ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বঙ্গ সাগরে ঢেউ উঠতে চলেছে মদন বাণে!
নভেম্বরে বিচ ফুটবলের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। পরিকাঠামো প্রায় তৈরি। বাদ সেধেছিল ফিফা। অসময়ে এমন ক্রীড়ার আয়োজন করা যাবে না। কী আর করা। ডিসেম্বরের শেষে বর্ষবরণের জন্য আরও দু’টি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে সাজানো সেই পরিকাঠামো তাই তাদের হাতেই তুলে দিলেন মদন।
তাজপুরে বিচ ফুটবলের আসর বসাতে চেয়েছিলেন প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী। তাঁর নিজের কথায়, “এমন খেলা আগে কখনও হয়নি। কেউ করেনি। সৈকতের সাদা বালিতে বিশ্বের বড় ফুটবলাররা খেলবেন।” নভেম্বরের ৩ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত সেই বিচ ফুটবলে উড়িয়ে আনার কথা ছিল বিশ্বের তাবড় আন্তর্জাতিক ফুটবলারদের। সেই কথা কানে যেতেই ফিফার এক প্রতিনিধির ফোন মদনকে। তাঁর কথায়, “বিষয়টা আমি জানতাম না। এত বড় খেলোয়াড়দের আনতে ফিফার অনুমোদন লাগে। ফিফার নিয়ম আমি অমান্য করতে পারি না।”
কিন্তু আয়োজন যে প্রায় সারা? তখন কী উপায়? এর মধ্যেই প্রশাসনের কাছে খবর যায়, বিচের ওই সাদা বালিতে ডিসেম্বরের কড়া শীতে ‘বেঙ্গল বিচ ফেস্টিভাল’ করবে রাজ্য পর্যটন দফতর। ২০ থেকে ২২ পর্যন্ত। সেই ফেস্টিভাল শেষ হতেই শুরু হবে ‘উইন্টার কার্নিভাল ২০১৭’। চলবে ২৩ থেকে ৩১ পর্যন্ত। শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের সহযোগিতায় এই ফেস্টিভালের আয়োজন করতে চায় একটি বেসরকারি সংস্থা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মদন মিত্রর অনুষ্ঠানের জন্য পরিকাঠামো তৈরিই ছিল। পরপর ২০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই ফেস্টিভালের জন্য মদনের তৈরি সেই পরিকাঠামো ব্যবহারের অনুমতি চায় জেলা প্রশাসন। সঙ্গে আনুষঙ্গিক কিছু বাড়তি উপরোধও রাখে। রাজ্য পর্যটন দফতর ও শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের পরপর দুই উৎসবের জন্য যে পরিকাঠামো দরকার, মদন মিত্রর সম্পূর্ণ সহযোগিতাতেই তা এবার পূর্ণ রূপ পেতে চলেছে। প্রাক্তন মন্ত্রীকে তার প্যাট্রনও করা হয়েছে।
বিচ ফেস্টিভালের পরবর্তী উইন্টার কার্নিভাল আরও আকষর্ণীয়। ন’দিনের এই কার্নিভালে থাকছে রেড কার্পেট, তানুরা ডান্স, অ্যানি আহমেদ কনসার্ট, ফায়ার ডান্স, ড্রাগন ডান্স, ফায়ার ডান্স, রাশিয়ান কার্নিভাল শো, শান্তা ডান্স, বেলি ডান্স, ফ্যাশন শো, রাশিয়ান ব্যালে, রাশিয়ান ডান্সের মতো চোখধাঁধানো নানা অনুষ্ঠান। দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের সহযোগিতায় লা ফিয়েস্তিয়া নামে এক সংস্থার আয়োজন করছে। কলকাতায় ইলিশ উৎসব বা গণ-বিবাহের মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। কিন্তু সৈকত শহরকে ঘিরে এত বড় আয়োজনে ভরসা করে শৌখিন মদন মিত্রর কাছেই সহযোগিতা চায় প্রশাসন। আর প্রাক্তন মন্ত্রীর নিজের অনুষ্ঠান? তার কী হবে? মদন এখনও বেশ প্রত্যয়ী। বিচ ফুটবলের আয়োজন তিনি করেই ছাড়বেন। নিজেই জানিয়েছেন, “জানুয়ারি মাসের ২৩ থেকে ২৬ পর্যন্ত ওই ফুটবল করতে চাই বলে নতুন করে আবেদন জানিয়েছি। দেখা যাক অনুমোদন পাই কি না।”
সাধের গুড়েতে বালি ঢালতে মদন কিছুতেই দেবেন না।