Advertisement
Advertisement

Breaking News

গ্রীষ্মকালীন চাষ

গ্রীষ্মের প্রখর তাপে লক্ষ্মীলাভের উৎস এই সবজিগুলি

কৃষি ও উদ্যান পালন দপ্তরের পরামর্শ নিয়ে করুন চাষ৷

In this sunny season farmers cultivate vegetables for profit
Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 4, 2019 11:50 am
  • Updated:May 4, 2019 12:01 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া:  গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষে মুনাফা বেশ ভাল। বিজ্ঞানসম্মতভাবে চাষ করলে ভাল আয়ের মুখ দেখা যায়। গ্রীষ্মের সবজি বলতে মূলত কুমড়ো, লাউ, উচ্ছে বা করলা, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, পটল, কুঁদরি বোঝায়। এই সবজির চাষ কৃষি ও উদ্যান পালন দপ্তরের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে করলে ফলন ভাল হবেই।

কুমড়ো: এই সবজি উন্নত জাত হল বৈদ্যবাটি, অর্কচন্দন, চৈতালি, বর্ষাতি। প্রতি বিঘাতে ৫০০ থেকে সাড়ে ৭০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন। প্রতি লিটার জলে দু’গ্রাম কার্বেনডাজিম গুলে বীজশোধন করা হয়। যাতে রোগ-পোকার আক্রমণ কম হয়। ছ’ফুট বাই চার ফুট গর্ত করে বীজ ছড়াতে হবে। প্রতি গর্তে তিন-চারটি বীজ ছড়ানোর প্রয়োজন। গ্রীষ্মকালে ফলন পেতে নভেম্বর-জানুয়ারি ও বর্ষার দিকে ফলনের জন্য জুন-জুলাই মাসে বীজ বপন করতে হবে। জমি তৈরির সময় বিঘে প্রতি ৫০ কেজি খোল নিয়ে জমি তৈরি করতে হয়। অণুখাদ্যের অভাব মেটানোর জন্য বিঘা প্রতি সাড়ে তিন কেজি জিংক সালফেট, দেড় কেজি বোরাক্স ও পঁচাত্তর গ্রাম অ্যামোনিয়াম মলি বডেড বীজ বসানোর সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। বীজ বসানোর তিন সপ্তাহের মধ্যে আগাছা পরিষ্কার করে চাপান সার দিতে হবে। বেঁধে দিতে হবে গাছের গোড়া। প্রয়োজনে গাছ মাচায় তুলে দিতে হবে। বীজ বপনের সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই কুমড়ো ফলন দিতে শুরু করে। ৩০ থেকে ৪০ কুইন্ট্যাল বিঘা প্রতি ফলন হয়ে থাকে।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: তৈলবীজে আরও বেশি ফলন চান? অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে করুন চাষ]

লাউ: সব ধরনের মাটিতেই লাউ হয়ে থাকে। লাউের জাতগুলি হল পুসা নবীন, পুসা মেঘদূত, পুসা সামার প্রলিফিক লং, পুষা সামার প্রলিফিক রাউন্ড। বিঘা প্রতি পাঁচশো থেকে ছ’শো গ্রাম বীজ বপন করতে হবে। বীজশোধন, চাষের পদ্ধতি, পরিচর্যা প্রায় কুমড়োর মতোই। গ্রীষ্মকালীন ফলন পেতে নভেম্বর-জানুয়ারি, বর্ষাকালীন জুন-জুলাই মাসে বীজ বপন করতে হবে।

Advertisement

উচ্ছে: সব ধরনের মাটিতে শুষ্ক, উষ্ণ আবহাওয়ায় ফলন ভাল হয়। মাটির পিএইচ ৬.৫ থেকে ৭ হলে ভাল। এই ফসলের ভাল জাত হল ঝুমকা, বোল্ডার। করলার ক্ষেত্রে লং গ্রিন, পুষা স্পেশ্যাল, কোয়েম্বাটুর লং। বিঘেতে ছ’শো থেকে সাতশো গ্রাম বীজ বপন করতে হয়৷ বীজশোধন, চাষের পদ্ধতি ও পরির্চযা প্রায় কুমড়োর মতোই। গ্রীষ্মকালীন ফলন পেতে নভেম্বর-জানুয়ারি, বর্ষায় পেতে জুন-জুলাই মাসে বীজ বপন করতে হবে। চার ফুট বাই দু’ফুট দূরত্বে গাছ বসাতে হবে। ফলন দু’মাস পর থেকে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৫ কুইন্টাল মিলবে।

ঝিঙে: জৈব সার যুক্ত জলনিকাশী ব্যবস্থা থাকে এমন মাটিতে এই সবজির চাষ ভাল হয়। কোনওভাবেই গোড়ায় জল জমতে দেওয়া যাবে না। এই চাষে তাপমাত্রা বেশি হলে পুরুষ ফুলের সংখ্যা বেড়ে যায়। ফলে ফলন কমে যাবে। এই চাষে জাত হল সাতপুটিয়া, বারোপাতা, পুষা নশধর। হাইব্রিড হল গরিমা, রোহিনী। উন্নত জাতের ক্ষেত্রে বিঘে প্রতি পাঁচশ থেকে ছশো গ্রাম বীজ বপন করতে হবে। হাইব্রিডের ক্ষেত্রে দুশো গ্রাম প্রতি বিঘা। বীজশোধন ও পরিচর্যা কুমড়োর মতোই। দেড় মাস পর থেকে বিঘা প্রতি ১৫-২০ কুইন্ট্যাল ও হাইব্রিডের ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩০ কুইন্ট্যাল ফলন মিলবে।

[ আরও পড়ুন: জায়গা না থাকলে বস্তাতেই করুন সবজি চাষ, জেনে নিন পদ্ধতি]

চিচিঙ্গা: দোআঁশ মাটিতে উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়ায় এই সবজির ফলন ভাল হয়। মাটির পিএইচ ছয় থেকে সাত হলে ভাল। এই ফসলের জাত হল কোয়েম্বাটুর এক, কোয়াম্বাটুর দুই। হাইব্রিডের ক্ষেত্রে এমডিইউ-১। বিঘে প্রতি ছ’শো থেকে সাতশো গ্রাম বীজ বপন করতে হয়। নভেম্বর থেকে জুলাই পর্যন্ত বীজ বপন করা যেতে পারে। চার ফুট বাই দু’ফুট দূরত্বে বীজ বপন করতে হবে। তিন-চারটি বীজ লাগবে। এছাড়া সব কুমড়োর মতোই। আড়াই মাসে বিঘা প্রতি ১৮ থেকে ২৫ কুইন্ট্যাল ফলন হবে। হাইব্রিডের ক্ষেত্রে ৩৫ থেকে ৪০ কুইন্ট্যাল ফলন হয়।

পটল: জলনিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত বেলে, দোআঁশ মাটিতে পটল সবচেয়ে ভাল হয়। আর্দ্র ও উষ্ণ আবহাওয়া পটলের পক্ষে উপযোগী। এই সবজির উন্নত জাত হল কাজলি, লতা বোম্বাই, দুধিয়া। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ছ’ফুট বাই ছ’ফুট দূরত্বে মূল বসাতে হবে। বীজশোধন ও পরির্চযা একই রকম। তিন থেকে সাড়ে তিন মাস পর বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ২০ কুইন্টাল ফলন পাওয়া যায়।

কুঁদরি: চাষের পদ্ধতি পটলের মতোই। বীজশোধন, পরির্চযা প্রায় কুমড়োর মত। এই সবজির জাত দেশি। পটলের মতো করেই কান্ড লাগাতে হবে। সাড়ে তিন মাসের মধ্যে ফলন হবে। বিঘা প্রতি আট থেকে ১০ কুইন্ট্যাল ফলন হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ