Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘বিতর্কিত’ কবিতা লিখে অসমে হিন্দুত্ববাদীদের রোষের মুখে শ্রীজাত

কবির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

Srijato hackled in Assam's Shilchar
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 13, 2019 8:34 am
  • Updated:January 13, 2019 8:43 am

স্টাফ রিপোর্টার: হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণের নিশানায় ফের কবি শ্রীজাত। শনিবার অসমের শিলচরে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের অনুষ্ঠানে গিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের বেনজির বিক্ষোভের মুখে পড়েন কবি। তাঁকে ঘিরে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে একরকম তাণ্ডব চালায় স্বঘোষিত কিছু হিন্দুত্ববাদী। ভাঙচুর করা হয় একটি হোটেল। শেষপর্যন্ত কবিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় অসম পুলিশ। পুলিশি প্রহরায় অসম সরকারের সার্কিট হাউসে কবিকে রাখা হয়েছে। রবিবার সকালের উড়ানে তাঁকে কলকাতায় ফেরানো হবে।

[সমাজের মূল স্রোতে মেশার সুযোগ, কুম্ভমেলায় ‘কিন্নর আখড়া’]

‘এসো বলি’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্বোধন করতে শিলচরে গিয়েছিলেন শ্রীজাত। শহরের পার্ক রোডের রিয়া প্যালেস নামে একটি হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েটে অনুষ্ঠানটি ছিল। সকাল থেকেই ওই অনুষ্ঠানে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছিল শহরের কিছু স্বঘোষিত হিন্দুত্ববাদী। এই কারণে হোটেলের সামনে পুলিশ মোতায়েনও ছিল। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পর জনা সাতেক যুবক উদ্যোক্তাদের জানায়, তারা শ্রীজাতকে কিছু প্রশ্ন করতে চায়। এরা হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সমর্থক বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। শ্রীজাতকে উদ্যোক্তাদের পক্ষে সংবর্ধনা দেওয়ার পরই এই যুবকরা তাঁকে প্রশ্ন করতে শুরু করে। তাদের প্রশ্ন ছিল, শ্রীজাত কেন ফেসবুকে পোস্ট করা তাঁর ‘অভিশাপ’ কবিতায়, ‘কন্ডোম পরানো থাকবে, তোমার ওই ধর্মের ত্রিশূলে…’ এই লাইনটি লিখেছেন? এরপরই উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বচসা বেঁধে যায় যুবকদের। উদ্যোক্তারা বলতে থাকেন, এটা এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জায়গা নয়। প্রাথমিকভাবে যুবকদের হোটেলের বাইরে বের করে দেওয়া হলে বিক্ষোভ চলতে থাকে রাস্তায়। ঢিল মেরে ভাঙা হয় হোটেলের কাচ। হোটেলের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। একদল বিক্ষোভকারী দাবি করতে থাকে শ্রীজাতকে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। সেই সময় রুখে দাঁড়ান বেশ কিছু মহিলা।

Advertisement

[সাড়ে চার বছর দেশে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ, সরকারের সমালোচনায় রাহুল]

সন্ধে সাতটা থেকে শুরু করে রাত প্রায় ন’টা পর্যন্ত এই তাণ্ডব চলতে থাকে। শেষপর্যন্ত বিশাল পুলিশি প্রহরায় ওই হোটেল থেকে শ্রীজাতকে বের করে অসম সরকারের সার্কিট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কবি। তিনি জানান, ঘটনার খবর পেয়েই তাঁকে কলকাতা থেকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোন করেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। মুখ্যমন্ত্রী ফোনে অসম প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেন। পুলিশি প্রহরায় রবিবার সকালেই শ্রীজাতকে শিলচর বিমানবন্দরে আনা হবে। কবি জয় গোস্বামী বলেন, “কবিতা লেখা ছাড়া শ্রীজাত কোনও অপরাধ করেননি। স্বাধীনমনস্ক ব্যক্তি হিসাবে তাঁর মনের কথা লেখার অধিকার আছে। এই ঘটনার নিন্দা করার ভাষা নেই।” নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন বলেন, “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও কাপুরুষোচিত ঘটনা।” প্রসঙ্গত, ত্রিশূল নিয়ে লেখা এই কবিতার জন্য এর আগেও হিন্দুত্ববাদীরা শ্রীজাতকে হুমকি দিয়েছিল।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ