বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লিতে এসে ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানাতে চান জিয়াগঞ্জের নিহত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের বাবা। মঙ্গলবার একথা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতা মুকুল রায়। এদিনই, বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নেতৃত্বে সাত সদস্যের এক প্রতিনিধিদল জিয়াগঞ্জ-খুনের ঘটনা নিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে। তাঁর পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নালিশ জানান। পশ্চিমবঙ্গে ‘গণতন্ত্র বিপন্ন’ , এই অভিযোগ করে রাষ্ট্রপতিকে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। বিজেপি প্রতিনিধিদলের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই এই হত্যাকাণ্ড। রাষ্ট্রপতি তাঁদের সব কথা শোনার পর রাজ্যপালের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন বলেও দাবি কৈলাসের।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের পর কৈলাস বলেন, “আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছি। রাজ্যে নবরাত্রির সময়ে ন’দিনে আমাদের ১০ জন সদস্য খুন হয়েছেন। এটা যে পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে হয়ে আসছে তা আমরা দেখেছি। রাজ্যে পুরভোট আসছে। সেই একই পরিস্থিতি যাতে আবার না হয় তা নিশ্চিত করতেই আমরা রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছি। রাষ্ট্রপতি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি রাজ্যপালের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাবেন।” জিয়াগঞ্জের ঘটনা নিয়ে তঁারা খুব শীঘ্রই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র সঙ্গেও দেখা করবেন বলেও জানিয়েছেন কৈলাস।
এদিকে, এদিনই জিয়াগঞ্জের বন্ধুপ্রকাশ খুনের ঘটনার কিনারা একপ্রকার হয়েই গিয়েছে বলে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তবে রাজ্য পুলিশের তদন্ত মানতে যে তাঁরা নারাজ, সেকথা প্রকাশ্যেই জানিয়ে বিজেপি ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ তত্ত্বেই অনড়। প্রতিনিধিদলের সদস্য মুকুলবাবু বলেন, “খানিক আগেই বন্ধুপ্রকাশের বাবা আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি দিল্লিতে এসে ছেলের খুনের ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করতে চান।” এদিন রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ করলেও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করেননি তাঁরা।
প্রতিনিধিদলের আরেক সদস্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরি বলেন, “রাজ্যে লাগাতার বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চলছে। রাজ্যের জেলগুলিতে আমাদের ২৮ হাজার কর্মী আটক রয়েছে। তার উপর রাজ্যের বিজেপির কর্মীদের খুনের ঘটনা তো রয়েছেই। আমাদের প্রায় ৯০ জন কর্মী খুন হয়েছেন। আমরা রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছি তিনি যাতে রাজ্যপালের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। আমরা এখনই বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করিনি। বাংলার মানুষই সেই দাবি করবে। তারাই তৃণমূলকে বিদায় করে দেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।” প্রতিনিধিদলে রাজ্যের বিজেপি সাংসদ এস এস আলুওয়ালিয়া, অর্জুন সিং, রাজু বিস্তা এবং রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তও উপস্থিত ছিলেন।
[আরও পড়ুন: বেআইনি কয়লা খনিতে নিঁখোজদের উদ্ধারে ব্যর্থ, প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.