Advertisement
Advertisement

গানে যে পাশের বাড়ির মেয়ের কথা বলেছি, তিনি সত্যিই ছিলেন

শুনে নিন সেই নেপথ্য গল্প।

Kabir Suman Unveiled Peeks From The Memories of a maestro: part-5
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 12, 2018 7:07 pm
  • Updated:March 13, 2024 3:13 pm

‘মানবতার দোহাই বন্ধুরা সংগঠিত হন, ভয় পাবেন না।’- নব্বইয়ের কলকাতা আমূল কেঁপে উঠেছিল এ আহ্বানে। বড় ভাঙচুরের সময় ছিল সেটা। বিশ্বায়নের হাওয়ায় ঢুকে পড়ছে অনেক কিছু। ছেড়ে যাচ্ছে আরও অনেক কিছু। গিটার হাতে তবু সেদিন তিনি বলেছিলেন, হাল ছেড়ো না। সেই নাগরিক কবিয়াল পা দিচ্ছেন সত্তরে। জীবনের সাত সমুদ্র পারের কত অভিজ্ঞতা ভিড় করছে। সে সবেরই উদযাপন তাঁর জন্মদিনে, নজরুল মঞ্চে। তার আগে জীবনের সাত দশকের পারে দাঁড়িয়ে নস্ট্যালজিয়ায় ডুব দিলেন কবীর সুমন। সঙ্গী সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল। আসুন পর্বে পর্বে আবিষ্কার করি প্রিয় সুমনকে। আজ পঞ্চম পর্ব

প্রথম পর্ব:  রেডিওর সিগনেচার টিউন শুনলে মনে হত একা চিল উড়ে যাচ্ছে 

Advertisement

দ্বিতীয় পর্ব:  কচ্ছপের কাছে বন্ধুতা শিখেছি, সুকুমারের কাছে জ্যান্ত বাংলা ভাষা

Advertisement

তৃতীয় পর্ব:  সে এক অদ্ভুত মুহূর্ত! মাস্টারমশাই কাঁদছেন, আমারও চোখে জল

চতু্র্থ পর্ব: আমির খাঁ সাহেবের অনুষ্ঠান হলে পোষা কুকুরের মতো ছুটতাম

গানে এই স্মৃতিও উঠে এসেছিল। ছোটবেলার কথা বলতে হলে এটাও বলতে হয়। এটা যে সময়ের ঘটনা তখন আমি ক্লাস টেনে পড়ি। রোম্যান্টিক কিছু কিছু চিন্তা ওই প্রথম জীবনে আসছে। কলকাতায় তখন রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভবনে পড়তাম। লেক রোডে, বাংলা মাধ্যম স্কুল। তো তখন যেখানে থাকতাম, পাশের বাড়িতেই মেয়েটি থাকতেন। আমাদের মধ্যে বেশ একটা মধুর সম্পর্ক হয়েছিল। এক পাড়ায় থাকলে যেটা হয় আর কি, একটা মিষ্টি সম্পর্ক। তখন তো আর সিরিয়াসলি প্রেম-টেম অতশত বুঝিনি। তবে একটা ভাল লাগা ছিল।

রেডিওর সিগনেচার টিউন শুনলে মনে হত একা চিল উড়ে যাচ্ছে  ]

গরমের দুপুর। ওঁদের বাড়িতে একটা হাফ ল্যান্ডিং মতো জায়গা ছিল। সেখানে উনি আসতেন। আর আমি আমাদের ঘরে বসে ওঁকে দেখতে পেতাম। মাঝে একটা ছোট উঠোন। একেবারে মুখোমুখি। খুব কাছাকাছি, দু’জনের মধ্যে দূরত্ব সামান্যই। আমরা দেখতাম একে অপরকে। মেয়েটি আসতেন ওই ল্যান্ডিংটার মতো জায়গায়। আর আমাকে ইশারায় গান গাইতে বলতেন। আমিও খালি গলায় গান ধরতাম। ব্যস, ওইটুকুই। ভারী রোম্যান্টিক ছিল সেই মুহূর্তটুকু। আমার জীবনের প্রথম রোমান্স ওটাই।

কচ্ছপের কাছে বন্ধুতা শিখেছি, সুকুমারের কাছে জ্যান্ত বাংলা ভাষা ]

তারপর আর ওঁর সঙ্গে কখনও দেখা হয়নি। কে কোথায় চলে গিয়েছি তার ঠিক নেই। এমনটা হতে পারে এই গানটা তিনিও শুনেছেন। হয়তো রিলেটও করেছেন। কারণ পাশের বাড়ির মেয়ে যখন বলছি, তখন অনেকটা মিল নিশ্চয়ই পেয়েছেন। কিন্তু কখনও দেখা হয়নি আর। হয়তো সংসারীও হয়েছেন। আমার থেকে বছর চার-পাঁচের ছোট ছিলেন। আমার সত্তর হল মানে ওঁর তো চৌষট্টি কি পঁয়ষট্টি হয়েইছে। কখনও দেখা হয়নি। শুধু স্মৃতিটুকু থেকে গিয়েছে। কী কাণ্ড বলুন তো!

সে এক অদ্ভুত মুহূর্ত! মাস্টারমশাই কাঁদছেন, আমারও চোখে জল ]

রোমান্সের কথা উঠল যখন বলি, বয়স্কদের প্রেমের গানও বোধহয় প্রথম আমিই লিখেছি। তার আগে আর হয়নি। লোডশেডিংয়ের গানে যাঁর কথা বলেছি। সে অবশ্য অনেক পরের কথা। যাঁর কথা বলেছি তিনিও আমার পরম বন্ধু। চিরকাল বন্ধু থাকবেন। একটু বয়স্ক মানুষ। এক সময় একটা ঠেকায় পড়ে একটা ফ্ল্যাটে একা থাকতে বাধ্য হয়েছিলাম। তো এই বন্ধুটি সেখানে আমার থাকার বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন। সারাটাদিন আমি একা ঘরে থাকতাম। আর উনি অফিসফেরতা এসে আমার খাওয়ার বন্দোবস্ত করতেন। একদিন তিনি এসেছেন। ওমনি লোডশেডিং হয়ে গেল। ওই মুহূর্তটাতেই গানটির জন্ম হল। সেও ভারী রোম্যান্টিক মুহূর্ত।

( চলবে )

[ সুমনের জন্মদিনে উদযাপন ‘সত্তরে সুমন’। ১৬ মার্চ, নজরুল মঞ্চে। টিকিটের জন্য যোগাযোগ করুন এখানে– https://goo.gl/vPpqje । ] 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ