Advertisement
Advertisement
Syria-India Relation

শাসক বদলেছে সিরিয়ায়, কেমন হবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক?

সিরিয়ায় ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের হাতে বাশার আল-আসাদের পতন মধ্য-প্রাচ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ।

Editorial on Syria-India Relation
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:December 10, 2024 6:55 pm
  • Updated:December 10, 2024 7:25 pm  

বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় ভারতের অবস্থা কি সংকটাপন্ন? কেমন হবে নতুন শাসকের সঙ্গে আগামী দিনে ভারতের সম্পর্ক?

সিরিয়ায় ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের হাতে বাশার আল-আসাদের পতন মধ্য-প্রাচ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ ও ইঙ্গিতবাহী। ভারতের ক্ষেত্রে, সিরিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক থাকার কারণে, এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির উপর সজাগ পর্যবেক্ষণ থাকা প্রয়োজন। ভারত-সিরিয়া কূটনীতি, অর্থনীতি ও গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্পর্কের কৌশলগত পরিবর্তন আনা হবে কি না, তা নিয়ে নতুন করে ভাবা উচিত ভারতের।

Advertisement

অতীতে, দু’টি দেশ নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের মত-বিনিময়ের মাধ‌্যমে সম্পর্ক জোরদার করেছে। গৃহযুদ্ধর সময় সিরিয়ার প্রতি ভারতের সমর্থনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। অসামরিক নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে সওয়াল করার সময়ও ভারত মানবিক উদ্বেগের উপর জোর দেয়। এর বিনিময়ে অর্থনৈতিকভাবে উল্লেখযোগ্য রপ্তানির পাশাপাশি সিরিয়ার বিদ্যুৎ, তেল এবং তথ‌্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতের বিনিয়োগ এই অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করেছে। ‘তিশরিন থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট’-এর জন্য ২৪০ মিলিয়ন ডলার ক্রেডিট লাইনের মতো উদ্যোগ সিরিয়ার উন্নয়নে ভারতের ভূমিকার ‘প্রতীক’।

আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় ভারত ঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে বলেই মনে হয়। আগামী দিনে নতুন শাসকের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন হবে, তা ভবিষ‌্যৎ-ই বলবে। তবে হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) মতো ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলির দ্বারা প্রভাবিত ‘অভ্যুত্থান’ আঞ্চলিক অ-স্থিতিশীলতা এবং চরমপন্থার পুনরুত্থানের বিষয়ে যে সম্ভাবনা দেখাচ্ছে, যা যথেষ্ট উদ্বেগের। এই ধরনের ফলাফল সিরিয়ায় ভারতের বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং ভারত-গাল্‌ফ, সুয়েজ খাল, ভূমধ্যসাগরীয় করিডোর-সহ বিস্তৃত মধ্য-প্রাচ্য স্ট্র‌্যাটেজির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলি রূপায়ণের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ভারতকে সিরিয়া ও মধ্য-প্রাচ্যে নিজ স্বার্থরক্ষার জন্য বহুমুখী পন্থা অবলম্বন করতে হবে।

ভারত স্থিতিশীলতা এবং সন্ত্রাস দমনে তার প্রতিশ্রুতির উপর জোর দিলেও, সিরিয়ার নতুন শাসকের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে হবে, কারণ এই দেশগুলি সিরিয়ার আরব লিগে ফিরে আসার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছিল। এই অনিশ্চিত সময় ভারতের ‘বাস্তববাদ’ নীতি– নতুন সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণ করবে। ঝুঁকি বেশি, তবে এই অঞ্চলে স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার সুযোগও রয়েছে আমাদের দেশের সামনে।

সিরিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রক্ষার জন্য ভারতের প্রয়োজন কূটনীতি এবং কৌশলগত দূরদর্শিতা। তা সফল হলে মধ্য-প্রাচ্যের জটিল ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসাবে নিজের মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে ভারত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement