সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: শহর পুরুলিয়ার সাহেববাঁধের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট অকেজো হয়ে যাওয়ায় নোংরা জল ঢুকে দূষণ থেকে ফি দিন মাছ মরছে ওই জলাশয়ে। কয়েক দিন ধরেই দেখা যাচ্ছে জলের উপর ভাসছে ছোট বড় মাছ। ভেসে পাড়ের কাছেও চলে আসছে। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। কয়েক দিন ধরে জলাশয়ে মাছ মরতে থাকায় প্রায় সাত-আট লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে ফিশ প্রোডাকশন গ্রুপ। ফলে তারা মৎস্য দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। যোগাযোগ করেছে পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও। কিন্তু সমস্যার কোন সমাধান হয়নি।
পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। আমি নিজের চোখেও মরা মাছ দেখেছি। আগে এই জল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল অক্সিজেনের মাত্রা কম আছে। আমার মনে হয় সাহেব বাঁধের যে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট রয়েছে তা অকেজো হয়ে রয়েছে। এই কাজ চলে মিউনিসিপাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টরের তত্ত্বাবধানে। ফলে এক্সিকিউটিভইঞ্জিনিয়ারকে বলব বিষয়টি দেখার জন্য। বাকিটা মৎস্য দপ্তর দেখছে। এক্সপার্টদের সাথেও আমি কথা বলব।” এই জলাশয় আগে কচুরিপানায় ঢাকা ছিল। ওই জলাশয়কে যাতে কচুরিপানা মুক্ত করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা যায়। সেই কারণেই মৎস্য দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় সাধনে ফিশ প্রোডাকশন গ্রুপের মধ্য দিয়ে মাছ চাষের জন্য লিজ দেওয়া হয়। ওই প্রোডাকশন গ্রুপ চাষ করে মুনাফা নেবে। তার পরিবর্তে এই জলাশয়কে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে।
ওই প্রোডাকশন গ্রুপের তরফে জানানো হয়েছে, নোংরা জল সাহেব বাঁধে ঢুকছে। সেই দূষিত জলের কারণেই কয়েকদিন ধরে মাছ মরে যাচ্ছে। তারা মৎস্য দপ্তরকে বিষয়টি জানিয়েছে। ওই দফতর তাদেরকে জানিয়েছে শীঘ্রই পরিদর্শনে এসে এই জল পরীক্ষা করবে। সেই সঙ্গে পুরসভার প্রতি তাদের আবেদন, দূষিত জল যাতে কোনভাবেই সাহেব বাঁধে না ঢোকে। ওই প্রোডাকশন গ্রুপের তরফে জানানো হয়েছে, ফি দিন মাছ মরতে থাকায় চুন, ৫০ কেজি হলুদ, ৫ বস্তা নুন দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। পুরুলিয়ার সহকারি মৎস্য অধিকর্তা অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি। খুব শীঘ্রই আমাদের টিম সেখানে পরিদর্শনে যাবে এবং জল পরীক্ষা করা হবে।”
ওই প্রোডাকশন গ্রুপ জানিয়েছে, কয়েকদিন আগেই তারা মৎস্য দপ্তরকে লিখিত আকারে এই বিষয়টি জানায়। তারপরও মৎস্য দপ্তরের আধিকারিক বিষয়টি কেন জানেন না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুরুলিয়া পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, যে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট রয়েছে তা মিউনিসিপাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টরেটের তত্ত্বাবধানে চললেও একটি এজেন্সি তা দেখভাল করে। ফলে ওই এজেন্সিকে তলব করা হতে পারে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.