Advertisement
Advertisement

Breaking News

ভেষজ চাষ

আয়ুর্বেদের কামাল দেখে বাড়ছে ভরসা, ব্লক হাসপাতালেও শুরু ভেষজের চাষ

আয়ুর্বেদ ছাড়িয়ে অ্যালোপ্যাথের চত্বরেও চলছে ওষধির চাষ।

Herbal medicines cultivates in all block hospital of state
Published by: Sayani Sen
  • Posted:February 24, 2020 2:42 pm
  • Updated:February 24, 2020 9:52 pm

গৌতম ব্রহ্ম: ভরসা বাড়ছে ভেষজে। উদ্যানের বিস্তৃতিতে তারই ইঙ্গিত। আয়ুর্বেদ ছাড়িয়ে অ্যালোপ্যাথের চত্বরেও এবার ওষধির চাষ। আয়ুর্বেদ হাসপাতালে ভেষজ উদ্যান থাকা স্বাভাবিক। রাজাবাজারের শ্যামাদাস বৈদ্যশাস্ত্র পীঠের বাগানে আমলকি, হরিতকী, দারচিনি, চন্দন, অশ্বগন্ধা, বাসক, তুলসি রয়েছে। শ্যামবাজারের জে বি রায় আয়ুর্বেদ কলেজেও রয়েছে ভেষজ বাগান। কিন্তু শুধু আয়ুর্বেদ হাসপাতালেই সীমাবদ্ধ না রেখে এবার ব্লক হাসপাতালেও ভেষজ চাষ শুরু হয়েছে। অর্থাৎ, অ্যালোপ্যাথির সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়ছে আয়ুর্বেদের! বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লক হাসপাতাল, কোচবিহারের নাটাবাড়ি ব্লক হাসপাতাল, মরাডাঙা, দেওচড়াই প্রাইমারি হাসপাতাল-সর্বত্র তারই ছবি। সর্বত্র মাথা তুলেছে ভেষজ উদ্যান।

পিপুল, তুলসি, চন্দন, নিশিন্দা, থানকুনি, হেলেঞ্চা, বাঁদরলাঠি, ঈশ্বরীমূল, অনন্তমূল, তেজপাতা, কারিপাতা। হরেক ভেষজের বাগান। প্রতিটি গাছ বা চারার পাশে লাগানো বোর্ডে জ্বলজ্বল করছে উদ্ভদটির দ্রব্যগুণ, কে কোন রোগ সারায় ইত্যাদি। যেমন চর্মরোগে হেলেঞ্চা, অনিদ্রায় সুষনি, আমাশায় থানকুনি, রক্তাল্পতায় কুলেখাঁড়া, কৃমিনাশে কালমেঘ, বাতের ব্যথায় নিশিন্দা। এভাবেই ভেষজের গুণ গাইছে ব্লক ও প্রাইমারি হাসপাতাল। অ্যালোপ্যাথি মতে, চিকিৎসা করতে এসে রোগীরা জেনে যাচ্ছেন গাছগাছড়ার গুণাগুণ। কেউ কেউ হাতেনাতে ফলও পাচ্ছেন বলে দাবি করছেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কিষাণ ক্রেডিট কার্ড থাকলেই কেল্লাফতে! পশুপালন-মাছ চাষে সহজেই মিলবে ব্যাংক ঋণ]

বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের সমীর দাস তেমনই একজন। দীর্ঘদিন ধরে জ্বরে ভুগে ভুগে নাজেহাল। অ্যান্টিবায়োটিক ফেল। অথচ হেলায় পড়ে থাকা শিউলি পাতার রসই স্রেফ তিনদিনে জ্বর গায়েব করে দিয়েছে! ঠিক যেভাবে থানকুনি পাতা খেয়ে পুরনো পেটের অসুখ পাঁচদিনে সারিয়ে ফেলেছেন কোচবিহারের নাটাবাড়ির মৌমিতা রায়। পাত্রসায়রের আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুমিত সুর জানালেন, অ্যালোপ্যাথির সঙ্গে আয়ুর্বেদের কোনও বিরোধ নেই। জ্বর হলে প্যারাসিটামলের পাশাপাশি শিউলি পাতার রসও খাওয়া যেতে পারে। রোগ নিরাময় হওয়া নিয়ে কথা। একই বক্তব্য নাটাবাড়ি ব্লক হাসপাতালের সিনিয়র আয়ুর্বেদ মেডিক্যাল অফিসার ডা. বাসবকান্তি দিন্দার। এই বাসববাবুই উদ্যোগ নিয়ে তুলসি গ্রাম তৈরি করেছেন নাটাবাড়িতে। সর্দি-কাশি-জ্বরের হাত থেকে আস্ত একটি গ্রামকে কিছুটা হলেও রেহাই দিয়েছেন। এখন বাসববাবুর নেতৃত্বেই নাটাবাড়ি ব্লক হাসপাতাল, মরাডাঙা, দেওচড়াই প্রাইমারি হাসপাতালে রমরমিয়ে ভেষজ চাষ হচ্ছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কম জলে তৈলবীজ চাষে সাফল্য, শ্রেষ্ঠ কৃষকের সম্মান পেয়ে গর্বিত মন্তেশ্বরের আমিরুল]

নাটাবাড়ি ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. সত্যেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, বাগান পরিচর্যার জন্য হাসপাতালের কিছু কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনটি বাগানেরই তত্ত্বাবধানে বাসববাবু। এদিকে ডা. সুমিত সুর সরকারি চাকরি পেয়েই পাত্রসায়র হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ভেষজ চাষ শুরু করেছেন। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গ ফুট জায়গা বাগানের জন্য ঘেরা হয়েছে। বাঁকুড়ার ভোরা সেন্ট্রাল নার্সারি থেকে ২৬ রকমের গাছের চারা এনে বসানো হয়েছে। কল্যাণীর ‘স্টেট মেডিসিনাল প্লান্ট বোর্ড’-এর কাছেও গাছ চাওয়া হয়েছে। আরও একশো চারা বসানো হবে বলে জানালেন পাত্রসায়র ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. প্রিয়দর্শী যশ। তাহলে কি বন্ধুত্ব বাড়ছে অ্যালোপ্যাথি-আয়ুর্বেদে? আধিকারিকরা জানালেন, ‘কায়াকল্প’ নামে কেন্দ্রের একটি প্রকল্প রয়েছে। যাতে হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ভেষজ উদ্যানের কথাও উল্লেখ রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই এই বাগান তৈরির চেষ্টা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ