সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দু পরিবারের মেয়ে হয়ে জাহির ইকবালকে বিয়ে করার পর থেকেই একাধিকবার বিতর্কের শিরোনামে ঠাঁই পেয়েছেন শত্রুঘ্নকন্যা সোনাক্ষী সিনহাকে। শোনা যায়, ভিনধর্মী বিয়ের কারণেই নাকি তাঁর পরিবারের অন্দরেও অশান্তি হয়েছে! অভিনেত্রীর দুই ভাই লব-কুশ তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠানেও অংশ নেননি। তবে নিন্দুক, নেটপাড়ার নীতিপুলিশদের রক্তচক্ষুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ‘মিঞা-বিবি’ দিব্যি সুখের ঘরকন্না করছেন। তাই তো পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিহামলায় (Pahalgam Terror Attack) ‘ধর্মের ধ্বজা’ উড়িয়ে নিরীহ হিন্দু পর্যটকদের নির্বিচারে হত্যা করায় যখন সাম্প্রদায়িক বিভাজন নীতিতে সরগরম নেটপাড়া, তখন সংশ্লিষ্ট ‘ইস্যু’তে সরব হলেন সোনাক্ষী সিনহা (Sonakshi Sinha)।
ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির মুখপাত্র অনীশ গাওয়ান্ডের পোস্ট শেয়ার করে সোনাক্ষী চোখে আঙুল দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের বীজ পুঁতে দেওয়া হচ্ছে ভারতীয়দের মনে।’ কী লেখা ওই পোস্টে? অভিনেত্রীর শেয়ার করা পোস্টে দাবি করা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদীদের লক্ষ্য শুধু নিরীহ মানুষদের হত্যা করা ছিল না, বরং তাদের আসল উদ্দেশ্য ছিল, দেশবাসীর মনে অবিশ্বাস তৈরি করা। ভারতীয় হিন্দুদের ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঠেলে দেওয়া। দুই সম্প্রদায়ের প্রতিবেশী এবং বন্ধুদের মধ্যে অবিশ্বাসের বিষ ছড়িয়ে দেওয়া। এটা একেবারেই ইচ্ছাকৃত ক্যাম্পেন। পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় ভারতীয় হিসেবে শোক করার পরিবর্তে, আমাদের হিন্দু হিসেবে শোকপ্রকাশ করতে বলা হচ্ছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পরিবর্তে সম্প্রীতির মেরুদণ্ডকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু দেশবাসীর এই মনোকষ্টকে হাতিয়ার করে এক ভারতীয়কে অন্য ভারতীয়ের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দেওয়ার এই প্রবণতা ক্ষমার অযোগ্য। এমন মর্মে পোস্ট় শেয়ার করে দেশবাসীর প্রতি সোনাক্ষী সিনহার (Sonakshi Sinha) আর্জি, দয়া করে বিভাজননীতি ছড়িয়ে দেওয়া এই মানুষগুলোকে জিততে দেবেন না। শত্রুঘ্নকন্যার সুরেই সুর মেলালেন শাহিদ কাপুরের ভাই ইশান খট্টর (Ishaan Khatter)।
অভিনেতার মন্তব্য, “পহেলগাঁও সন্ত্রাসে ইচ্ছে করে যে হিন্দুদের টার্গেট করা হয়েছিল, সেটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। তবে এর একটা দীর্ঘ বেদনাদায়ক ইতিহাস রয়েছে। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বলপূর্বক মাতৃভূমি থেকে অত্যাচার করে বের করে দেওয়া এবং অমরনাথ যাত্রীদের উপর আক্রমণ, সেকথাই বলে। কিন্তু তাই বলে এই যন্ত্রণাকে হাতিয়ার করে ভারতীয় হিন্দুদের ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর বিষয়টা মেনে নেওয়া যায় না। এটা ক্ষমার অযোগ্য। আর এখানেই সন্ত্রাসীদের চূড়ান্ত জয়। এবং আমাদের অবশ্যই উচিত সেদিকে নজর রাখা, ওরা যাতে জিততে না পারে। ওদের পাতা ফাঁদে পা দেবেন না”, আর্জি ইশান খট্টরের। এরপরই মাস দুয়েক আগের নিজের কাশ্মীর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন অভিনেতা। ইশান বলছেন, “মাত্র দু’ মাস আগেই পহেলগাঁওতে ছিলাম। সেখানকার মানুষদের প্রতি বরাবর একটা টান অনুভব করেছি। কত সৎ, সজ্জন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে ওখানে গিয়ে। এই ভয়াবহ হামলার ঘটনায় ওরা যেরকম ক্ষতির সম্মুখীন হলেন, সেটা ভেবে আমার কষ্ট হচ্ছে। ভুলে গেলে চলবে না যে কাশ্মীর অনেক আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পৃথিবীর স্বর্গ নামে পরিচিত জায়গাটিতে বারবার এরকম কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে সেখানকার মানুষদের মনে ক্ষত সৃষ্টি করা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.