Advertisement
Advertisement

Breaking News

ঋতাভরী চক্রবর্তী

‘বাংলা ওয়েব সিরিজে কাজ করতে চাই না’, কেন একথা বললেন ঋতাভরী?

একান্ত সাক্ষাৎকারে জীবনের নানা খুঁটিনাটি শেয়ার করলেন অভিনেত্রী৷

Ritabhari Chakraborty's exclusive interview with Sangbad Pratidin
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:June 14, 2019 9:42 pm
  • Updated:June 14, 2019 9:57 pm

নতুন ছবির সাফল্য। তাঁকে নিয়ে লোকজনের কৌতূহল। সব প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দিলেন ঋতাভরী চক্রবর্তী। শুনলেন শম্পালী মৌলিক

এ কী, মোবাইলে নিজের নতুন ছবির (শেষ থেকে শুরু) গান লাগাননি? এখনও সেই নরমাল রিং হচ্ছে…

Advertisement

আগে একটা গান তো ছিল। সেটা উড়ে গিয়েছে। আর আমি ফোন নিয়ে যথেষ্ট হ্যান্ডিক্যাপ্‌ড। এটা-সেটা পারি না।

Advertisement

নাকি গানগুলো অত ভাল লাগেনি?
না, না। তিনটে গানই খুব ভাল লেগেছে। স্পেশালি ‘মন আমার’-টা তো আমি লুপে শুনেই যাচ্ছি।

ফিডব্যাক কেমন আপনার কাছে ‘শেষ থেকে শুরু’র?
দুর্দান্ত। এতটাও হবে ভাবিনি। ‘ওগো বধূ সুন্দরী’-র পর এই আবার প্রপার মাস লেভেলের রিঅ্যাকশন পাচ্ছি। আমাকে জিৎদার সঙ্গে খুব ভাল লেগেছে, সেটা সবাই বলছে। স্টোরিতে জিৎদা আমাকে ভালবাসছে এমন তো নয়, কিন্তু তাও আমরা কাপ্‌ল। এমনিতে আমি টুইটার খুব একটা করি না। জিৎদার প্রোডাকশন থেকে বলা হয়েছে, তাই একটু দেখছি। পাগলের মতো ফিডব্যাক! সকলে বলছে, ‘তোমাদের আবার একসঙ্গে দেখতে চাই।’

টেলিভিশনের ‘ললিতা’-র পর কি আবার এই এত ভাল প্রতিক্রিয়া পেলেন?
না, সেটা বললে মিথ্যে কথা বলা হবে। ‘পরি’, ‘নেকেড’, ‘ফুল ফর লাভ’-সবগুলোরই রেসপন্স খুব ভাল ছিল। কিন্তু রিলিজের দু’দিনের মাথাতেই এতটা ভাবিনি। জিৎদার প্রশংসা দর্শক করবে, সেটা প্রত্যাশিত। কারণ জিৎদা সুপারস্টার। কিন্তু আমার নামেও এত কমেন্ট…। আই অ্যাম হ্যাপি। জিৎদা-কোয়েলদি কাজ করে সুপারস্টার। হিট জুটি। গুগল রিভিউ বা বুক মাই শো-তে জিৎ-এর পরেই ঋতাভরীর নামটা দেখে আমি প্রচণ্ড আপ্লুত। আই হ্যাভ নো ওয়ার্ডস।

[আরও পড়ুন: হবু কনে নুসরতকে আইবুড়ো ভাত খাওয়ালেন মিমি, কী কী ছিল মেনুতে?]

কোয়েলের মতো না কি তার থেকেও ভাল ফিডব্যাক পাচ্ছেন?
সেটা আমি কী করে বলব! আমার চোখে তো ‘ঋতাভরী’-টা পড়বেই, ওটা আমার নাম বলে। ওরকম ব্যাপার নয়। জিৎ-কোয়েল জুটির দারুণ চাহিদা, লোকে ভালবাসে। সেখানে জিৎ-কোয়েলদির পারফরম্যান্স নিয়ে যেমন কথা বলছে, তেমন আমার কাজ নিয়েও কথা বলছে।

‘পরি’ অনুষ্কা শর্মা, পরমব্রতর সঙ্গে, তারপর অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে ‘ফুল ফর লাভ’-এর পরেও সেকেন্ড লিড করতে ইচ্ছে করেছিল?
আমাকে যেভাবে প্রোজেক্টটা পিচ করা হয়েছিল, আমি তো সেটাকে সেকেন্ড লিড হিসেবে দেখিনি। আপনাদের একটা কনভেনশনাল সেকেন্ড লিড-এর সংজ্ঞা আছে। যার কাছে হিরো শেষ পর্যন্ত যাচ্ছে সেই ফার্স্ট লিড। আমার কাছে প্রিয়াংকা চোপড়াও ‘বাজিরাও মস্তানি’-তে সেকেন্ড লিড নয়। হিরোকে না পেলেই সে সেকেন্ড লিড হয়ে যাবে, আমি এমন মনে করি না। এটা আদতে প্রেমের ত্রিকোণ। বাকি দু’টো চরিত্রের মতোই প্রয়োজনীয় ফরজানার চরিত্রটা। আমি রিয়্যাল লাইফে কোয়েলদির করা ‘পূজারিনি’ চরিত্রটার মতো, মিষ্টি-ভালমানুষ টাইপের। আমি একেবারেই ‘ফরজানা’র মতো না। সে বেশ বোল্ড মুখের ওপর কথা বলে দেয়। নিজের ভালবাসার জন্য হাতে বন্দুক তুলে নিতেও দ্বিধাগ্রস্ত নয়। এটা তো আমি একেবারেই নই। তাই একটা চরিত্র হিসেবে ফরজানাকে আমার মোর অ্যাপিলিং মনে হয়েছিল।

প্রোমোশনে আপনার জায়গা নিয়ে খুশি?
ইয়েস অফকোর্স। আই অ্যাম থ্যাঙ্কফুল টু জিৎদা যে, আমাকেও ওরা ইকুয়্যালি প্রোমোট করেছে। কোথাও ওয়ান পার্সেন্ট কম করেনি। ইভেন কোয়েলদি কোনও সময় কোনও প্রোমোশনে এমনটা বুঝতে দেয়নি যে, কোয়েলদি সিনিয়র অ্যাক্টর। ভীষণ সাপোর্টিভ। এতদিন একসঙ্গে প্রোমোশন করেছি, গাড়িতে একসঙ্গে ট্র‌্যাভেল করেছি, কালকে (গত শুক্রবার) থেকে আমি সবাইকে খুব মিস করছি। জিতের সঙ্গে ওই থান্ডারটা হঠাৎ করে স্টপ হয়ে গিয়েছে মনে হচ্ছে। মিস করছি।

এই বছরটা আপনার বেশ ভাল যাচ্ছে মনে হচ্ছে। অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে একটা কাজ করলেন, আরও একটা তো করতে চলেছেন?
এটা আমাদের প্রোডাকশনের ছবি, অভিনয় করছি না। ছবিটার নাম ‘বাঁসুরি’। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, অনুরাগ কাশ্যপ আছে। হরি বিশ্বনাথনের ছবি। আমি আর মা ওটা প্রোডিউস করছি। আরও একটা শর্ট ফিল্ম প্রোডিউস করছি, যেটা লার্জ শর্ট ফিল্মের সঙ্গেই। সৃজিত ডিরেক্ট করছে। আমি এটাতেও অভিনয় করছি না। এটা সৃজিতের গল্প, সৃজিতের স্ক্রিপ্ট, ওই বানাবে।

আপনাকে নিতে বলেননি?
না, এখানে কোনও নারী চরিত্রই নেই। জোর করে তাহলে আমাকে মেয়ে পুলিশ সাজতে হবে (হাসি)। কাশ্মীর, টেররিস্ট এসব নিয়েই গল্প। আমি এবারে এমন কনটেন্ট প্রোডিউস করতে চাই যেটাতে আমি অভিনয় করব না।

কেন সবার ধারণা হয়ে গিয়েছে যে, যা প্রোডিউস করবেন, তাতেই অভিনয় করবেন তাই?
(হাসি)…হ্যাঁ, সবার এরকম ধারণা হয়েছে। নিজেকে ছাড়া বোধহয় প্রোডিউস করতে রাজি নই, আসলে সেরকমটা নয়। ‘নেকেড’, ‘ফুল ফর লাভ’, আয়ুষ্মান-এর সঙ্গে গানটা, এরপরে যে ছবিটা আসছে রজত কাপুরের সঙ্গে- সব মিলিয়ে এমন ধারণা হয়েছে। কারণ সবক’টাতেই আমি আছি। এবারে অনেকগুলো কনটেন্ট বানাচ্ছি, যেখানে আমি নেই। আরও কিছু কাজ আসবে, যেগুলোর একটাতেও আমি নেই। শুধু প্রোডিউস করব, দর্শকের কাছে পৌঁছে দেব ছবিগুলো এবং যথেষ্ট টাকা রোজগার করতে চাই। এটাই পরিকল্পনা।


এই যে আপনার টাকা রোজগার করা এবং ইনস্টাগ্রামে দারুণ সব ছবি দেওয়া, আপনি নিশ্চয়ই জানেন, আড়ালে লোকজন কী বলাবলি করে?
হ্যাঁ, জানি। তাতে আমার কিছু এসে যায় না। লোকের কথায় কান দিতে গেলে তো আমার রোজগার করা হবে না। আমার নিজের অনেক লক্ষ্য আছে।
অনেকেরই প্রথম জিজ্ঞাসা হচ্ছে ঋতাভরী এত বেড়ায় কী করে আর এত টাকা কীভাবে করল?
(হাসি) যারা বলে, তারা একটু বুদ্ধি লাগালে তারাও টাকা করে ফেলতে পারবে। খুব কঠিন কাজ নয় টাকা করাটা। আমার জাস্ট কিছু এসে যায় না। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, আমি বেশ সচ্ছল একটা পরিবার থেকে এসেছি। সে অনেকেই আসে। অথচ আমার দামি জামাকাপড় পরা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাছাড়া আমি নিজে ভাল রোজগার করি। অনেককেই ঘরসংসার চালানোর দায়িত্ব নিতে হয় রোজগার করে। আমার ক্ষেত্রে কিন্তু তা নয়। রোজগার করতেই হবে বলে, অভিনয়ে আসিনি আমি। চিরকালই আমি আমার বাড়ির রাজকন্যা। আমার ব্যবসার মাথা খুব ভাল, আমি নিজেই বলছি। ১টাকে কী রে ১৫ করতে হয় আমি জানি। আর আমি ব্যবসার লাভটাকে শুধু টাকার অঙ্কে দেখি না। ভাবি যে, কতটা লোকের কাছে পৌঁছল এবং আমার সিভি কেমন বাড়ল, প্রোফাইল বাড়ল কতটা। আমি যে এনজিওটা চালাই, যে স্কুলটার সঙ্গে যুক্ত, ‘আইডিয়াল স্কুল ফর দ্য ডেফ’, ওদের সাপোর্টের জন্য প্রতি মাসে ফান্ডিং দিই। আরও ফান্ডিং আনার চেষ্টা করছি। শুধু আমার টাকায় তো হবে না। নাইন-টেন-টা যাতে চালু করতে পারি, সে জন্য স্কিলড টিচার প্রয়োজন। আমি শুধু ঘুরে বেড়াই না, একজন মেয়ে হিসেবে, একজন মানুষ হিসেবে, বন্ধু হিসেবে যে দায়িত্বগুলো আছে, আমার চারপাশের লোকজনের প্রতি সেইগুলো আমি আর্থিকভাবেও পালন করি। শুধুই মানসিকভাবে পাশে থাকি এমন নয়।

যেটা হয়তো অনেকেই জানেন না।
আমি তো ইন্ডাস্ট্রিতে অত মিশিও না। বাকিদের মতো। আর সময়ও পাই না। এমন নয় যে, মিশতে চাই না। আমি খুব হুজ্জুতি করতে ভালবাসি। এতদিন হয়ে গিয়েছে। সবাইকেই তো চিনি। কেউ তো স্ট্রেঞ্জার নয়। আর সবাই আমাকেও চেনে। কিন্তু এই বম্বে-কলকাতা করছি। বেশি খাটতে গিয়ে অসুস্থও হয়ে পড়ি।

মিশলে আরও একটু ভাল হত নাকি? আরেকটু বেশি বাংলা ছবিতে কাজ পেতেন না?
আমার মনে হয় না। আমি বেশি কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে এখনও এগোচ্ছি না। আমি কোয়ালিটি কাজ করতে চাই। একটা ছবি করলেও সবাই যেন সেটা নিয়ে কথাবার্তা বলে। লোকের যেন মাথা ঘুরে যায়- যে কী করে করল? আমি সেটাই চাই। আমি যে সময়টুকু দেব, সেটা ব্যবসায়ীর মানসিকতা থেকে বলছি, আই উইল রিপ দ্যাট। প্রচুর বীজ ছড়িয়ে কিছু মাঝারি গাছ হল, তা নয়। আমি চাই গাছটাই এমন উঠবে, সেটার ফল আমি চোদ্দো পুরুষ অবধি খাব। কত ছবির অফার তো নিইনি।

[আরও পড়ুন: ‘কৃষ্ণকলি’ শেষ হয়ে যাক ভাবতেই চাই না: তিয়াশা ]

কী ভেবে নেননি?
ছবি নির্বাচনের সময় প্রথমে দেখি চরিত্রটা আমার কতটা ভাল লাগল। দ্বিতীয়ত, চরিত্রটা যদি ভালও লাগে, কত লোকের কাছে চরিত্রটা পৌঁছবে। বেসিকালি দেখি ভাল প্রোডাকশন কোম্পানি বা ডিস্ট্রিবিউটর সেটা দেখছে কি না। যাতে লোকের কাছে ছবিটা পৌঁছনো নিশ্চিত হয়। কারণ, আমার সঙ্গে এটা হয়েছে। সেটা আর্টিস্টের জন্য ভীষণ কষ্টের। তৃতীয়ত, আমি এটার থেকে কী পাব? টাকা না, নাম? বাংলা ছবিতে তো প্রচুর টাকা পাওয়া যায় না আমরা জানি। কিন্তু জানি, এই ছবিটার থেকে যা নাম করব, সেটার থেকে যা বিজ্ঞাপন ইত্যাদি পাব, প্রোডিউসার, অভিনেত্রী, মডেল হিসেবে কাজ করব, যে টাকাটা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এভাবেই ভাবি। এটাই বেসিক বিজনেস। ইট ইজ কল্‌ড শো বিজনেস। এটা আমার কাছে পরিষ্কার।

মুম্বইয়ে আর কোনও অফার?
অবশ্যই আছে। আগে রজত কাপুরের সঙ্গে যে ছবিটা আমি প্রোডিউস করেছি, হিন্দি আর ইংরেজিতে, এরপরেই আসবে। আমার হাতে এই মুহূর্তে আরও দুটো হিন্দি ছবি আছে। ফ্লোরে না গিয়ে কোনও কথা বলতে চাই না। তার মধ্যে একটা হরর ফিল্ম-ও আছে। ‘খেলেছি আজগুবি’ রিলিজ করবে। এখন সময়টা সত্যি ভাল যাচ্ছে। বাংলা-হিন্দি দু’দিকেই। সাউথের একটা মালয়ালি ছবিও পেলাম। কিন্তু করিনি। নায়কের কিছু কনট্রোভার্সির কারণে। মেনস্ট্রিম সাউথের ছবি করব, কিন্তু নামটা যেন খারাপ না হয়। কারণ, আমি নিজের ইমেজ খারাপ করতে চাই না কিছুতেই। আমি অনেক বিষয়ে বক্তব্য রাখি, এতটুকু ডিপ্লোম্যাটিক নই। নিজের ইমেজটাকে নষ্ট হতে দেব না। নাম-ই আসল পাওয়ার।

ওয়েবের অফার বাংলায়?
বাংলায় ওয়েব করতে চাই না, এই মুহূর্তে। হিন্দিতেও যা সিরিজের অফার পেয়েছি, আমি নিইনি। এত কিছু হচ্ছে কে দেখছে আমরা কী জানি? নেটফ্লিক্স আর আমাজন-ই কিন্তু দেখছে। তাই একটু দেখে নিতে চাই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ