Advertisement
Advertisement
Iman Chakraborty Poila Baisakh 2025

‘পয়লা বৈশাখে বাবা আর বরের সঙ্গে ঝগড়া করি না, খুব লক্ষ্মীমন্ত হয়েই থাকি’

নববর্ষের পরিকল্পনা নিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ডিজিটালে লিখলেন ইমন চক্রবর্তী।

Iman Chakraborty shares her Poila Baisakh plan
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:April 14, 2025 7:22 pm
  • Updated:April 14, 2025 8:03 pm  

বাঙালির পয়লা বৈশাখ মানেই নস্ট্যালজিয়া। পোশাক থেকে খাবার, আড্ডা থেকে হালখাতা, সবেতেই থাকে বাঙালিয়ানার ছাপ। তবে আজকের বাঙালি কি ততটাই উন্মুখ থাকে নববর্ষ নিয়ে? অতীত স্মৃতিচারণা এবং এবারের নববর্ষের পরিকল্পনা নিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ডিজিটালে লিখলেন ইমন চক্রবর্তী

পয়লা বৈশাখের স্মৃতি সততই আমার কাছে সুখের এবং সুন্দর। প্রতিটা বাঙালি বাড়িতে নববর্ষ উদযাপন যেমন স্পেশাল, আমার বাড়িও এক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম নয়। যেহেতু একান্নবর্তী পরিবারে বেড়ে ওঠা, তাই ছোট থেকেই একটা রেওয়াজ লক্ষ্য করেছি, বছরের পয়লা দিনে স্নান সেরে নতুন জামাকাপড় পরে প্রথমেই বাড়ির বড়দের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করত ছোটরা। আর পয়লা বৈশাখে ভুরিভোজের মেনুতে হলুদ পোলাও, পাঠার মাংস ছিল আমাদের বাড়িতে মাস্ট। বাবার সঙ্গে হাত ধরে সব ভাইবোনেরা একসঙ্গে হালখাতা করতে যেতাম। এক্ষেত্রে এক মজার স্মৃতি রয়েছে। দোকান থেকে ঠান্ডা পানীয় হিসেবে যে ‘স্কোয়াস’ দেওয়া হত। সেসব খেয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে কমলা রঙে জিভ রাঙিয়ে ফিরতাম আমরা। আর কে, কতগুলো মিষ্টি আর ক্যালেন্ডার পেয়েছে, সেই নিয়ে রীতিমতো আমাদের প্রতিযোগিতা চলত।

Advertisement

সময়ের সঙ্গে বর্তমানে উদযাপনের ধারাও বদলেছে। পয়লা বৈশাখ। সেপ্রেক্ষিতেই একটা বিষয় উত্থাপন করি, বাবা-মায়েদের সন্তান লালনের ক্ষেত্রে বাঙালিয়ানা আজকাল অনেকটাই কমে গিয়েছে। এর ব্যতিক্রমও অবশ্য আছে বইকী! এই প্রজন্মের বাচ্চাদের আসলে আমি দোষ দেব না। বাড়ির গুরুজনরা যা শেখাচ্ছেন, তারা সেটাই শিখছে। আমার মনে হয়, অভিভাবকদের আরও বেশি করে বাংলা ভাষার দিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আমার খুব খারাপ লাগে, এই পয়লা বৈশাখ থেকে ‘একলা বৈশাখ’ বলার প্রবণতাটা। কিংবা বিকৃত বাংলা বলার অভ্যেসটা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলিতে যান কিংবা আমাদের দেশেরই বিভিন্ন প্রদেশে যদি দেখি, এই যেমন আমি এখন ইন্দোরে শো করতে এসেছি, এখানেও সমস্ত হোর্ডিংয়ে আগে নিজেদের ভাষা জ্বলজ্বল করছে, তারপর সেটা ইংরেজি হরফে লেখা। তাই আমার মনে হয়, বাংলা ভাষার তাৎপর্য শেখানোর বিষয়টা পরিবারের তরফেই শুরু হওয়া উচিত।

নববর্ষ মানে নতুন পাটভাঙা শাড়ি। পয়লা বৈশাখে জামাকাপড় কিনতে যেতে আমার যে কী ভালো লাগে। সাধারণত চৈত্র সেলের বাজারেই নববর্ষের শপিং করে ফেলি। এই তো কয়েকদিন আগেই গড়িয়াহাটে চৈত্র সেলে এমনিই ক’টা জামাকাপড় কিনে ফেললাম। এবছর দুর্ভাগ্যবশত পয়লা বৈশাখের জন্য সেভাবে কেনাকাটি হয়নি। আমার আসলে পর পর কাজের বেশ চাপ যাচ্ছে। এবারের পয়লা বৈশাখেও হাওড়াতে শো রয়েছে। যদিও সারাবছরই বাবা আর বরের জন্য কিছু না কিছু কিনতেই থাকি। এছাড়াও বাড়ির সকলের জন্যই কেনা হয়। তবে পয়লা বৈশাখ বরাবরই স্পেশাল। আমার বিশ্বাস, এদিন যেটা হয়, সেটা সারাবছর চলে। সেজন্য এদিন বর কিংবা বাবার সঙ্গে ‘নো’ ঝগড়া! বছরের পয়লা দিনটা খুব লক্ষ্মীমন্ত হয়েই থাকি।

এই দিনটিতে আমার বাপের বাড়িতে হলুদ মিষ্টি পোলাও আর পাঁঠার মাংস যদিও মাস্ট! তবে এবার অবশ্য একটু ঘরোয়া খাবারেই বৈশাখী উদযাপন হবে আমাদের। কারণ বাবাকে সদ্য হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসেছি, তাই ওঁর এসব খাওয়া বারণ। তাছাড়া এই গরমে খাওয়ার জন্য আমার কালো জিরে ফোড়ন দিয়ে মুসুরির ডাল আর ন্যাতা আলুভাজা খুব পছন্দের। আর একটা ডিম সেদ্ধ। ব্যস! সেটা নববর্ষ হোক বা যে কোনও দিন, আমার কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ খাবার। প্রতিবারের মতো এবারও পয়লা বৈশাখে প্রচুর নেমন্তন্ন পাই, কিন্তু আমরা কোথাও যাই না। আর এবার তো শো-ই রয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement