সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা বিএসএফকে বলা হয় দেশের প্রাথমিক সুরক্ষা বাহিনী বা ‘ফার্স্ট লাইন অফ ডিফেন্স’। যখনই কোনও শত্রুপক্ষ ভারতে আক্রমণ করে, এই আধাসেনা বাহিনীর জওয়ানরা সবার আগে দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় বুক চিতিয়ে দাঁড়ান। ১৯৬৫-র পয়লা ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় এই বাহিনী। আজ বিএসএফ-এর প্রতিষ্ঠা দিবসে জেনে নিন দেশের অন্যতম প্রধান বাহিনীকে নিয়ে এমন কয়েকটি অজানা তথ্য, যেগুলি একজন ভারতীয় হিসাবে আপনার রক্ত গরম করে তুলবে।
১. ভারত-পাক যুদ্ধের পর ১৯৬৫-তে ভারতের সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে যায়। সে সময় এমন এক শক্তিশালী বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়, যারা ভারতের আন্তর্জাতিক সীমানাকে নিশ্ছিদ্র রাখতে পারবে। এই লক্ষ্যেই জন্ম বিএসএফের। বিএসএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রথম জেনারেল হলেন কে এফ রুস্তমজি। তিনি ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন।
২. বিশ্বের বৃহত্তম নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী হল বিএসএফ। আড়াই লক্ষেরও বেশি সদস্য, ১৮৬টিরও বেশি ব্যাটালিয়ন রয়েছে বিএসএফের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহিলা বাহিনীও রয়েছে বিএসএফ-এরই। ভারতের নারী যে শুধু রূপে লক্ষ্মী বা গুণে সরস্বতীই নয়, অস্ত্র হাতে দুর্গাও হতে পারে, প্রমাণ করে দিয়েছে বিএসএফ।
Nirbhaya Riders, #BSF all #women Daredevils team performing on 52nd BSF Day at Shahid R K Wadhwa Parade ground, 25 Bn Chhawla,New Delhi pic.twitter.com/EW7UwBu3xN
— BSF (@BSF_India) December 1, 2017
৩. বিএসএফ-এর একমাত্র লক্ষ্য, ‘আমৃত্যু কর্তব্য পালন।’ এই ঐতিহ্য বরাবরই বজায় রেখেছে বিএসএফ। শত্রুপক্ষের আক্রমণের সামনে একা, অসহায় ও খালি হাতে থাকলেও পোস্ট ছেড়ে একচুল নড়বেন না একজন বিএসএফ জওয়ানও।
Extremely happy to be with you on 52nd Raising Day of Boarder Security Force, ‘India’s First Line of Defence’, today. Entire country is proud of you. pic.twitter.com/OOxDdRN42m
— VicePresidentOfIndia (@VPSecretariat) December 1, 2017
৪. বিএসএফই একমাত্র আধাসেনা বাহিনী যাদের নিজস্ব নৌ, বায়ু ও পদাতিক রেজিমেন্ট রয়েছে।
৫. বিএসএফ-এর পৃথক উট ও কুকুর বাহিনীও রয়েছে। রুক্ষ, মরু অঞ্চলে চিরুনি তল্লাশির জন্য উট, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বোমা বা বিস্ফোরক খুঁজে পেতে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কুকুরদের নামানো হয়। জাতীয় স্তরের একটি ডগ ব্রিডিং ও ট্রেনিং ফেসিলিটি চালায় বিএসএফ। টহলদারি, দুষ্কৃতীদের চিহ্নিতকরণে কুকুরদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া ‘ন্যাশনাল ট্রেনিং সেন্টার অফ ডগস’-এ।
52nd #BSF Day Parade
Canine contingent pic.twitter.com/fJ4cY9oLwl— BSF (@BSF_India) December 1, 2017
৬. ১৯৭১-এ পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে স্বাধীনতা পেতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে এই বিএসএফ-ই।
Greetings to all @BSF_India personnel on BSF Raising Day. They are a beacon of patriotism with their unending sacrifice and service for the nation. The heroes on our borders – my salutations to BSF Jawans. pic.twitter.com/dPQLrywyaN
— Jayant Sinha (@jayantsinha) December 1, 2017
৭. শুধুমাত্র বিএসএফই তেকানপুরে ১৯৭৬ থেকে কাঁদানে গ্যাসের একটি বিশেষ ইউনিট ‘টিয়ার স্মোক ইউনিট’ চালায়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে, দাঙ্গা ঠেকাতে এই বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়।
৮. কচ্ছের রনে কাদাজলে সাধারণ গাড়িঘোড়া খুব কমই চলে। তাই সেখানে বিএসএফের সদস্যদের জন্য একটি বিশেষ উভচর যানের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ৪০০০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা টহল দিতে গুজরাটে জওয়ানরা ওই বিশেষ যান ব্যবহার করেন।
52nd #BSF Day Parade
Padma Shri, Arjuna & GallantryAwardees pic.twitter.com/arRH2tFhDA— BSF (@BSF_India) December 1, 2017
৯. বিএসএফ অত্যন্ত গোপনে একটি বিশেষ এলিট ফোর্স তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করে। গুজরাটের কাছে পাক সীমান্তে চূড়ান্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সেই ‘ক্রিক কমান্ডো ফোর্স’ টহল দেয়। যদিও তাদের ছবি বা অস্তিত্ব সরকারি কর্তারা স্বীকার করতে চান না।
১০. ১৯৯৯-এ কারগিল যুদ্ধের সময় দেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে যোগ দেয় বিএসএফ। বাকিটা ইতিহাস। কারগিলের সবচেয়ে সংবেদনশীল এলাকায় বিএসএফ জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়। খুঁজে খুঁজে পাক সেনা ও জঙ্গিদের নিকেশ করে বিএসএফ।
On it’s raising day I extend my greetings to @BSF_India Personnel & families. We are proud of BSF for securing our borders as well as in maintaining internal security. pic.twitter.com/RPpieJodQR
— Kiren Rijiju (@KirenRijiju) December 1, 2017
১১. বিএসএফে-এ কোনও ছুটি নেই। প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে সজাগ, অতন্দ্র প্রহরী বিএসএফ জওয়ানরা। যুদ্ধবিরতি চুক্তি চলাকালীন অনুপ্রবেশ ও মাদকপাচার রুখতে নিরবিচ্ছিন্ন নজরদারি চালায় বিএসএফ। ভারতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতেও ভরসা সেই বিএসএফই।
অসমসাহসী বিএসএফ জওয়ানদের নানা কীর্তি আজও দেশের মানুষ ভুলতে পারেন না। তা সে ২০০১-এ সংসদে হামলার মূলচক্রী গাজী বাবাকে শ্রীনগরের গোপন আস্তানা থেকে খুঁজে বার করে নিকেশ করাই হোক বা একাত্তরের যুদ্ধে আওয়ামি লিগ নেতাদের সাহায্য করাই হোক- বিএসএফের কৃতিত্বকে ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। ঘরের বা বাইরে শত্রুর লাগাতার আক্রমণে যখনই ভারত রক্তাক্ত হয়েছে, তখনই ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বিএসএফ। আজ তাঁদের বীর সেনানীদের কথা মাথায় রেখেই বলুন- জয় হিন্দ।
52nd #BSF Day Parade
आज सिर्फ सीमा प्रहरियों के लिये ही नहीं राष्ट्र के लिये भी गौरव का दिन है,
श्री वेंकैया नायडू माननीय उपराष्ट्रपति pic.twitter.com/aiejHxHTDn— BSF (@BSF_India) December 1, 2017
দেখুন ভিডিও: