Advertisement
Advertisement

Breaking News

অতিরিক্ত লক্ষ্মীলাভে চাষ করুন ছোলা, জেনে নিন পদ্ধতি

কৃষকদের ছোলা চাষে উৎসাহ দিচ্ছে কৃষিদপ্তর৷

Gram cultivation in Ghatal
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 30, 2019 8:22 pm
  • Updated:January 30, 2019 8:22 pm

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: ছোলা একটি ডাল জাতীয় শস্য। অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য। এতে প্রায় শতকরা ২২.৫ ভাগ আমিষ জাতীয় উপাদান আছে। আমাদের দেশে ছোলা রবি শস্য হিসাবে চাষ করা হয়৷ এই জমিতেই কম খরচে ছোলা চাষ করা যায়। আমন তোলার পরই ছোলা চাষের উপযুক্ত সময়। এটি একটি লাভজনক চাষও বটে।

[পরিকাঠামোর অভাব, চাহিদা থাকলেও থমকে চুনো মাছ চাষ]

মাটি: প্রায় সবরকম মাটিতেই ছোলা চাষ করা যায়। তবে দোঁয়াশ ও বেলে মাটিতে ছোলার চাষ ভাল হয়। এঁটেল মাটিতেও ছোলা চাষ করা যায়। জলভাবযুক্ত বেশি জমিতে ছোলা ভাল জন্মায় না। ছোলা আবার মিশ্রচাষ হিসাবে চাষ করা যায়।
জমি তৈরি: প্রথমে জমি বাছাই করতে হবে। জমিতে কোনও আগাছা থাকা চলবে না। জমিতে তিন চারবার আড়াআড়ি ও লম্বালম্বিভাবে জমি চষে দিতে হবে। এরপর খুব ভাল করে আগাছা সাফাই করতে হবে। তারপর মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে সমতল করে নিতে হবে। জমি তৈরির সময় একর প্রতি পাঁচ থেকে ছ’টন গোবর সার প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে খুব ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে।

Advertisement

[জানেন কীভাবে মৌমাছি পালন করে হতে পারেন লাভবান?]

ছোলার জাত: দেশজুড়ে বিভিন্ন জাতের ছোলা রয়েছে। যেমন বি-৭৫, বি-৯৮, বি-১১৫, বি-১০৮, সাবুর-৪, বিজি-৩৯ জাতগুলি পশ্চিমবঙ্গে চাষের পক্ষে উপযোগী।
বীজের পরিমাণ: একর পিছু ২০ থেকে ২৫ কিলোগ্রাম বীজ লাগবে। তবে যন্ত্র দিয়ে বোনা হলে ১৫ থেকে ২০ কিলোগ্রাম বীজ লাগবে।
বীজ বপণ: বাংলা বছরের কাতির্ক ও অগ্রহায়ণ মাস ছোলা চাষের উপযুক্ত সময়। প্রতি কিলোগ্রাম বীজের সঙ্গে তিন গ্রাম হারে এগ্রোসন জি-এন ও দেড় গ্রাম থাইরাম বা ট্রাইকোডারমা ভিরিডি মিশিয়ে বীজ শোধন করে নিতে হবে। বীজ হাতে ছিটিয়ে বা সারিতে বোনা যায়। তবে কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, বীজ সারিতে বোনাই ভাল। এক ফুট অন্তর সারি করে বুনতে হবে। অনেক সময় আমন ধান তোলার তিন সপ্তাহ আগে জমিতে ছোলার বীজ ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে ছোলা চাষের খরচ অনেক কমে যায়।

Advertisement

[মালচিং পদ্ধতিতে ধান চাষ, ব্যাপক অর্থলাভ বালুরঘাটের তিন যুবকের]

সার প্রয়োগ: সাধারণত ছোলা চাষের জন্য জমিতে সার খুব একটা লাগে না। তবে ভাল ফলনের জন্য কৃষি বিশেষজ্ঞরা একর প্রতি আট কিলোগ্রাম নাইট্রোজেন ও ১৬ কিলোগ্রাম ফসফরাস ও ৮ কিলোগ্রাম পটাশিয়াম প্রয়োগ করার পরামর্শ দেন। জমি তৈরির সময় শেষ চাষের আগে সার প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। গাছে ফুল আসার আগে দু’শতাংশ ডিএপি স্প্রে করলে ফলন বাড়ে।
পরিচর্যা: ছোলা গাছ বড় হলেই বিভিন্ন রোগ পোকা আক্রমণ করে। বিশেষ করে ছত্রাকঘটিত রোগ যেমন ধসা, মরচে ও ঢলে পড়া রোগ প্রভৃতি। এই রোগ দমনের জন্য প্রতি লিটার জলে ২.৫ গ্রাম ইন্দোফিল বা ডাইথেন এম-৪৫ জলে গুলে জমিতে স্প্রে করতে হবে। শুটি ছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য প্রতি লিটার জলে ২ মিলিলিটার থায়োডান ৩৫ ইসি বা ফলিথায়োন ৫০ ইসি জলে গুলে স্প্রে করতে হবে। প্রতি একরে ১৫০-২০০ লিটার ওষুধ গোলা জল লাগবে। পাশাপাশি মাঝে মাঝেই জমির আগাছা সাফাই করে দিতে হবে।

[জল সংকট মেটাতে ফোয়ারা পদ্ধতিতে চাষের দাওয়াই কৃষি দপ্তরের]

ফসল তোলা: ছোলা পাকতে ১২০ থেকে ১৩০ দিন সময় লাগে। ফাল্গুন বা চৈত্র মাসে গাছের পাতা হলুদ হলে গাছ কেটে বা শিকড়-সহ উপড়ে তোলা হয়। কাটা গাছ অন্তত সাত দিন রোদে শুকিয়ে বলদ দিয়ে মাড়িয়ে বা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বীজ আলাদা করা হয়।
ফলন: সেচবিহীন জমিতে বি-৭৫ সাত থেকে আট কুইন্টাল, বি-৯৮ পাঁচ থেকে ছ’কুইন্টাল পর্যন্ত ফলন দেয়। সেচ যুক্ত জমিতে ফলন আরও বেশি পাওয়া যায়। নামমাত্র খরচে ফলন ভাল হয় বলে রাজ্য সরকার ছোলা চাষে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে। এমনটাই জানান দাসপুর-২নম্বর ব্লকের কৃষি আধিকারিক সুমিত রায়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ