সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৭-এর শেষেও রক্তাক্ত হল ভূস্বর্গ। আর তার নেপথ্যে থাকল জম্মু-কাশ্মীরের এক পুলিশ কনস্টেবলের সন্তান। রবিবার গভীর রাতে যে তিনজন জঙ্গি পুলওয়ামা জেলায় ফিদায়েঁ হামলা চালিয়েছিল, তাদেরই একজনকে চিহ্নিত করতে পেরে আশঙ্কিত সেনা। কীভাবে পুলিশ পরিবারের একটি ছেলে জঙ্গির দলে নাম লেখালো তা কপালে ভাঁজ ফেলেছে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদেরও।
[ রেলে ব্যাপক কেলেঙ্কারি, সিবিআইয়ের নজরে তৎকাল বুকিং সফটওয়্যার ]
জানা যাচ্ছে, বছর সতোরোর ওই যুবকের নাম ফরদিন আহমেদ খান্ড্য। দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। বাবা গুলাম মহম্মদ খান্ড্য কাশ্মীর পুলিশেরই কনস্টেবল। এর মধ্যে তলে তলে জঙ্গিদের দলে নাম লেখাতে দ্বিধা করেনি সে। মাস তিনের আগেই জইশদের দলে ভিড়েছিল এই কিশোর। অল্প দিনের মধ্যে তাকে সামনে রেখেই বড়সড় হামলা চালাল পাক জঙ্গি সংগঠন। পুলওয়ামা জেলার লেথপোরা গ্রামে সেনার প্রশিক্ষণ শিবিরেই ফিদায়েঁ হামলা চালায় জইশ জঙ্গিরা। গভীর রাতে ছাউনি লক্ষ্য করে পর পর গ্রেনেড ছুড়তে থাকে তারা। আওয়াজে সচকিত হয়ে প্রহরারত জওয়ানরা বাইরে বেরিয়ে এলে তাদের লক্ষ্য করে চলে গুলিবর্ষণ। তিন ফিদায়েঁ জঙ্গিকে কবজা করতে বেশ বেগ পেতে হয় সেনাকে। শহিদ হন পাঁচ জওয়ান। রাতভর চলা গুলির লড়াইয়ে দুই ফিদায়েঁ জঙ্গিকে খতম করে সেনা। তৃতীয়জন আরও বেশ কিছুক্ষণ লড়াই চালায়। প্রথম দুজন জঙ্গির মধ্যেই ছিল পুলিশের ছেলে।
[ এবার থেকে কম শিক্ষিতরাই চাকরি পাবেন রেলে ]
ফরদিন ত্রালের বাসিন্দা। এই অঞ্চল একসময় ছিল জইশ পোস্টার বয় বুরহান ওয়ানির খাসতালুক। সেনার অপারেশনে বুরহানকে নিকেশ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তার প্রভাব যে এখনও ত্রাল ছেয়ে আছে এই ঘটনা তার প্রমাণ দিচ্ছে। স্থানীয়দের দিয়েই ফিদায়েঁ হামলা চালানো বরাবরই ছক জইশের। এর আগেও একাধিকবার সে কাজ করা হয়েছে। স্থানীয় বিক্ষুব্ধদের মগজধোলাই করে জঙ্গি কার্যকলাপে নিযুক্ত করা হয়। তবে এবার যেভাবে এক পুলিশের ছেলেকেই দলে টানতে পেরেছে এই জঙ্গি সংগঠনটি তাতে অশনিসংকেত দেখছেন অনেকেই।
[ গোড়াতেই টক্কর, রজনীকে অশিক্ষিত বলে তোপ বিজেপি সাংসদের ]
লেথপোরা গ্রামের যে প্রশিক্ষণ শিবিরে হামলা চলে তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাল ছিল না। বাইরের প্রাচীরের বেশ কিছু অংশ ভাঙা ছিল। বরাবরই এই শিবির জঙ্গিদের ব়্যাডারে ছিল। দুর্বল নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশ ও এনএসজি-র দৃষ্টিও আকর্ষণ করা হয়। এনসজি-র অফিসাররা ওই এলাকাতে ছিলেনও। সপ্তাহ দুয়েক আগে তাঁরা ফিরে যান। তারপরই শিবির আক্রমণের ছক কষা হয়। অনুমান, ক্যাম্পেরই কোনও কর্মী জঙ্গিদের বিশদ তথ্য দিয়েছিল। সেই মোতাবেকই গভীর রাতের নির্দিষ্ট সময়ে হামলা চলে। স্থানীয়দের বিক্ষুব্ধ করে দলে ঢোকানো জঙ্গিদের পুরনো ছক। তবে যেভাবে পুলিশ পরিবারের সন্তানেরও মগজধোলাই করেছে জঙ্গিরা, তা নতুন করে আতঙ্ক জাগাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.