্রয় দিলেন চা দোকানের মালকিন।

Child-Mother-rescue-1

Advertisement

মঙ্গলকোটের ইছাবটগ্রামের বাসিন্দা সুপ্রিয়া দাস। তাঁকে বাঁচান কাটোয়ার সুবোধ স্মৃতি রোডের চায়ের দোকানের মালকিন পুতুল সর্দার। ভাতারের বলগোনা গ্রামের দাসপাড়ায় বাপেরবাড়ি সুপ্রিয়ার। অনেকদিন আগেই মা ও বাবাকে হারিয়েছেন। ঠাকুমার কাছেই থাকতেন সুপ্রিয়া। এক ভাই আছে তাঁর। ফোনে মঙ্গলকোটের ইছাবটগ্রামের বাসিন্দা সুমন্ত দাস নামে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সুপ্রিয়ার। পেশায় মোটর ভ্যানের চালক সুমন্ত। দেড় বছর আগে প্রেম করে তাঁরা বিয়ে করেন। কিন্তু সে বিয়েতে সুপ্রিয়ার ঠাকুমা ও ভাই রাজি ছিলেন না। তাই বিয়ের পর থেকে আর বাপেরবাড়িতে যাতায়াত ছিল না সুপ্রিয়ার।

Advertisement

[আরও পড়ুন: রাস্তায় ছুটছে ভলভো টোটো! রয়েছে টিভি-সিসিটিভি, চড়বেন নাকি?]

গত ১৩ এপ্রিল মাসে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন সুপ্রিয়া। তাঁর অভিযোগ, “মেয়ে হওয়ার পর থেকেই আমার স্বামীর নির্যাতন শুরু হয়। কথায় কথায় মারধর করে। আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না।” সুপ্রিয়া জানান, খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে তাঁর স্বামী মঙ্গলবার রাতে মারধর করে। বুধবার সকালেও প্রচণ্ড মারধর করে। এরপরই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়েন সুপ্রিয়া। প্রথমে বাপেরবাড়িতে যান। সুপ্রিয়ার কথায়,”ভাই আমাকে সাফ বলে দেয় ‘নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছিস। নিজের সমস্যা নিজেই বুঝে নিবি। এখানে আসবি না।”

Child-Mother-rescue-1

এরপর বলগোনা থেকে বাস ধরে কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে আসেন সুপ্রিয়া। তারপর হেঁটে গঙ্গার ঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুবোধ স্মৃতি রোডে একটি চায়ের দোকান চালান কাটোয়া ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পুতুল সর্দার। সুপ্রিয়া কাটোয়া শহর সম্পর্কে পরিচিত ছিলেন না। পুতুলদেবীকে জিজ্ঞাসা করেন, গঙ্গার ঘাট কোন দিকে যেতে হবে? পুতুল সর্দার বলেন, “মেয়েটাকে দেখেই কেমন যেন লাগছিল। ও গঙ্গার ঘাটে যাওয়ার রাস্তা জিজ্ঞাসা করছিল। কিছু খারাপ উদ্দেশ্য রয়েছে বুঝে ওকে জিজ্ঞাসা করি। বারবার জিজ্ঞাসা করতেই কাঁদতে কাঁদতে সব খুলে বলে। মেয়েকে নিয়ে গঙ্গায় ডুবে আত্মহত্যা করার জন্যই রাস্তা জিজ্ঞাসা করছিল।”

জানা যায়, চায়ের দোকানে আরও কয়েকজন ছিলেন। তাঁরাও সুপ্রিয়াকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। সুপ্রিয়া ও তাঁর সন্তানকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন পুতুল সর্দার। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর যায় পুলিশ ও স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। বিধায়ক জানান, ওই মহিলা চাইলে পুরসভা পরিচালিত ‘আশ্রয়’ নামে ভবনে থাকতে পারেন। সুপ্রিয়া জানান তিনি এখন আর স্বামী বা বাপেরবাড়িতে ফিরে যেতে চান না। একটা কাজ জোগাড় করে মেয়েকে বড় করতে চান। এদিনও তিনি পুতুলদেবীকে বলেন,”মাসি, আমাকে একটা কাজ দেখে দাও।” পুতুলদেবী পালটা বলেন,”তুই আমার মেয়ে হয়েই আমার কাছে থাকবি। অত ভাবতে হবে না।”

[আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের আক্রোশে শাশুড়িকে কুপিয়ে খুন করল যুবক!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ