Advertisement
Advertisement

Breaking News

মহুয়া মৈত্র

কঠোর পরিশ্রমের ফল পেলেন মহুয়া, কঠিন ম্যাচে হার কল্যাণ চৌবের

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বুথকর্মীদের জয়ের কৃতিত্ব দিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী।

TMC's Mahua Moitra beats BJP's Kalyan Chaubey
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:May 23, 2019 7:39 pm
  • Updated:May 23, 2019 7:39 pm

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: কঠোর পরিশ্রমের ফল পেলেন মহুয়া মৈত্র। রাজ্যে একের পর এক তৃণমূল প্রার্থীদের পিছিয়ে পড়ার খবরের মধ্যেও বর্ধিষ্ণু কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র বিপুল ভোটে এগিয়ে গেলেন। ব্যবধান এতটাই যে সরকারিভাবে জয়ী ঘোষণা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির কল্যাণ চৌবে পরাজিত হলেন। দলের তথাকথিত বড় নেতাদের বাদ দিয়ে, স্রেফ কর্মীদের সম্বল করেই একটা বড় ম্যাচ জিতলেন মহুয়া। বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর বিপ্রদাস পাল চৌধুরি কলেজে একবার ছাড়া মহুয়াকে আর পিছতে দেখা যায়নি। সাতসকালে পোস্টাল ব্যালটে হাজার তিনেক ভোটে এগিয়ে যাওয়া সময়টুকু বাদে কল্যাণের কপালের বলিরেখা সর্বক্ষণ স্পষ্ট দেখা গিয়েছে।

এই কেন্দ্রে তৃণমূলের মতোই বিজেপি জব্বর প্রার্থী করে ভারতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবেকে। ভারতীয় দলের এই গোলকিপার ক্লাব, দেশের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিপক্ষ দলের স্ট্রাইকারদের পা থেকে প্রবল ক্ষিপ্রতায় বল তুলে নিতেন। শরীর ছুঁড়ে মুঠিবদ্ধ হাত দিয়ে গোলার মতো শর্ বারের উপর দিয়ে তুলে দিতেন। কিন্ত এদিন ভদ্র, মার্জিত কল্যাণ, তৃণমূল প্রার্থী মহুয়ার সারামাঠ জুড়ে খেটে খেলা ও প্রবল গতিতে মারা শর্ ধরতে ব্যর্থ হলেন। লোকসভার ময়দানে নেমে কৃষ্ণনগর দক্ষিণ কেন্দ্রের ধুবুলিয়ায় ব্যাপক মহিলা সমাবেশ দেখে তৃণমূল প্রার্থী বলেছিলেন, ‘এই গোল কিন্তু ওরা সামলাতে পারবে না। ওদের মাথার ওপর দিয়ে, ডান পায়ের পাশ দিয়ে, বাঁ পায়ের পাশ দিয়ে গোলপোস্টে ঢুকে যাবে। আমি তো জিতবই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে জিততে পাঠিয়েছে। কিন্তু এই লড়াইটা জেতা বা হারার লড়াই নয়। রেকর্ড ভোটে জেতার লড়াই। আমি বারবার বলছি আমি জিততে এসেছি। জিতেই ছাড়ব। কিন্ত এক লাখের বেশি ভোটে জেতানোর প্রচেষ্টা থাকা চাই।’ এই বক্তব্য বিভিন্ন জায়গাতে মহুয়া বলে কর্মীদের উদ্দীপ্ত করেছেন। দিল্লি থেকে লোকজন এনে ওয়ার রুম বানিয়েছিলেন। কোনও নেতা নয়। কর্মীরাই সম্পদ। বারবার এ কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন। প্রথম থেকে মাটি কামড়ে পড়ে থাকা। পরিশ্রম করে এই লোকসভার ৮২টি পঞ্চায়েতের ১৯০৬টি গ্রামে পৌঁছানো। বাস্তবে যতটা সম্ভব হয়েছে পৌঁছেছেন। এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। কিন্ত মহুয়া নিজের লক্ষ্যে অবিচল।

Advertisement

শেষ পর্যন্ত তার থিওরি যে কাজে লেগেছে এই বাজারে তৃণমূলের একের পর এক প্রার্থী হেরে যাওয়ার পরও মহুয়া দিল্লির পথ মসৃণ হওয়াতে তা স্পষ্ট। এদিন গোলাপি ব্লাউজ, সবজে রঙের শাড়িতে হাসিখুশি দেখা গিয়েছে মহুয়াকে। পঞ্চায়েত ভোটে কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি পঞ্চায়েত, সমিতি ও জেলা পরিষদের আসন দখল করেছিল। কিন্তু এদিন ওই বিধানসভার এলাকায় মহুয়া লিড পান। প্রথম রাউন্ডে আঠারো হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে যান। দ্বিতীয় রাউন্ডে ২২৪৫০ ভোটে এগিয়ে যান। সময় যত গড়িয়েছে মহুয়া মার্জিন বাড়িয়েছেন। এরই মধ্যে কৃষ্ণনগর পুরসভার এলাকায় চব্বিশ হাজার ভোটে মহুয়া পিছিয়ে থাকা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। এদিন গণনাকেন্দ্রের ঘরে ঘরে ঘোরার ফাঁকে নিচে প্রার্থীদের বসার ঘরে বসে বারংবার পেন, কাগজ নিয়ে মহুয়াকে হিসাব কষতে দেখা গিয়েছে। মার্জিন কত হবে? জিজ্ঞেস করতে বলেন, ‘এখন কিছু বলব না। একেবারে শেষে বলব।’ আর মুখে হাসি ফুটেছে। করিমপুর থেকে জিতে বিধায়ক হওয়া মহুয়া এদিন দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করেন। নবম রাউন্ডের শেষে মহুয়া মৈত্রর প্রাপ্ত ভোট ৪৭৮৬৫৭। কল্যাণ চৌবের প্রাপ্ত ভোট ৪০৬০৯৩। লিড দেখে বোঝাই যাচ্ছে, সুখের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ