সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ‘গণভবন’ দখল করেছে বিক্ষোভকারীরা। হাতুড়ির ঘায়ে ভাঙা হয়েছে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তি। গত কয়েকদিন ধরে এ বিষয়ে নানা মতামত দিয়েছেন সেদেশের তারকারা। এরই মাঝে ভারতে হইচই ফেলে দিয়েছে মৃণাল সেনের অবতারে ওপার বাংলার অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ‘পদাতিক’ ট্রেলারে চঞ্চলের প্রথম ঝলকেই উচ্ছ্বাস এপার বাংলায়। ১৫ আগস্ট ছবির মুক্তির অপেক্ষায় গোটা বাংলা। কিন্তু অনুরাগীদের প্রশ্ন চঞ্চল কি ছবির প্রচারে কলকাতায় আসতে পারবেন?
‘পদাতিক’ ছবির প্রযোজক জানিয়েছেন, ”এখন ওপার বাংলায় ছবির মুক্তি সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মানুষ এই মুহূর্তে ছবি দেখার মানসিকতায় নেই। তাই ভারতে নির্দিষ্ট দিনে ছবিটি মুক্তি পাবে। বাংলাদেশের কথা এখনই বলতে পারছি না। ” এই অগ্নিগর্ভ অবস্থায় কি চঞ্চল এদেশে আসতে পারবেন? সেই নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। তবে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর তরফে অভিনেতার কুশল সংবাদ জানতেই চঞ্চল চৌধুরী এককথায় জবাব দিলেন, “এই আছি আর কী!” তবে কলকাতায় আসা নিয়ে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে ‘পদাতিক’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ১৬ আগস্ট।
এদিকে ‘হাসিনা মুক্ত’ বাংলাদেশে খুশি অভিনেত্রী নুসরত ইমরোজ তিশা, তাসনিয়া ফারিনরা। লড়াকু প্রজন্মকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তাঁরা। তিশা ফেসবুকে বাংলাদেশের পতাকা আর রাজপথে জনঅরণ্যের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “স্বাধীন দেশে স্বাগতম! আলহামদুল্লাহ!” এদিকে হাসিনা সরকার ঘনিষ্ঠ ঢালিউড ফিল্ম সংগঠন অ্যাক্টর্স ইক্যুয়িটি বাংলাদেশ থেকে অব্যহতি ঘোষণা করলেন অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম। তিনি জানিয়েছেন, “ইক্যুয়িটি মানে ন্যায়বিচার। ন্যায়ের কথা বলে চলমান পরিস্থিতিতে ন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কারণ শিল্পী হিসেবে আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই কারণেই অ্যাক্টর্স ইক্যুয়িটি বাংলাদেশ থেকে অব্যহতি নিলাম। এই সংগঠন দেশ তথা জাতীয় বিষয়ে লোকদেখানো অভিনয় না করে বিবেক, চেতনা জাগ্রত করে এগিয়ে যাক আশা রাখি।”
এদিকে তাসনিয়া ফারিন বাংলাদেশের পড়ুয়া প্রজন্মের শক্তির কথা মনে করিয়ে দিলেন। চব্বিশ ঘণ্টা আগেই প্রতিবাদী পোস্টে অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, “আমি আমার নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নীরব ছিলাম। সাহসের অভাবে নীরব ছিলাম।নিজের স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে পারিনি। এ ব্যর্থতার দায় সম্পূর্ণ আমার।গা বাঁচিয়ে একটা দায়সারা বক্তব্য প্রদান করার চেয়ে আমার নীরব থাকাকে শ্রেয় মনে হয়েছে। আজকে যখন হাজার হাজার মানুষ নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে শহীদ মিনারে জড়ো হল ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদে, তখন নিজের বাসায় বসে নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবাটাই হাস্যকর।
কারো কোনো সাহায্য সহযোগীতা ছাড়া আপনারা সাধারণ মানুষ যারা এত সুন্দর করে দেশ সংস্কারের কাজ করে যাচ্ছেন তারাই আসল সেলিব্রিটি। আমার মতো স্বার্থপর মানুষদের অনেক কিছু শেখার আছে আপনাদের থেকে। হয়ত একদিন আপনাদের মতো আমারও সাহস হবে, কোনো কিছু লিখতে বলতে গিয়ে দশ বার ভাবতে হবে না। এখনও অনেক কথা লিখতে গিয়ে বারবার মুছে ফেলছি। আপনাদের মনে কষ্ট দিয়েছি। আমি ক্ষমাপ্রার্থী।” আর রাত পোহাতেই বাংলাদেশে সেনাবাহিনী সরকার গঠন করার কথা ঘোষণা করলে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের কথা মনে করিয়ে দিলেন তাসনিয়া ফারিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.