সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফেসবুকে যৌন হেনস্তার কথা লিখে হইচই ফেলে দিলেন অসমের জোরহাটের এক কিশোরী। সোশ্যাল মিডিয়ার মতো প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করতেই উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সরব নেটিজেনরা।
শুভলক্ষ্মী নামে ওই কিশোরীর পোস্ট রীতিমতো ভাইরাল। কোনওরকম রাখঢাক না করে তিনি জানিয়েছিলেন, কয়েকজন বাইকআরোহী যুবক তাঁর যৌন হেনস্তা করেছে। মুখ ঢেকে এসেছিল তারা। তাদের মতলব বুঝতে পেরেই রাস্তার একদিকে সরে গিয়েছিলেন শুভলক্ষ্মী। কিন্তু ওই যুবকরা সেদিকে গিয়েই তাঁর সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করে পালায়। এ কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া মাত্র তা ভাইরাল হয়ে যায়। ঝড় ওঠে প্রতিবাদের। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি ওঠে।
এই বিতণ্ডায় নতুন মাত্রা যোগ করে এক মন্ত্রীর মন্তব্য। তাঁর দাবি, ওই কিশোরী এসএফআই কর্মী। নিজের হেনস্তার জন্য তাঁর পুলিশের কাছে যাওয়া উচিত ছিল। বদলে ফেসবুকে তিনি নিজেকে হাস্যকর করে তুলছেন বলে দাবি ওই মন্ত্রীর। এই মন্তব্যের পরই আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাধারণ মানুষ। একজন কিশোরী যখন সাহস করে যৌন হেনস্তার কথা জানিয়েছে এবং তা নিয়ে প্রতিবাদ দানা বাঁধছে, তখন এহেন মন্তব্যে কেন? এই প্রশ্নে পাল্টা প্রতিবাদ জানিয়েছেন বহু মানুষ।
তবে শুভলক্ষ্মীর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। যে কথা সাধারণ কিশোরীরা লুকিয়ে যান, তা সামনে এনে তিনি যে জনমত তৈরি করেছেন, সেই প্রয়াসকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। তাঁদের মধ্যে আছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। শুভলক্ষ্মীর পোস্টের প্রেক্ষিতেই নারী নিরাপত্তা নিয়ে বর্তমান সরকারকে তুলোধোনা করেছেন তিনি। জোরহাটের প্রাক্তন এসপি সংযুক্তা পরাশরও এ কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন। সই সংগ্রহ থেকে মিটিং-মিছিল, কিশোরীর সমর্থনে চলছে নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি।
The State Govt should ensure to protect the rights of every girl irrespective of political beliefs.The law is not for BJP-ABVP-RSS only..1/2
— Tarun Gogoi (@tarun_gogoi) February 14, 2017
Indelicate remarks of Minister @cmpatowary & silence of Education Minister @himantabiswa in support of the victim student is very woeful.2/2
— Tarun Gogoi (@tarun_gogoi) February 14, 2017
বেঙ্গালুরুর গণ শ্লীলতাহানির ঘটনার স্মৃতি এখনও টাটকা। ঘটনার কয়েকদিন পরেই সামনে এসেছিল সে তথ্য। কেননা কোনও নির্যাতিতা মহিলাই পুলিশের দ্বারস্থ হননি। স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ দায়ের করেছিল পুলিশ। সেই সময় বহু তরুণী বলেছিলেন, পুলিশের কাছে গিয়ে তাঁরা কী বলবেন। নিজেদের শ্লীলতাহানির কথা বলতে বেধেছিল তাঁদের। এই কিশোরী অবশ্য তা করেননি। নিজের হেনস্তার কথা তো জানিয়েইছিলেন, পাশাপাশি এলাকায় নারীনিগ্রহ নিয়েও সরব। যদিও পুলিশের দ্বারস্থ তিনি হননি। কিন্তু তাঁর এই পদক্ষেপই পুলিশকে স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য করেছে। যদিও ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.