Advertisement
Advertisement

‘বড়া কাম হোনা চাহিয়ে’, নির্দেশ ছিল জেহাদি গাজির উপর

কে এই গাজি?

Abdul Rasheed Ghazi behind Kashmir attack
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:February 19, 2019 8:39 am
  • Updated:February 19, 2019 8:39 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার সাত সকালে সেনা অভিযানে নিহত কামরান ওরফে আবদুল রশিদ গাজি মধ্য তিরিশের এক জেহাদি যুবক। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের ছত্রছায়ায় থাকা জইশ-ই-মহম্মদের সুপ্রিমো মাসুদ আজহারের প্রিয়পাত্র হল এই গাজি। মাসুদের নির্দেশে গাজি কাশ্মীরে এসেছিল নির্দিষ্ট অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে। তার উপর নির্দেশ ছিল, ‘ইসবার কাম বড়া হোনা চাহিয়ে। ইতনা বড়া কি হিন্দুস্তান কো রোনা হোগা।’ (এবার কাজ মানে হামলা বিশাল বড় হতে হবে। এতটাই বড় যে গোটা হিন্দুস্তান যেন কাঁদে)। আল্লার কসম খেয়ে শাহাদাত বা ‘শহিদ’ হতেই কাশ্মীরে এসেছিল গাজি।

পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তান, আফগানিস্তানের হেলমন্দ, কুন্দুজ, কান্দাহার চষে বেড়িয়েছে সে। আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের উপর অনেকবার সফলভাবে হামলা চালিয়েছে সে। গাড়ি-বোমা স্পেশালিস্ট হিসাবে সে ছিল পাক গুপ্তচরসংস্থা আইএসআইয়ের নয়নের মণি। এবার মাসুদ আজহারের কাঁধে বন্দুক রেখে তাকেই কাশ্মীরে ১৪ ফেব্রুয়ারি সফলভাবে কাজে লাগাল আইএসআই। আফগানিস্তানে দীর্ঘদিন লড়াই করার সুবাদে সে হয়ে উঠেছিল একজন সফল ওয়ারলর্ড। সেখানে তালিবান ও আল কায়দা জঙ্গিদের কাছে সে গাড়িবোমা এবং মানববোমা তৈরির সফল প্রশিক্ষণ নেয়।

Advertisement

[ভারতীয় সেনার পরাক্রমে নাস্তানাবুদ জইশ, নয়া কৌশল জঙ্গিদের]

Advertisement

ভারতীয় গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ৯ ফেব্রুয়ারি, সংসদভবন হামলায় ফাঁসির সাজা হওয়া আফজল গুরুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু কোনও কারণে তা হয়ে ওঠেনি। ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় হামলার দিনকয়েক আগে রতনীপুরা এলাকায় একদল জঙ্গির সঙ্গে সংঘর্ষ বেধেছিল নিরাপত্তা বাহিনীর। তাতে এক জঙ্গির মৃত্যু হয়। হাত ফস্কে পালিয়ে যায় তিনজন। পালিয়ে যাওয়া ওই তিন জঙ্গির মধ্যে জইশ কমান্ডার গাজি ছিল বলে জানা গিয়েছে। তার পরেই আদিল আহমেদ দারকে দিয়ে সিআরপিএফ-এর কনভয়ে হামলা চালায় সে। তার হাত ধরেই দক্ষিণ কাশ্মীরে জইশ-ই-মহম্মদের নেটওয়ার্ক আরওচড়িয়ে পড়তে থাকে। আল্লার নামে, হজরত মহম্মদের নামে শপথ করিয়ে অল্পবয়সিদের মগজধোলাই করতে সিদ্ধহস্ত ছিল গাজি। এভাবেই একাধিক জেহাদি মানববোমা তৈরি করেছিল সে। সিআরপিএফের কনভয়ে হামলাকারী মানববোমা আদিল দার ছিল তার হাতেই তৈরি।

উল্লেখ্য, আইএসআইয়ের নির্দেশে ২০১১ সালে আফগানিস্তান থেকে পাক অধ্যুষিত কাশ্মীরে পাঠানো হয় কামরানকে। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে সেখানে কমবয়সি জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব পায় সে। ভারত, বিশেষ করে জম্মু-কাশ্মীরে জইশের কর্মসূচির দায়িত্বেও ছিল কামরান। ২০১৭ এবং ’১৮-য় পুলওয়ামায় সেনা অভিযানে মৃত্যু হয় মহম্মদ উসমান হায়দর ও তালহা রশিদ নামে দুই জঙ্গির। ওই দু’জন ছিল মাসুদ আজহারের ভাইপো এবং জইশ-ই-মহম্মদের সক্রিয় সদস্য। ১৯৯৯ সালে কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ে যুক্ত ছিল মাসুদের দাদা ইব্রাহিম এবং ছোট ভাই আবদুল রউফ। উসমান এবং তালহা ওই দু’জনের ছেলে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানে দক্ষিণ কাশ্মীরেই সম্প্রতি নিহত হয়েছিল মাসুদ আজহারের ভাগনে তালহা ও ভাই ইব্রাহিমের ছেলে ওসামা। তালহা ও ওসামার হত্যার বদলা নিতেই বিস্ফোরক সমেত দক্ষিণ কাশ্মীরে গাজিকে পাঠিয়েছিল মাসুদ আজহার। কখন কী করতে হবে তা গাজিকে পাখি পড়া করে সব বুঝিয়ে দিয়েছিল পাক সেনার কয়েকজন শীর্ষ অফিসার। এই আবদুল রশিদ গাজিকে ঘিরে ফেলে টানা গুলিযুদ্ধের পর সোমবার খতম করেছে সেনাবাহিনী। এর ফলে পুলওয়ামা হামলার পর ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর বুকে যে দগদগে ক্ষত তৈরি হয়েছে, গাজি ও তার দুই সঙ্গীকে খতম করে তার কিছুটা হলেও উপশম হল বলে মনে করা হচ্ছে।

[‘আলোচনার দিন শেষ, এখন অ্যাকশনের সময়’, কড়া হুঁশিয়ারি প্রধানমন্ত্রীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ