সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাগের বশে ব্রাহ্মণদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে আগেই রোষানলে পড়েছিলেন অনুরাগ কাশ্যপ। ‘ব্রাহ্মণদের উপরে মূত্রত্যাগ করি’, পরিচালকের এহেন মন্তব্যের বিরুদ্ধে রেগে কাঁই দেশের একাধিক ব্রাহ্মণ সংগঠন। চানক্য সেনা, সর্বব্রাহ্মণ মহাসভা, ব্রাহ্মণ সেবা সংঘ, অখিল ভারতীয় ব্রাহ্মণ মহাসভা, বিশ্ব ব্রাহ্মণ পরিষদ এবং অখিল ভারতীয় ব্রাহ্মণ সংঘ একজোট হয়। দায়ের হয় অনুরাগের বিরুদ্ধে অভিযোগও। এবার আরও বড় আইনি জটিলতায় পরিচালক। সুরাট কোর্টের তরফে নোটিস পাঠানো হল তাঁকে।
অনন্ত মহাদেবনের আগামী ছবি ‘ফুলে’র বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণ সমাজকে কালিমালিপ্ত করার অভিযোগ উঠতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন অনুরাগ কাশ্যপ। সেন্সরের কোপে পড়ার পর অনন্তের পক্ষ নিয়ে তিনি যে ভাষায় প্রতিবাদ করেন, সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। অনুরাগের পোস্টে জনৈক নেটিজেন তাঁকে আক্রমণ করেন। তার পালটা পরিচালক লেখেন, ‘ব্রাহ্মণদের উপরে আমি মূত্রত্যাগ করি… সমস্যা আছে?’ এরপরই বিতর্ক তুঙ্গে! গত শুক্রবার অনুরাগ কাশ্যপের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। তারপরই অবশ্য নিজের শব্দচয়নের জন্য মাথা নত করে ক্ষমা চেয়েছিলেন পরিচালক। তবে তাতেও রেহাই মিলল না। এবার আরও বিপাকে অনুরাগ কাশ্যপ। সুরাটের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তরফে পরিচালককে আইনি নোটিস পাঠিয়ে হাজিরা দিতে বলা হল।
বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, কমলেশ রাওয়াল নামে সুরাটের এক আইনজীবী ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের তরফে অনুরাগ কাশ্যপের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই সুরাট আদালতের তরফে সমন পাঠানো হল পরিচালককে। সেই নোটিসেই আগামী ৭ মে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। হাজিরা না দিলে একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারে আদালত।
এর আগে দেশের একাধিক ব্রাহ্মণ সংগঠন অনুরাগের বিরুদ্ধে একটি ভারচুয়ালি বৈঠক করে। বৈঠকের পর চাণক্য সেনার প্রধান পণ্ডিত সুরেশ মিশ্র বলেন, “অনুরাগ কাশ্যপের মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক। ব্রাহ্মণের বিরুদ্ধে কুমন্তব্য নিয়ে শিক্ষা দেওয়া উচিত।” তাই শাস্তিস্বরূপ তাঁর মুখে কালি মাখানোর নিদান দেওয়া হয়। যে এই কাজ করতে পারবে তার জন্য ১ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কারও ঘোষণা করে ব্রাহ্মণী সেনা। এরপরই ক্ষমা চেয়ে অনুরাগ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেন, “আমি রাগের বশে অন্য একজনকে জবাব দিতে গিয়ে নিজের মান-মর্যাদার কথা ভুলে গিয়েছিলাম। আর পুরো ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়কে নিয়ে খারাপ কথা বলে ফেলেছি। সেই সমাজ, যার অধিকাংশ আমার জীবনের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। এখনও অনেক অবদান রয়েছে তাঁদের আমার জীবনে। আজ তাঁরা সকলে আমার এহেন মন্তব্যে কষ্ট পেয়েছেন। আমার নিজের পরিবার আমার কথায় ‘আহত’ হয়েছে। অনেক বুদ্ধিজীবী, যাঁদের আমি সম্মান করি, তাঁরা আমার রাগের বশে করা শব্দচয়ন নিয়ে ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন। আমি নিজেই এমন মন্তব্য করেছি, যা আসল ইস্যু থেকে অনেককে দিকভ্রষ্ট করেছে। আমি মন থেকে সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি। সমাজের সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, কারণ আমি এমন কথা বলতে চাইনি। রাগের বশে অন্য কাউকে উত্তর দিতে গিয়ে জঘন্য টিপ্পনি কেটেছি!”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.