সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের ছোট জনপদ কাসগঞ্জে কিছুতেই যেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। এলাকা যেটুকু শান্ত হয়েছে, দেখেশুনে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এ হল ঝড়ের আগের নিস্তব্ধতা। এই অশান্ত পরিস্থিতির মধ্যেই আরএসএস-এর শাখা সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ঘোষণা করেছে, উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমে আরও ‘তিরঙ্গা যাত্রা’ চালাবে তারা। সংগঠনের নেতা সুনীল পরাশর বলেছেন, ‘অগ্রা, আলিগড় ও বরেলির অন্তত ২০টি জেলায় তিরঙ্গা যাত্রা হবে।’
[লাগাতার তৃতীয় দিনও হিংসার আগুনে পুড়ছে কাসগঞ্জ, গ্রেপ্তার ৪৯]
অভিযোগ, এই ‘তিরঙ্গা যাত্রা’কেই কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে উত্তাল হয়ে ওঠে কাসগঞ্জ। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারান এক যুবক। ২৬ জানুয়ারি যখন গোটা দেশ সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপন করছে তখন কাসগঞ্জে জ্বলছিল হিংসার আগুন। চলে অবাধে ভাঙচুর, লুট। বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি ও ভিএইচপি আয়োজিত একটি অবৈধ বাইক মিছিল থেকেই নাকি অশান্তির সূত্রপাত। ওই রোড শো চলাকালীন পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।
The law and order situations that emerge in the state due to activities that take place without permission creates a lot of issues, also hinders development activities in the state: RV Singh, DM Bareilly on his Facebook post over #KasganjViolence (29.1.18) pic.twitter.com/7e0zR6Wozj
— ANI UP (@ANINewsUP) January 30, 2018
Vishwa Hindu Parishad to hold ‘Tiranga Yatra’ in #Agra today
— ANI UP (@ANINewsUP) January 31, 2018
মঙ্গলবারই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সবপক্ষের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন, যে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করবে প্রশাসন। তিনি বলেন, ‘রাজ্যের কোনও প্রান্তেই কোনও দুর্নীতি বা সমাজবিরোধী কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। এই ধরনের নিন্দনীয় কাজে যারা জড়িত, তাদের একজনকেও রেহাই দেবে না পুলিশ।’ কাসগঞ্জে হিংসার খবর পৌঁছেছে দিল্লিতেও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে যোগী প্রশাসনের কাছ থেকে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ১১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কাসগঞ্জে মোতায়েন রয়েছে র্যাফ ও বিশাল পুলিশবাহিনী। এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অস্ত্রভাণ্ডারের বহর দেখে পুলিশকর্তারাও অবাক। তাহলে কি উপযুক্ত পরিকল্পনা করেই অশান্তি ছড়ানো হয় কাসগঞ্জে, তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
Govt will not tolerate any kind of corruption or anarchy in the state, strict action will be taken against anyone who indulges in such acts: UP CM Yogi Adityanath pic.twitter.com/OUEa0edLYU
— ANI UP (@ANINewsUP) January 30, 2018
ঠিক কী ঘটেছিল ২৬ জানুয়ারি? কেনই বা প্রাণ হারাতে হল চন্দন গুপ্তকে?
পুলিশ সূত্রে খবর, ২২ বছরের চন্দন গুপ্ত গত শুক্রবার ‘তিরঙ্গা বাইক র্যালি’তে অংশগ্রহণ করেন। র্যালিটির আয়োজন করে আরএসএসপন্থী ছাত্র সংগঠন এবিভিপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তিনি স্থানীয় একটি কলেজের কমার্সের ছাত্র। ওই বাইক মিছিলকে কেন্দ্র করেই উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। অশান্তির পিছনে দু’রকম তত্ত্ব উঠে এসেছে। পুলিশ সবদিক খতিয়ে দেখছে। মৃতের পরিবারের দাবি, চন্দন এলাকায় উন্নয়নমূলক নানা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলেই তাঁকে খুন করা হয়। শনিবার তাঁর শেষকৃত্যের পরই পরিস্থিতি চরমে ওঠে এই শহরে। কাসগঞ্জ জুড়ে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালায় একদল দুষ্কৃতী। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একটি বাজারে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি প্রাইভেট বাস। শনিবারই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এডিজি অজয় আনন্দর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী তখনকার মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও রাত বাড়তেই ফের দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়। ফের একটি গাড়ি ও ওষুধের দোকান পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। শেষ পর্যন্ত রাতে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ নামানো হয়। জারি হয় কারফিউ। এখন এলাকায় শ্মশানের নিস্তব্ধতা।
Special Investigation Team (SIT) constituted to probe #KasganjClashes. Magisterial inquiry also ordered: Sanjeev Gupta, IG Aligarh Range pic.twitter.com/PV6iZLDOj4
— ANI UP (@ANINewsUP) January 30, 2018