Advertisement
Advertisement

Breaking News

বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ওয়ান সেকেন্ড’ এর বদলে ‘হিরো’

কমিউনিস্ট পার্টির ছাড়পত্র না মেলায় ছবি বাতিল শেষ মুহূর্তে।

'Hero' instead of 'One Second' in Berlin Fest
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 15, 2019 9:46 pm
  • Updated:February 15, 2019 9:46 pm

নির্মল ধর:   আজ সন্ধ্যায় বহু প্রত্যাশিত ঝাং ইমোর ‘ওয়ান সেকেন্ড’ ছবিটি সরিয়ে দেখানো হল তাঁরই পুরনো ছবি, ২০০২ সালের ‘হিরো’। অবশ্যই প্রতিযোগিতায় নয়, বাইরে। ছবি সরিয়ে নেওয়ার কারণ ‘যান্ত্রিক’, এটা তো বলতেই হয়। হাস্যকর ‘টেকনিক্যাল’ কারণটা চিনা কর্তৃপক্ষ কখনও স্পষ্ট করে না। যতই প্রভাবশালী হোন না কেন পরিচালক বা প্রযোজক, চিনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রোপাগান্ডা যে কোনও ছবির ছাড়পত্রে শেষ কথা বলে। প্রতিটি চিনা ছবির শুরুতে একটি ড্রাগনের ছবি দেখানো হয়। ওটিই প্রকৃত ছাড়পত্র। ঝাংয়ের  ‘ওয়ান সেকেন্ড’ কি সেই ছাড়পত্র পেয়েছিল?  চিত্রনাট্যকে প্রাথমিক ছাড়পত্র দিয়েছিল কেউ। কিন্তু ছবি শেষ হওয়ায় ‘গোল্ডেন ড্রাগন’ সিলটি ছবির গায়ে পড়েনি। শোনা যাচ্ছে, ষাটের দশকের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কোনও ঘটনার দৃশ্যায়ন পার্টির পছন্দ হয়নি। ছবিতে নাকি দেখানো হয়েছে, এক জেল পালানো কয়েদি আর এক অনাথ তরুণী সাংস্কৃতিক বিপ্লবের একটি নিউজ ফুটেজ সংগ্রহ করে পালায়। ওই নিউজ ফুটেজটিই ‘ওয়ান সেকেন্ড’। গোলযোগ ওখানেই।

অবশ্য ঝাং ইমোর সঙ্গে চিনা পার্টি ও সেন্সর বোর্ডের  সম্পর্ক বহুদিন ধরেই ‘মধুর’ নয়। নব্বইয়ের দশকে ওঁর ‘টু লিভ’ ছবি কান উৎসবে পুরস্কার জেতার পরও নিষিদ্ধ হয় স্বদেশে। এবং ঝাংকে একসময়ে, ষাটের দশকে মাও সে তুং-এর শিক্ষা শিবিরেও পাঠানো হয়েছিল। ‘হিরো’ ছবিতে তিনি কমিউনিস্ট পার্টি সম্পর্কে সমর্থনের কথাই বলেছিলেন। ২০১৩এ অলিম্পিক খেলার উপর একটি তথ্যচিত্র বানিয়ে ঝাং আবার ফিরে আসেন মূল ধারায়। সেই সত্তরের দশকে চিন সরকারে ‘এক পরিবার এক সন্তান’ নীতির সমালোচনা করেছিলেন ঝাং। সেজন্য তাঁকে এক বিলিয়ন ডলার আর্থিক জরিমানাও দিতে হয়েছিল। ‘ওয়ান সেকেন্ড’এর আগের ছবি ‘শ্যাডো’ দেখানো হয়েছিল ভেনিস এবং টোরেন্টো উৎসবে। সেটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। এখানকার উৎসব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘ওয়ান সেকেন্ড’এর আগে ‘বেটার ডেজ’ নামে একটি চিনা ছবিও সেন্সরশিপের কারণে উৎসব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে সেটা উৎসব শুরুর আগেই।‘ওয়ান সেকেন্ড’ কে সরানো হলো প্রদর্শনীর মাত্র দু দিন আগে। ঘটনাটি এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

Advertisement

উৎসবের ‘প্যানোরামা’ বিভাগে দেখানো হল আরেক চিনা ছবি লোউ ইয়ের ‘দ্য শ্যাডো প্লে।’ দুর্নীতি, খুন, জখম, রাহাজানির বিরুদ্ধে কথা বলায় তাঁর এই ছবিকেও দু বছর ছাড়পত্র দেয়নি পার্টি। কনফারেন্সে লোউ ইয়ে বলছিলেন, ‘ এমন ঝামেলায় আমি আগে কখনও পড়িনি। এ জীবনে সেন্সরশিপ নিয়ে যে এত ঝক্কি পোহাতে হবে, জানতাম না। গত দশ বছর ধরেই পার্টির বিরুদ্ধে আমি বলছি। এখনও অবস্থার কোনও বদল ঘটল না। এককথায় বলি, সিনেমাকে সেন্সরের শিকল থেকে মুক্ত করা হোক।’ কিন্তু মুখে পার্টি যতই স্বাধীনতার জানলা খুলে দেওয়ার কথা বলুক না কেন, কাজে তেমনটা করছে না, ঝাং ইমোর  ‘ওয়ান সেকেন্ড’ কে শেষমুহূর্তে সরিয়ে নেওয়ায় সেটাই প্রমাণিত হল। ফলে হল কী, আগামী সময়ে বিদেশের উৎসব চিনা ছবি গ্রহণের ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্ক হয়ে যাবে। যা চিনের সিনেমার আন্তর্জাতিক সম্মানের পরিপন্থী। মজার ঘটনা  এই – বার্লিন উৎসবে এই ঝাং ইমোই তাঁর ‘রেড সরঘুম’ ছবির জন্য সোনার ভাল্লুক হাতে নিয়ে তাঁর আন্তর্জাতিক যাত্রা শুরু করেছিলেন। আজ এখানেই তাঁর  মুখের  উপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হল। করল স্বদেশ চিন।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ