সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতির জটিল ষড়যন্ত্রে কাঁটাতার পড়েছে দুই দেশের মাঝে। তবে দেশ ভাঙলেও হৃদয়ের গোপনে অটুট রয়েছে আস্থা ও বিশ্বাস। তার উপর ভর করেই পাকিস্তান থেকে দেবভূমি ভারতে কলসবন্দি হয়ে এল ৪০০ হিন্দুর অস্থি। উদ্দেশ্য, মহাকুম্ভের পুণ্যলগ্নে মা গঙ্গায় মোক্ষের সন্ধান। হরিদ্বারে বিসর্জন করা হবে এই পাকিস্তানি হিন্দুদের অস্থি।
জানা গিয়েছে, প্রিয়জনের অস্থি গঙ্গায় বিসর্জন দিতে গত ৮ বছর ধরে তা রাখা ছিল পাকিস্তানের শ্মশানে। মহাকুম্ভ উপলক্ষে এই সব অস্থি ভারতে আনার জন্য বিশেষ ভিসা দেওয়া হয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে। এর পর গত সোমবার ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ৪০০ পাকিস্তানি হিন্দুর কলসবন্দি অস্থি নিয়ে আসা হয় ভারতে। করাচির পুরানো গোলিমার শ্মশান থেকে এই অস্থি আনা হয়েছে গঙ্গায় বিসর্জনের উদ্দেশে। এই মহাযজ্ঞের নেতৃত্বে ছিলেন পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থিত শ্রী পঞ্চমুখী হনুমান মন্দির সমিতির অধ্যক্ষ শ্রীরামনাথ মিশ্র মহারাজ। সোমবার ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতে আসেন তিনিও।
করাচির বাসিন্দা সুরেশ কুমারের মায়ের মৃত্যু হয়েছিল ২০২১ সালের ১৭ মার্চ। মায়ের শেষ ইচ্ছা ছিল তাঁর অস্থি যেন গঙ্গায় বিসর্জন করা হয়। সেইমতো হরিদ্বারে যেতে ভিসার আবেদন জানান, তবে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে ভিসা পেতে বিলম্ব হয়। অবশেষে ৪০০ পাকিস্তানির হিন্দুর অস্থি বিসর্জনের জন্য সরকার ভিসার অনুমোদন দেওয়ায় স্বস্তির শ্বাস ফেলেন সুরেশ। তিনি বলেন, আমরা মহাকুম্ভের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ১৪৪ বছর পর প্রয়াগরাজে এই মহাকুম্ভ অত্যন্ত পবিত্র তীর্থক্ষেত্র। সেখানেই মায়ের অস্থি বিসর্জন করব।
পাশাপাশি সুরেশ বলেন, প্রথমে ভিসা না পাওয়ায় আমরা ভেবেছিলাম সিন্ধু নদীতেই মাকে শেষ বিদায় দেব। কিন্তু মা গঙ্গা আমাদের কাছে প্রথম বিকল্প। হিন্দু ধর্মে গঙ্গা মা অত্যন্ত পবিত্র। এখানে অস্থি বিসর্জন দিলে স্বর্গলাভ হয়। এই সব অস্থি ভারতে আনার মূল উদ্যোগতা শ্রীরামনাথ মিশ্র বলেন, ২০১১ সালে ১৩৫ ও ২০১৬ সালে ১৬০ জনের অস্থি গঙ্গায় বিসর্জন দিতে ভারতে আনা হয়েছিল। এবার সেই সংখ্যাটা ৪০০ দীর্ঘ যাত্রাপথে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য মাটির বদলে প্লাস্টিকের কলসিতে করে অস্থি আনা হয়েছে। করাচি থেকে প্রথমে ট্রেনে লাহোর। এরপর ওয়াঘা থেকে ভারত। এখান থেকে বেশিরভাগ অস্থি নিয়ে যাওয়া হয়েছে হরিদ্বারে। কিছু অস্থি তাঁদের পরিজনেরা মহাকুম্ভেও নিয়ে যাতে চান বলে জানা যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.