সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আধার সুরক্ষায় রক্ষাকবচ হিসেবে এসেছে ভারচুয়াল আইডি। বুধবারই এ কথা ঘোষণা করেছে ইউআইডিএআই। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে আর আধার নম্বরের প্রয়োজন নেই। বরং ১৬ ডিজিটের একটি ভারচুয়াল আইডি তৈরি করে দিয়ে দিলেই হল। তাতে শুধু প্রয়োজনীয় তথ্যই প্রদর্শিত হবে। আধারের সঙ্গে সংযুক্ত বাকি তথ্য ফাঁস হবে না। কিন্তু আধার কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ অন্য একটি প্রশ্নও তুলে দিয়েছে। এখন যদি বাড়তি রক্ষাকবচ আনা হচ্ছে, তাহলে কি এতদিন আধারের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ছিল।
[ ‘মাদ্রাসায় পড়েছি বলে কি আমি জঙ্গি?’, প্রশ্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ]
জরুরি সমস্ত পরিষেবার ক্ষেত্রেই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আধার। এদিকে আদার তথ্য খুব সহজেই ফাঁস হচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি প্রায় কফিনে পেরেকটি ঠোকেন দ্য ট্রিবিউন এক সাংবাদিক। মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে অজস্র আধার নম্বর তাঁর হস্তগত হয়েছিল। আরও কিছু টাকা দিলে আধার ছাপানোর সফটওয়্যারও পেয়ে যেতেন তিনি। সুতরাং আধার তথ্য যে গোপন নয় তা প্রায় জলের মতো স্পষ্ট। এদিকে এই সংবাদে ক্ষুব্ধ আধার কর্তৃপক্ষ ওই সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধেই এফআইআর দায়ের করে। কিন্তু তার পরেই এই ভারচুয়াল আইডি-র কথা ঘোষণা করে।
[ হজ হাউসের পর শৌচাগারেও গেরুয়া রঙের ছোপ যোগীর রাজ্যে ]
নয়া আইডি-তে সরাসরি আধার নম্বর কারও হস্তগত হবে না। ভারচুয়াল আইডি তৈরি করে মুছে ফেলা যাবে। আবার তা তৈরিও করা যাবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কোন প্রয়োজনের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ ইউআইডিএআই-এর? এতদিন কি তাহলে আধারের সুরক্ষা ছিল না? সরকারি এবং কেন্দ্রীয় স্তরের ওয়েবাসাইট মারফতও আধার নম্বর খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছিল বলে অনেকেই দাবি করেছিলেন। এবার থেকে তা যাতে না পাওয়া যায় তাইই এই ব্যবস্থা। কিন্তু কেন জরুরি ভিত্তিতে তা চালু করা চেষ্টা করা হচ্ছে? গতবছর মার্চে ইউআইডিএআই-এর একজিকিউটিভ অফিসার অজয় ভূষণ পাণ্ডে জানিয়েছিলেন, আধার নম্বর কারও হাতে চলে গেলেই বা কী হবে? অন্যের আধার নম্বর জেনে কি কেউ কিছু করতে পারবেন? তাঁর দৃঢ় উত্তর ছিল নয়। এখন প্রশ্ন, অফিসারের সেই আত্মবিশ্বাস এখন গেল কোথায়? অন্য কেউ আধার নম্বর জেনে যদি কিছু নাই-ই করতে পারবেন, তাহলে নয়া সুরক্ষার কথা ভাবা কেন হচ্ছে। কেনই বা সরাসরি কারও হাতে আধার নম্বর যাতে না যায়, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সংস্থার নয়া সার্কুলার কিন্তু বলছে, আধারের গোপনীয়তা নিয়ে তারা যথেষ্ট সতর্ক। ভারচুয়াল আইডি বা ভিড এনে কি তাহলে সংস্থা স্বীকারই করে নিল যে, আধারের গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হয়েছিল।
[ দুঃসংবাদ! এবার থেকে পাসবই আপডেট করতেও টাকা নেবে ব্যাঙ্ক ]
এদিকে এই ভারচুয়াল আইডি নিয়েও বেশ কিছু ধন্দ জেগেছে। যেভাবে তা তৈরি করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা বেশ জটিল। প্রযুক্তিতে পারঙ্গম ছাড়া সচরাচর কেউ করতে পারবেন না। যে দেশে শিক্ষার হারই নগণ্য, সেখানে এই আইডি তৈরি করতে আম আদমি অন্য কারও দ্বারস্থ হবেন। ফলে সেই আধার তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনাই বড় হযে দেখা দিচ্ছে। এবার স্থানীয় স্তরেই তা হস্তগত হয়ে যেতে পারে। ভারচুয়াল আইডি তৈরি করে দেওয়ার নামে, যে কেউ অন্যের আধার নম্বরটি পকেটস্থ করতে পারেন। ফলে চালু হওয়ার আগে ভারচুয়াল আইডি নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক ও ধোঁয়াশা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.