নিরুফা খাতুন: ৬ এপ্রিল ঠাকুরপুকুরের ‘অভিশপ্ত’ কাণ্ডে নয়া মোড়। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে এক ব্যক্তিকে পিষে দেওয়ার অভিযোগে ইতিমধ্যেই পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টোর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয়েছে। বুধবার ফের আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় মূল অভিযুক্ত ভিক্টোকে। সেখানেই তাঁকে পুলিশি হেফাজত থেকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে ভিক্টোকে।
ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে লালবাজারের গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত ৫ এপ্রিল গভীর রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত ‘সাবমেরিনো’র নেশায় ডুবে ছিলেন পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টো। আর তারই ফল ঠাকুরপুকুর বাজারে নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ির ধাক্কা। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক পথচারীর। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ছ’জন। জেরায় ধৃত পরিচালক গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, এতটাই মদ্যপান করেছিলেন যে দিন আর রাতের তফাত বুঝতে পারেননি। মদ্যপ অবস্থায় দিনের বেলায় বাজারের রাস্তা রাতের মতোই ফাঁকা মনে করে গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়েন। পুলিশ সূত্রের খবর, সিদ্ধান্ত গোয়েন্দাদের কাছে দাবি করেন যে, ঠাকুরপুকুর বাজারের রাস্তাটি তাঁর কাছে খুবই পরিচিত। গভীর রাতে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে প্রায়ই যাতায়াত করেন তিনি। কখনও রাত দুটো, আবার রাত তিনটের পরও তিনি ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু অত রাতে ঠাকুরপুকুর বাজার আর জনবহুল থাকে না। সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তা থাকে সম্পূর্ণ ফাঁকা। তাই শর্টকাট করার জন্য ওই বাজারের রাস্তাই ব্যবহার করেন তিনি। তখন ওই বাজারের মধ্যে দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগেও তিনি গাড়ি চালিয়েছেন। কিন্তু ফাঁকা রাস্তায় কোনও সমস্যা হয়নি।
তদন্তে উঠে এসেছে, দুর্ঘটনা যে দিন ঘটেছে তার আগের রাতে প্রথমে দক্ষিণ কলকাতার একটি মলের পানশালায় মদ্যপান করেছিলেন ভিক্টো ওরফে সিদ্ধান্ত দাস। সেখান থেকে জোকায় অভিনেতা আরিয়ানের বাড়িতে গিয়ে ফের মদ্যপান করেন সদলবলে। রাতে পানশালা থেকে আরও এক সঙ্গী তাঁর গাড়িতে উঠেছিলেন। তবে মদ্যপ ভিক্টোকে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাতে দেখে নেমে যান তিনি। ঋ ও শ্রিয়াকেও নেমে আসতে বলেছিলেন সেই সঙ্গী। কিন্তু তাঁরা এতটাই নেশায় বুঁদ ছিলেন যে তাঁদেরও কোনও হুঁশ ছিল না। পুলিশ ওই সঙ্গীকেও তলব করতে চলেছে বলে বিশেষ সূত্রে খবর। এই ঘটনায় পুলিশ ধৃত পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত করছে। এই মামলায় (Thakurpukur Case) গাড়িতে থাকা দুই সহযাত্রীকেও অভিযুক্ত করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। সে জন্য ঘটনার দিন প্রত্যাক্ষদর্শীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে পুলিশ। ঘটনার দিন বাজারে যাঁরা ছিলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সেই প্রত্যক্ষদর্শীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.