সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চব্বিশ সালে নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের পর মালদ্বীপের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিল ভারত! প্রর্যটক হারানোর ভয়ে ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলগুলিকে ‘নর্দমা’ বলে কটুক্তি করা শুরু করে মহম্মদ মুইজ্জুর মন্ত্রীসভার একাংশ। ঠিক সেসময়েই নেটদুনিয়ায় ট্রেন্ডিং হয় বয়কট মালদ্বীপ। ফি বছর ভারতের বহু পর্যটক সেখানে ছুটি কাটাতে যান। তাই লাক্ষাদ্বীপে পর্যটন শিল্পের বাড়বাড়ন্ত হলে ‘ভাতে মারা পড়ার’ ভয়ে ভারতবিরোধী কথা বলা শুরু করে মালদ্বীপ। তবে নড়বড়ে অর্থনৈতিক কাঠামোর জেরে সেই ‘বিদ্বেষ’ খুব বেশি দিন টেকেনি। বিরোধিতার সুর মিত্রতায় বদলে গিয়েছে গত বছরই। বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতের গুরুত্ব হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। এবার পর্যটক টানতে বিশ্বমঞ্চে সেই ভারতীয় তারকামুখের দ্বারস্থই হতে হল মালদ্বীপকে। সংশ্লিষ্ট দেশের নয়া গ্লোবাল ট্যুরিজম অ্যাম্বাসাডর হিসেবে ঘোষণা করা হল ক্যাটরিনা কাইফকে।
চরম আর্থিক সংকটে ধুঁকতে থাকা মালদ্বীপকে গতবছরই ৩০০০ কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা করেছে ভারত। সেইসময় থেকেই মুইজ্জুর সুর নরম হয়েছে। গতবছর অক্টোবর মাসে ভারত সফরেও এসেছেন মালদ্বীপ প্রেসিডেন্ট। বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর ও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেন মুইজ্জু। সেসময়েই মোদিকে মালদ্বীপ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, আগামী মাসে জুলাইতে মোদি যাচ্ছেন সেদেশে। ঠিক তার প্রাক্কালেই বলিউড তারকা ক্যাটরিনা কাইফকে বিশ্বমঞ্চে মালদ্বীপের পর্যটন দূত হিসেবে ঘোষণাকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশিষ্টমহল। অভিনেত্রী অবশ্য মালদ্বীপের পর্যটন দূত হতে পেরে ভীষণই উচ্ছ্বসিত। কী মন্তব্য ক্যাটরিনার?
এক বিবৃতি জারি করে ক্যাটরিনা কাইফ জানিয়েছেন, মালদ্বীপের সৌন্দর্য এবং বিলাসবহুল পর্যটন শিল্পের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে আমি উচ্ছ্বসিত। মালদ্বীপ এমন একটি জায়গা যেখানে সৌন্দর্য আর শান্তির অপরূপ সহাবস্থান রয়েছে। ‘সানি সাইড অফ লাইফ’-এর মুখ হিসেবে নির্বাচিত হতে পেরে আমি সম্মানিত। বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের কাছে এখানকার আকর্ষণীয় লোকেশন এবং ভ্রমণ অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে উদগ্রীব হয়ে রয়েছি। উল্লেখ্য, ক্যাটরিনা বরাবরই বিজ্ঞাপনী দূত হিসেবে বেশ জনপ্রিয়।
প্রসঙ্গত ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের পর থেকে তাল কাটে দিল্লি-মালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের। সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। মোদিকে নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেন যুব, তথ্য ও শিল্প মন্ত্রকের দুই মন্ত্রী মালশা শরীফ এবং মরিয়ম শিউনা-সহ আর এক মন্ত্রী আবদুল্লাহ মাহজুম মজিদ। গোটা ভারত জুড়ে শুরু হয় ‘বয়কট মালদ্বীপ’। এই পরিস্থিতিতে চাপ বাড়তে থাকে মালদ্বীপের উপরে। শুধু তাই নয়, মাঝে মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্যও বলেছিল সে দেশের সরকার। সব মিলিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে যথেষ্ট ফাটল তৈরি হয়। তবে ভারত বিরোধী মনোভাবে যে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি তা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারার পর তা বেশ বুঝতে পারেন মহম্মদ মুইজ্জু। এর পরই ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মেটাতে তৎপর হন মুইজ্জু। এবার বলিউড অভিনেত্রীকে পর্যটন দূত হিসেবে ঘোষণা করলেন মালদ্বীপ প্রেসিডেন্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.