Advertisement
Advertisement

Breaking News

টলিউড

স্বাস্থ্য-শিক্ষা-বাসস্থানের সঙ্গে চাই বাকস্বাধীনতাও, দাবি টালিগঞ্জের স্টুডিও পাড়ার

বাকস্বাধীনতা নিয়ে কী বলছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা?

Tollywood actor-actress of demands freedom of speech
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:May 18, 2019 9:19 am
  • Updated:May 18, 2019 9:19 am

রিংকি দাস ভট্টাচার্য, টালিগঞ্জ: নাসিরুদ্দিন শাহ থেকে আমির খান। শ্রীজাত থেকে গৌরী লঙ্কেশ, সংকীর্ণতা-ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে মুখ খুললে হেনস্তা তো বটেই, প্রাণও দিতে হয়েছে কিছু অভিনেতা, কবি,সাহিত্যিক, সাংবাদিককে। শিল্পী সত্তা বিপন্ন হলেও সেই বাকস্বাধীনতাকেই ফিরে পেতে চাইছে টালিগঞ্জের স্টুডিওপাড়া। রাজ্যে লোকসভা ভোটগ্রহণের অন্তিম পর্যায়ের মুখে বাংলা সিনেমার অভিনেতা-কলাকুশলীদের বড় অংশের দাবি, সত্য যতই অপ্রিয় হোক, তাকে প্রকাশ্যে পেশ করা শিল্পীদের সামাজিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যারাই ক্ষমতায় আসুক, শিল্পীদের সেই স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করতে হবে।

[আরও পড়ুন:  দুর্দান্ত ফর্মে কপিল শর্মা, অনন্য সম্মানে ভূষিত হলেন কমেডিয়ান]

Advertisement

সেই হিসাবে দেখতে গেলে রিল লাইফ নয়, রিয়েল লাইফেও তাঁরা বাকস্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করছেন। বলছেন, “সিনেমায় দুর্নীতি বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে নায়ক যখন গলা ফাটায়, তখন সিনেমা হলে বিস্তর হাততালি পড়ে। বাস্তবেও তা হবে না কেন?” এবং এই পরিস্থিতিতে শুধু শিল্পীমহল নয়, জনগণের কাছে তাঁদের আবেদন, এবারের নির্বাচনে তারা যেন এমন একটি সরকার নির্বাচন করে, যারা দেশের সংবিধানকে শ্রদ্ধা করবে। সমস্ত রকম সেন্সরশিপ থেকে যেন অব্যাহতি পাওয়া যায় আর বাকস্বাধীনতা যাতে লঙ্ঘিত না হয়। কারণ, দেশের সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে এই নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি।

Advertisement

যেমন শ্রীজাত। সম্প্রতি, শিলচরে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে তাঁর কবিতার একটি লাইন নিয়ে প্রশ্ন তোলে এক রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। এরপরই হামলার মুখে পড়তে হয় শিল্পীকে। অভিনেতা শুভ্রজিৎ দত্তর কথায়, “স্বাস্থ্য-শিক্ষা-বাসস্থানের পাশাপাশি বাকস্বাধীনতা জরুরি। ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশ এ বিশ্বে আর দুটো নেই। কিন্তু, গত কয়েক বছরে বারবার শিল্পীদের বাকস্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু, স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে গণতন্ত্র রক্ষার দায় আমাদেরও থেকে যায়।” তাঁর প্রশ্ন, যাঁদের হাত ধরে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে, তাঁরা কি এমন দেশ চেয়েছিলেন?” শিল্পী শঙ্খ ঘোষের কবিতার উদ্ধৃতি টেনে তাঁর মন্তব্য, “মতান্তর হতেই পারে, কিন্তু মনান্তর নয়।” মাসখানেক আগে মুম্বইয়ে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট না  দেওয়ার আবেদন জানান শতাধিক চিত্রপরিচালক। তাঁদের স্লোগান ছিল, ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ (সেভ ডেমোক্রেসি)। তার কিছুদিন পর ৬০০ জন শিল্পীও একথা বলেন। বিবৃতিতে শিল্পীরা বলেন, “ভালবাসা, সহানুভূতি, সাম্য ও সামাজিক বিচারবোধকে গুরুত্ব দিয়ে ভোট দেওয়া উচিত।” এই শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন নাসিরউদ্দিন শাহ, রত্না পাঠক, অমল পালেকর, অনুরাগ কাশ্যপ, কঙ্কনা সেনশর্মা, লিলেট দুবে ও মানব কউলের মতো ব্যক্তিত্ব।

বলিউডের শিল্পীদের সেই প্রতিবাদের হাওয়া এবার এসে লেগেছে এ বঙ্গেও। এ রাজ্যের বুদ্ধিজীবীরাও সেই দলে নাম লিখিয়েছেন। বাংলার শিল্পীরা এক বিবৃতিতে আবেদন জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার স্বার্থে এবার বিজেপির বিরুদ্ধে যেন জনগণ ভোট দেন। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, দেশজুড়ে যে অসহিষ্ণুতা, ধর্মান্ধতা ও ঘৃণার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য দায়ী বিজেপি। অবশ্য, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছে শিল্পীদের একাংশ।

[আরও পড়ুন:  ‘অ্যাভেঞ্জার্স’ ছবির সঙ্গে তুলনা, সমালোচনার শিকার ‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার ২’-এর অভিনেতা]

শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের কথায়, “যে সরকারই আসুক, তারা যেন বাকস্বাধীনতার পাশাপাশি সব ধরনের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রাখে।” অবশ্য বাকস্বাধীনতাকে দাবি হিসাবে মানতে নারাজ অভিনেতা কৌশিক সেন। তাঁর প্রশ্ন, “যা আমার জন্মগত অধিকার, তার জন্য আমাকে রাজনৈতিক দলের শরণাপন্ন হতে হবে কেন?” ভারভারা রাওয়ের গ্রেফতারির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “সেই শিল্পীকে যখন অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেই সময় সুপ্রিম কোর্টও বলেছিল, ‘সোসাইটি নিডস অ্যান আউটলেট’। সুতরাং, তারা আমাদের সেটা দিতে বাধ্য।” তবে, শিল্পীদের বাকস্বাধীনতা অনেক ক্ষেত্রেই বিলাসিতার পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে বলে কৌশিকের অভিমত। একই সুর অভিনেতা ঋষি কৌশিকেরও। তাঁর কথায়, “যে ইস্যুগুলিতে বাকস্বাধীনতার দাবি উঠছে, সেগুলি আসলে বাজে কথা বলে নাম কেনা ছাড়া আর কিছুই নয়।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ